সাভারে পরিত্যক্ত থাই চুরির অপবাদ দিয়ে মনির হোসেন (১৪) নামের কিশোরকে পাঁচ ঘণ্টা হাত-পা ও চোখ বেঁধে বেধড়ক মারধর করেছে বাড়িওয়ালাসহ স্থানীয় কয়েকজন।খবর পেয়ে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে পুলিশ।পাশাপাশি নির্যাতনকারী নাসিম ইকবালকে আটক করা হয়েছে।এ ঘটনায় নাসিমসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) সকালে সাভারের দিলখোশবাগ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।খবর পেয়ে দুপুর ১২টার দিকে পুলিশ আহত কিশোরকে হাসপাতালে ভর্তি করে।ভুক্তভোগী কিশোর চাঁদপুর জেলার সদর থানার ইসলামইল হোসেনের ছেলে।বতর্মানে সাভারে রেডিও কলোনি এলাকার রবিন মার্কেটের পাশে একটি ভাড়া বাড়িতে মায়ের সাথে বসবাস করে।আগে মাদরাসায় পড়লেও এক বছর ধরে পড়ালেখা বাদ দিয়েছে মনির।
দুপুরে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়,কিশোর মনিরের গেঞ্জি-প্যান্ট ছিঁড়ে গেছে।হাতে-পাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তের ছোপ ছোপ দাগ লেগে আছে।পুরো শরীরের আঘাতের কালো চিহ্ন।ব্যথায় কাতর মনির হাসপাতালের বিছানায় শুধু এপাশ-ওপাশ করছে।চোখে-মুখে ভয় আর আতঙ্ক।
ভুক্তভোগী কিশোর মনির হোসেন বলে,পাঁচ ঘণ্টা আমারে বাইন্দা রাখছে।সকাল ৫ থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত একজন সামনে থে মারছে,একজন পিছে থে মারছে।রাস্তায় নিয়াও মারছে।আবার কইছে ছাদ থেকে ফালাইয়া দিবো।পুলিশ আইলে কইবো চুরি করতে গিয়ে ছাদ থেকে পইরা মইরা গেছে।আমরা জামা-গেঞ্জি মাইরা ছিঁরা ফালাইছে।কত মাফ চাইছি,মাফ করে নাই।আমি তো পড়ে থাকা থাইয়ের টুকরা হাতে নিছিলাম।
না বলে বাড়িতে ঢুকে কেন থাই নিয়েছ?এমন প্রশ্নে চুপ ছিলে মনির।পরে আবার মনির বলে,তারা কয় বাড়ি থেকে মোটর হারাইছে,মোবাইল হারাইছে।এগুলো আমি নিছি।
সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা.সায়েমুল হুদা বলেন,কিশোরের সারা শরীরের মারধরের চিহ্ন রয়েছে।তার চিকিৎসা চলছে।তবে আশঙ্কামুক্ত।
এ বিষয়ে সাভার মডেল থানার এসআই সিকদার হারুনুর রশিদ বলেন,আমরা ৯৯৯-এ খবরের ভিত্তিতে সাভারের শিমুলতলা থেকে এক কিশোরকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করেছি।এ সময় অভিযুক্ত এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে।প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি,একটি বাড়ির জানালায় লাগানো থাই চুরির অভিযোগে কিশোরকে বেঁধে মারধর করেছে কয়েকজন।তবে আহত কিশোর চিকিৎসাধীন।তার সঙ্গে কথা বললে বিষযটি নিয়ে আরো নিশ্চিত হওয়া যাবে।
এদিকে কিশোরকে মারধরের ঘটনায় আটক নাসিম ইকবালসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।