গত বছরের শুরু থেকেই চলছে ব্যাপক ডলার সংকট। এই সংকট কাটাতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়। এমন পরিস্থিতির মধ্যেও কমতে থাকে প্রবাসী আয়। চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) সর্বোচ্চ ডলার পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রবাসীরা। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়।
তথ্য মতে, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) প্রবাসীরা ১ হাজার ৪৯ কোটি ৩২ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠায়। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রবাসীরা সর্বোচ্চ ১৯৬ কোটি ৭২ লাখ ডলার পাঠায়। সর্বশেষ ডিসেম্বর মাসে দেশটি থেকে ডলার আসে ৪২ কোটি ৮২ লাখ ডলার। আলোচ্য সময়ে সৌদির প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে ১৯০ কোটি ৯১ লাখ ডলার। দেশটি থেকে গত মাসে রেমিট্যান্স আসে ৩০ কোটি ৬৩ লাখ ডলার। এর মাধ্যমে ছয় মাসে রেমিট্যান্স পাঠানোর তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে দেশটির প্রবাসীরা।
তথ্য বলছে, চলতি ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে এসেছিল ২০৯ কোটি ৬৩ লাখ ডলার, আগস্টে এসেছিল ২০৩ কোটি ৬৯ লাখ ডলার। অর্থাৎ অর্থবছরের শুরুর দুই মাস দুই বিলিয়ন ডলার করে রেমিট্যান্স এসেছিল। এর পরই কমতে থাকে রেমিট্যান্স প্রবাহ যা দেড় বিলিয়ন বা তার কাছাকাছি। এর পরের মাস সেপ্টেম্বরে এসেছিল ১৫৩ কোটি ৯৬ লাখ ডলার, অক্টোবরে এসেছিল ১৫২ কোটি ৫৫ লাখ ডলার, নভেম্বরে ১৫৯ কোটি ৪৭ লাখ ডলার আর আর বিদায়ি মাসে ১৬৯ কোটি ৯৬ লাখ ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।
রেমিট্যান্সের ওপর আড়াই শতাংশ হারে প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। অন্যদিকে রেমিট্যান্সের প্রবাহ বাড়াতে বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ অথরাইজড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) ও অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) যৌথভাবে ব্যাংকগুলোকে রেমিট্যান্স কেনার জন্য দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে। বর্তমানে ১০৭ টাকায় রেমিট্যান্স ও ১০০ টাকায় রপ্তানি বিলের মাধ্যমে আসা ডলার সংগ্রহ করছে ব্যাংক। এর পরেও রেমিট্যান্স বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না। এর আগে গত ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ (২১ দশমিক ৩ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। এটি তার আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৫ দশমিক ১১ শতাংশ কম। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন বিভিন্ন দেশে বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসীরা।