• Login
Banglatimes360.com
Tuesday, May 20, 2025
  • Home
  • রাজনীতি
    • আইন আদালত
    • অপরাধ
  • অর্থনীতি
    • বাণিজ্য
  • বিনোদন
    • সংগীত
  • বিশ্ব
    • উত্তর- আমেরিকা
    • যুক্তরাষ্ট্র
      • নিউইয়ার্ক
      • ফ্লোরিডা
    • ইউরোপ
    • ওশেনিয়া
      • অষ্ট্রেলিয়া
      • নিউজিল্যান্ড
    • এশিয়া
    • বাংলাদেশ
    • মধ্যপ্রাচ্য
    • দক্ষিণ আমেরিকা
    • আফ্রিকা
  • যুদ্ধ
  • খেলা
  • সাহিত্য
    • পদ্য
    • গদ্য
  • প্রযুক্তি
    • বিজ্ঞান
  • প্রকৃতি
    • প্রত্নতত্ত্ব
  • মতামত
  • অন্যান্য
    • শিক্ষা ও সংস্কৃতি
    • আবহাওয়া
    • অনুসন্ধান
    • জীবনযাপন
    • প্রিন্ট পেপার
    • মানবাধিকার
    • ভ্রমন
  • পত্রিকা
    • বাংলাদেশের পত্রিকা
    • সারা পৃথিবী
    • বাংলা রেডিও, টিভি
    • আর্কাইভ
      • 2024
No Result
View All Result
  • Home
  • রাজনীতি
    • আইন আদালত
    • অপরাধ
  • অর্থনীতি
    • বাণিজ্য
  • বিনোদন
    • সংগীত
  • বিশ্ব
    • উত্তর- আমেরিকা
    • যুক্তরাষ্ট্র
      • নিউইয়ার্ক
      • ফ্লোরিডা
    • ইউরোপ
    • ওশেনিয়া
      • অষ্ট্রেলিয়া
      • নিউজিল্যান্ড
    • এশিয়া
    • বাংলাদেশ
    • মধ্যপ্রাচ্য
    • দক্ষিণ আমেরিকা
    • আফ্রিকা
  • যুদ্ধ
  • খেলা
  • সাহিত্য
    • পদ্য
    • গদ্য
  • প্রযুক্তি
    • বিজ্ঞান
  • প্রকৃতি
    • প্রত্নতত্ত্ব
  • মতামত
  • অন্যান্য
    • শিক্ষা ও সংস্কৃতি
    • আবহাওয়া
    • অনুসন্ধান
    • জীবনযাপন
    • প্রিন্ট পেপার
    • মানবাধিকার
    • ভ্রমন
  • পত্রিকা
    • বাংলাদেশের পত্রিকা
    • সারা পৃথিবী
    • বাংলা রেডিও, টিভি
    • আর্কাইভ
      • 2024
No Result
View All Result
Banglatimes360.com
No Result
View All Result

জন্মশতবর্ষের শ্রদ্ধাঞ্জলি বাবু কুটিশ্বর দাশ

রত্নদীপ দাস (রাজু)

October 28, 2024
6 0
A A

জগৎ সংসারে কিছু কিছু ক্ষণজন্মা মানুষের আবির্ভাব ঘটে যাঁরা সংসারের সীমা পার হয়ে অসীমের মধ্যে বিলীন হয়ে যান। তাঁদের কীর্তি অমর হয়ে থাকে মানুষের মনে। মৃত্যুর বহু বছর পরও তাঁরা প্রেরনার উৎস হয়ে থাকেন নতুন প্রজন্মের জন্য। নবীগঞ্জ উপজেলার সুদীর্ঘ কালের ইতিহাসে যে কজন প্রতিথযশা গুণী ব্যক্তি জন্ম নিয়ে গ্রাম-বাংলার উন্নয়ন, সংস্কার ও সমাজের বৈষম্য দূর করে নতুন প্রজন্মের জন্য আধুনিক সমাজ তথা রাষ্ট্র বিনির্মানের লক্ষ্যে যৌবনের সোনালি দিনগুলি উৎসর্গ করেছেন, সেই মহান ব্যক্তিদের মধ্যে কুটিশ্বর বাবু (১৯২৪-১৯৯৫) অন্যতম।

পোশাকি নাম কুটিশ্বর দাশ হলেও তিনি কুটিশ্বর বাবু নামেই সুপরিচিত ও বিখ্যাত। কুটিশ্বর বাবু ১৯২৪ সালের ১ জানুয়ারি অবিভক্ত ভারতবর্ষের আসাম প্রদেশের সিলেট জেলার নবীগঞ্জ থানার মুক্তাহার গ্রামের ‘বাবুর বাড়ি’ নামক ঐতিহ্যবাহী পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর পিতা বিশিষ্ট সমাজসেবক বাবু ভগবান দাশ ও মাতা সুরধ্বনী বালা দাশ। তাঁর জ্যেঠা মহাশয় মাস্টার বঙ্কচন্দ্র দাশ ছিলেন তৎকালীন ৩৯ নম্বর সার্কেলের সরপঞ্চ। পাঁচ ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি জ্যেষ্ঠ। সেই সময়ে ‘বাবুর বাড়ি’ নামে খ্যাত তাঁদের পরিবারটি ছিল শিক্ষা, সংস্কৃৃতি, যশ ও খ্যাতিতে এই অঞ্চলের বিখ্যাত পরিবারগুলির মধ্যে অন্যতম। তিনি নবীগঞ্জ দরবার পাঠশালা থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত করে ভর্তি হন নবীগঞ্জ জে.কে উচ্চবিদ্যালয়ে। সেখানে ১৯৪৩ সালে কৃতিত্বের সাথে এন্ট্রাস ও হবিগঞ্জ বৃন্দাবন কলেজ থেকে ১৯৪৫ সালে আইএ পাশ করেন। তৎকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ইন্টারমিডিয়েট ও এন্ট্রাস পরীক্ষা অনুষ্টিত হতো। তিনি লেখাপড়ায় যেমন ছিলেন মেধাবী, তেমনি কৃতি ফুটবলার হিসেবেও তাঁর খ্যাতি ছিল এলাকা জুড়ে। তাঁর একটি ফুটবল টিম ছিল, যা এলাকায় অত্যন্ত জনপ্রিয়তা লাভ করে। ঐ টিমের অন্যান্য খেলোয়ারদের মধ্যে ছিলেন- ননীগোপাল গোস্বামী (প্রয়াত, জন্তরী) প্রমূখ। তিনি ছাত্রজীবন থেকেই ছিলেন বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনের নেতা মাহাত্মা গান্ধীর আদর্শের অনুসারী।

 

1 of 3
- +

1.

2.

3.

১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর হিন্দু সম্প্রদায়ের ধনাঢ্য ও শিক্ষিত পরিবারের বহুসংখ্যক লোক পিতৃভূমি ত্যাগ করে ভারতে চলে যান বা যেতে বাধ্য হন। কিন্তু কুটিশ্বর দাশেরা স্বপরিবারে তাঁর জন্মভুমি পূর্ববঙ্গেই রয়ে যান। তিনি ছাত্র জীবন থেকেই ছিলেন সমাজ সচেতন, কর্তব্যপরায়ন এবং উন্নত মূল্যবোধ ও ব্যক্তি চেতনার অধিকারী। জীবনাচারে তিনি ছিলেন অনন্য ভদ্র, সজ্জন, সংস্কৃতমনা ও অহিংসবাদী। সততা, পরোপকারীতা, দেশপ্রেম, সুদক্ষ বিচারবুদ্ধি, মানবতাবোধ ছিল তাঁর চারিত্রিক গুণাবলীর মধ্যে অন্যতম। ব্যক্তিত্বের বিশালতা, জ্ঞানের গভীরতা, মার্জিত ব্যবহার ও অসাম্প্রদায়িক চেতনা সমৃদ্ধ ব্যক্তি হিসেবে সবাই তাকে মান্য ও শ্রদ্ধা করতো।

জীবদ্দশায়ই তিনি ব্যক্তি থেকে পরিনত হয়েছিলেন ব্যক্তিত্বে, হয়ে উঠেছিলেন এক প্রতিষ্ঠান। পড়াশোনার পাঠ চুকিয়ে কোন সরকারি-বেসরকারি চাকুরীর জন্য টু না মেরে পৈত্রিক বিষয় সম্পত্তি রক্ষনাবেক্ষনের পাশাপাশি সমাজকে সুশিক্ষার আলোয় আলোকিত করার প্রয়াসে পারিবারিক আর্থিক প্রাচুর্যতা, নিজস্ব ব্যবসা-বানিজ্য এবং অন্যান্য ভালো চাকুরী লাভের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও শিক্ষকতার মতো মহান পেশাকে জীবনের ব্রত হিসেবে গ্রহণ করেন। ১৯৫১ সালে যোগদান করেন নবীগঞ্জ যুগল কিশোর হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষক পদে। শিক্ষকতায় প্রবেশ করেই তিনি মেধা, প্রজ্ঞা দ্বারা শিক্ষাঙ্গনের সকলের প্রিয় হয়ে উঠেন। অর্জন করেন অভিভাবক মহলের শ্রদ্ধা। অনেক গরিব ও মেধাবী ছাত্রদের নিজস্ব অর্থায়নে লেখাপড়া করিয়েছেন। যাঁরা পরবর্তিতে সামাজিকভাবে প্রতিষ্টিত হয়েছেন। নিজ গ্রামে (১৯৫৬ সালে) প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্টাসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্টান প্রতিষ্টায় ভূমিকা রাখেন। মুক্তাহার প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে বেশ কয়েক বছর তাঁদের বাড়ির কাছাড়ি ঘরেই পরিচালিত হতো স্কুলের পাঠদান ও অন্যান্য কার্যক্রম।

তিনি গ্রামের প্রত্যেকটি ঘরে-ঘরে গিয়ে ছোট ছেলে-মেয়েদের স্কুলগামী হতে উৎসাহ ও অভিভাবকদের পরামর্শ দিতেন। বেশ কয়েক বছর পাঠদান পরিচালিত হওয়ার পর, পরবর্তীতে তৎকালীন সিও (ডেভ.) (বর্তমান ইউ.এন.ও) তাঁর অনুরোধে একদিন স্কুল পরিদর্শনে আসলে তিনি স্কুলের জন্য নিজস্ব অবকাঠামো নির্মানের কথা বলেন। অবশেষে তাঁর প্রচেষ্টায় অনেক বছর পর স্কুলটি নিজস্ব ভবনে স্থানান্তরিত হয়। এ কাজে আরও যাঁরা অবদান রাখেন তাঁরা হলেন- তাঁর অগ্রজ প্রয়াত ভাগ্যেশ্বর দাশ (১৯২১ – ২০০৪), প্রয়াত যোগেশ দাশ প্রমূখ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। তিনি মুক্তাহার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্টাকাল থেকে প্রায় তিন দশক ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া নবীগঞ্জ জে.কে উচ্চবিদ্যালয় এবং হিরা মিয়া বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে উন্নয়ন কর্মকান্ড ও শিক্ষার মানোন্নয়নে কাজ করেন।

তিনি হাইস্কুলে শিক্ষকতার পাশাপাশি সামাজিক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়েন। গ্রাম-গঞ্জের পঞ্চায়েত শালিসে তিনি তাঁর মেধা, মনন ও বিচার-বুদ্ধির মাধ্যমে সমাজের বিভেদ দূর করে শান্তি ও মৈত্রী স্থাপনে ভূমিকা রাখেন। একটা সময়ে তিনি সমাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকান্ডে ব্যস্ত হয়ে পড়েন এবং ১৯৫৪ সালে শিক্ষকতা থেকে অকালীন অবসরে চলে যান। ব্যক্তি ও রাজনৈতিক জীবনে তিনি কথার মূল্য বা প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে চলতেন। আর এ সব ছোট-বড় কাজের মধ্য দিয়েও সমাজ সচেতনতা ও স্বদেশ প্রীতির পরিচয় দিয়েছেন।

১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে হক-ভাসানী-সোহরাওয়ার্দী-মুজিব এর নেতৃত্বে তিনি যুক্তফ্রন্টের পক্ষে তৃণমূলে ব্যাপক কাজ করেন। ১৯৬০ সালে আইয়ূব খাঁন মৌলিক গনতন্ত্র প্রতিষ্টার লক্ষ্যে বিডি নির্বাচন চালু করলে, তিনি জনগনের চাপে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেন এবং বিডি মেম্বার নির্বাচিত হন। তৎকালে নির্বাচিত নয়জন বিডি মেম্বার থেকে একজনকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করে ইউনিয়ন কাউন্সিল গঠন করা হতো। এলাকার যুবসমাজ ও মুরুব্বীয়ানের পক্ষ থেকে তাঁকে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করার চাপ থাকলেও তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে বয়োজ্যেষ্ঠ ও ব্রাহ্মণ জমিদার পরিবারের সন্তান লাবন্য কুমার চৌধুরীকে মেনে নেন। লাবন্য কুমার চৌধুরীর অনুপস্থিতিতে তিনি বেশ সময় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব সফল ভাবে পালন করেন। সেই সময় তিনি ইউনিয়নের প্রত্যেকটি গ্রামে-গ্রামে গিয়ে ছোট ছেলে মেয়েদের স্কুলগামী হতে উৎসাহ ও অভিভাবকদের পরামর্শ দিতেন। ফলে নিরক্ষরতা দূরীকরণ ও শিক্ষার আলো ছড়াতে স্মরণীয় ভূমিকা রাখেন। সর্বোপরি একজন জন-নন্দিত জনপ্রতিনিধি হিসেবে নিজেকে সুপ্রতিষ্টিত করেছিলেন। ১৯৬৪ সালে তিনি পুনঃনির্বাচিত হন। তিনি বিডি মেম্বার থাকাকালীন সময়ে তাঁর অনুপস্থিতে পরিষদের কোন সিদ্ধান্তই হতো না, তাঁর ব্যক্তিত্বের ও বিচক্ষনতার কারণে। ১৯৬৭ সালে তিনি তৎকালীন নবীগঞ্জ থানার ৬নং করগাঁও (বর্তমানে ৭নং করগাঁও) ইউনিয়ন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন এবং স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭৩ সালের নির্বাচনের পূর্ব পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। এক সময় নবীগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের কমিটি গঠিত হলে তিনি সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। একটি ইউনিয়নের প্রধান ব্যক্তি হিসেবে দীর্ঘ দিন অত্যন্ত সুনাম ও শ্রদ্ধার সাথে চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব পালন করেন জননেতা ডা. কুটিশ্বর দাশ।

১৯৬৯ সালে পূর্ব-বাংলা স্বাধীকারের চেতনায় জ্বলে ওঠে। ১৯৭০ এ জাতীয় নির্বাচন ও ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে তাঁর আবস্থানটা ছিল অগ্রগণ্য। যুদ্ধ শুরু হলে তিনি সেপ্টেম্বর মাসের শেষে বা অক্টোবর মাসের প্রথম দিকে পরিবার পরিজনদের ভারত সীমান্তে পরিবার পরিজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে রেখে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কাজ করেন। শরনার্থীদের খাদ্য, ঔষধসহ প্রয়োজনীয় মৌলিক চাহিদা পূরনে শুরু করেন রিলিপ কার্যক্রম। যোগাযোগ করেন বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সাথে। এসময় শরনার্থীদের সমস্যাবলী সমাধানের পাশাপাশি যুবকদের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করতে উদ্ভুদ্ধ করে তাদের রিক্রুট করেন মুক্তিযুদ্ধে। তাছাড়া তিনি মুক্তিযোদ্ধাদেরও নানাভাবে সহযোগীতা করেন।

দেশ স্বাধীন হলে দেশে ফিরেই স্বগ্রামসহ ইউনিয়নের রাজকার ও দুর্বৃত্তদের কর্তৃক লুঠপাঠকৃত মালামাল ফেরত আনা ও উত্তেজিত পরিস্থিতি শান্ত করতে ভূমিকা রাখেন। যুদ্ধবিধস্ত  গ্রাম-বাংলা পুনঃর্গঠনে ক্ষতিগ্রস্থদের ঘরবাড়ী নির্মানে সরকারি বরাদ্দ প্রদানের পাশাপাশি নিজস্বভাবেও সহযোগিতা করেন। মুক্তিযুদ্ধের পর যুদ্ধবিধ্বস্থ গ্রাম বাংলা পুনর্গঠন করতে তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করেন। নির্যাতিত, নিপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়ান। তাঁর সময়ে ইউনিয়নের উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন সাধিত হয়। তিনি সব সময় পিছিয়ে পড়া অনগ্রসর সমাজকে স্বাবলম্বী করার লক্ষ্যে কাজ করেছেন।

একজন স্বনামধন্য চেয়ারম্যান হিসেবে ইউনিয়নের সার্বিক উন্নয়নের পাশাপাশি প্রত্যেক মানুষের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা, সফলতা-ব্যর্থতা সর্বোপরি গণ-মানুষের বিশ্বস্থ বন্ধু হিসেবে সামাজিক, পারিবারিক ও ব্যক্তিগত বিষয়াদিতে সম্পৃক্ত হয়ে সবার সাথে মিশে একাকার হয়ে গিয়েছিলেন। তাঁর ইউনিয়নের ছাড়াও যে কেউ তাঁর কাছে আসলে তিনি সৎ পরামর্শ ও সাধ্যমত সহযোগীতা করতেন। তিনি ছিলেন মানবতাবোধ সম্পন্ন আদর্শ মানুষ। তবে নীতির প্রশ্নে ছিলেন অবিচল।

ডা: কুটিশ্বর দাশ চিকিৎসক হিসাবেও ছিলেন কিংবদন্তিসম। এ অঞ্চলের হতদরিদ্র শ্রেণীর শেষ ভরসা ছিলেন তিনি। নামমাত্র মূল্যে আজীবন জনগণের স্বাস্থ্যসেবা দিয়েছিলেন। যার জন্য এখনো তাঁর সম্পর্কে প্রাচীন ব্যক্তি বর্গের গুণকীর্তনের অন্ত নেই। যেকোন বিষয়াদিতে তাঁর প্রসঙ্গ উঠলে গভীর আবেগের সৃষ্টি হয়। তিনি নিজের জীবনকে যেমন উৎসর্গ করেছিলেন দরিদ্র জনগোষ্টির সুস্বাস্থ্য বিধানে তেমনি সামাজিক ও রাজনৈতিক বিষয়েও ছিলেন অত্যন্ত সক্রিয়। তাঁর ধী শক্তি, নিরপেক্ষতা, উদার মানসীকতা ও অসাম্প্রদায়িক কার্যক্রমে হয়ে ওঠেন ইউনিয়নের নীতিনির্ধারক। যে কোন বিবাদ ও সামাজিক সমস্যা স্বউদ্যোগেই নিরপেক্ষভাবে নিষ্পত্তি করতেন। যে কোন বিচারকার্যে বসলে রাত যত গভীর বা শেষ হোক না কেন নিষ্পত্তি না করে উঠতেন না। তাঁর নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে এমন কেউ ছিল না। এমনকি তাঁর রায়ে বাদী-বিবাদী দুপক্ষই সন্তুষ্টি পেত। তাঁর ব্যক্তিত্বের বিশালতা এমন পর্যায়ে পৌঁছে ছিল, যে কোন বিচারে প্রধান বিচারক বা সভাপতির আসন তাঁর জন্য নির্ধারিত ছিল। বৃদ্ধ বয়সেও  রাত জেগে গ্রাম্য বিরোধ নিষ্পত্তি করতেন। গ্রাম্য শালিস-বৈঠকের কিংবদন্তি ব্যক্তিত্ব কুটিশ্বর বাবু ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিমুর্ত প্রতীক। আজীবন তিনি অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে সাম্য, মৈত্রী ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন সমাজে প্রতিষ্টার জন্য কাজ করেছেন।

বইপড়া ও বিভিন্ন গ্রন্থ পঠন-পাঠন ছিল তাঁর শখের মধ্যে অন্যতম। সংস্কৃতি, ইংরেজি, বাংলা, দর্শন বিষয়গুলিতে ছিল তাঁর অগাধ দখল। হিন্দু ধর্মীয় বিভিন্ন বিষয়গুলি ছিল তাঁর নখদর্পণে। একজন বিদ্ধান ও পন্ডিত ব্যক্তি হিসাবে অনেক জ্ঞান পিপাসুরা তাঁর কাছে ভীড় জমাতেন। তিনি একজন লোক কবিও ছিলেন। অনেক গান (পদাবলী) রচনা করেন। যা প্রকৃতি, সমসাময়িক ভাবনা ও সৃষ্টিকর্তার প্রতি তাঁর গভীর বিশ্বাস ও ভক্তি প্রকাশ পায়। গানগুলি তাঁর স্মৃতির স্মারক হয়ে মানুষের হৃদয়ে বেঁচে থাকবে আজীবন।

ধণাঢ্য পরিবারে জন্ম নিয়েও আজীবন অনাঢ়ম্বর জীবন যাপন করেন। পড়তেন সাদা পাঞ্জাবীর সাথে সাদা পায়জামা, কখনোবা সাদা ধুতি। খাদ্যাভাসও ছিল সাদামাটা। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি কুলাউরা উপজেলার বুয়াই গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে পঞ্চাশের দশকের প্রথমে প্রমিলা রানী দাশে সাথে পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হন। তাঁর সহধর্মীনি প্রমিলা রাণী দাশও (২৫.২.১৯৩৬ – ১০.৩.২০০৫) ছিলেন সুশিক্ষিত একজন শিক্ষিকা, যিনি বাংলা, হিন্দি, সংস্কৃত, ইংরেজি, ডস, উর্দু, তামিলসহ মোট ৮টা ভাষা জানতেন। সর্বোপরি ছিলেন চিন্তা ও মননে তাঁর আদর্শের অনুসারী।

ব্যক্তিগত জীবনে তিনি চার পুত্র ও চার কন্যা সন্তানের জনক। ১৯৯৫ সালের ৪ই এপ্রিল (বাংলা বর্ষ ১৪০০ সালের ২০ চৈত্র) রোজ মঙ্গলবার ভোরবেলা ৭১ বছর বয়সে ইহলোক ছেড়ে পরলোক গমণ করেন মহৎ ও প্রজ্ঞাবান এ ব্যক্তিত্ব।

তিনি এক সার্থক ও পরিপূর্ণ জীবনের প্রতীক। প্রকৃতির নিয়মেই তাঁকে বিদায় নিতে হলো। অমরলোকে চলে গেলেন তিনি। আমাদের জন্য রেখে গেলেন নান্দনিক ও কর্মময় জীবন বোধ। তিনি ছিলেন দেশ ও সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ সম্পন্ন একজন শিক্ষক, চিকিৎসক, দেশপ্রেমিক জনপ্রতিনিধি তথা একজন আদর্শ ও স্মরনীয় ব্যক্তিত্ব।

মাতৃভূমির প্রতি তাঁর গভীর ভালোবাসার প্রকাশ ঘটে তাঁর সময়ের সামাজিক ঘটনাবলীর মাধ্যমে। তিনি ছিলেন জনগণের নিকটতম বন্ধু ও দেশের কল্যাণকামী সাহসী দেশপ্রেমিক। তিনি আজ আমাদের মধ্যে নেই। কিন্তু তাঁর সৃষ্টিশীল কর্ম, অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও মানবতাবাদী আদর্শ-নীতি মানুষের হৃদয়ে বেঁচে থাকবে হাজার বছর। চলতি বছরের ১লা জানুয়ারি ছিল তাঁর শততম জন্মবার্ষিকী। তাঁর জন্মশতবর্ষে পরম শ্রদ্ধা আর গভীর ভালোবাসা জানাই সাদা মনের এই মানুষটির প্রতি। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায় তাঁর স্মৃতিচারণ করে বলছি-

‘নয়ন তোমারে পায় না দেখিতে,

রয়েছ নয়নে নয়নে।’

(লেখক: সম্পাদক, পাঠাগার বার্তা; প্রতিষ্ঠাতা, কুটিশ্বর দাশ স্মৃতি সাহিত্য পরিষদ, নবীগঞ্জ, হবিগঞ্জ।  তথ্য ঋণের কৃতজ্ঞতা: এই নিবন্ধ লিখতে বিভিন্ন সময়ে তথ্য দিয়ে সহযোগীতা করেছেন শ্রদ্ধেয়- আব্দুল আজিজ চৌধুরী (প্রাক্তন গণপরিষদ সদস্য ও প্রধান শিক্ষক, নবীগঞ্জ জে.কে উচ্চবিদ্যালয়), মনোরঞ্জন দাস সিংহ (প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক, গয়াহরি), মেজর (অব:) সুরঞ্জন দাস, মিহির কুমার রায় (মিন্টু) (নবীগঞ্জ), লক্ষী কান্ত দাশ (প্রাক্তন শিক্ষক, মুক্তাহার), ব্যোমকেশ দাশ টগর (বিশিষ্ট ব্যক্তি, মুক্তাহার), রবীন্দ্র চন্দ্র দাস (বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রাক্তন শিক্ষক, মুক্তাহার),  সুনীল কান্ত দাশ (বিশিষ্ট ব্যক্তি, মুক্তাহার), এডভোকেট সুমঙ্গল দাশ সুমন (রাজনীতিবিদ, তারনগাঁও) প্রমূখ এবং ৭নং করগাঁও ইউপি কার্যালয়; নবীগঞ্জ যুগল কিশোর উচ্চ বিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্তি স্মারক সংকলন রোদেলা কিশোর দিন-২০১৭।)
Plugin Install : Subscribe Push Notification need OneSignal plugin to be installed.

Related Posts

অ্যামনেস্টি
ইউরোপ

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালকে নিষিদ্ধ করল রাশিয়া

May 20, 2025
জেলেনস্কি
ইউরোপ

জেলেনস্কি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র সব পক্ষের সাথে বৈঠক হতে পারে

May 20, 2025
বাইডেন
যুক্তরাষ্ট্র

বাইডেন ক্যান্সারে আক্রান্ত, ক্ষমতাকালীন স্বাস্থ্য নিয়ে নতুন প্রশ্ন।

May 20, 2025
অ্যামনেস্টি

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালকে নিষিদ্ধ করল রাশিয়া

May 20, 2025
জেলেনস্কি

জেলেনস্কি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র সব পক্ষের সাথে বৈঠক হতে পারে

May 20, 2025
বাইডেন

বাইডেন ক্যান্সারে আক্রান্ত, ক্ষমতাকালীন স্বাস্থ্য নিয়ে নতুন প্রশ্ন।

May 20, 2025

Stay Connected test

  • 71.5k Subscribers

5100 S Cleveland Avenue Suite 202 Fort Myers, FL33907.
Phone-239.666.1120, [email protected]

Follow Us

Browse by Category

সম্পাদক- বখতিয়ার রহমান

প্রকাশক- শাওন ফারহানা

নির্বাহী সম্পাদক- ফরিদ সুমন

Recent News

অ্যামনেস্টি

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালকে নিষিদ্ধ করল রাশিয়া

May 20, 2025
জেলেনস্কি

জেলেনস্কি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র সব পক্ষের সাথে বৈঠক হতে পারে

May 20, 2025
  • Home
  • রাজনীতি
  • অর্থনীতি
  • বিনোদন
  • বিশ্ব
  • যুদ্ধ
  • খেলা
  • সাহিত্য
  • প্রযুক্তি
  • প্রকৃতি
  • মতামত
  • অন্যান্য
  • পত্রিকা

© 2024 banglatimes360.com - - BT360.

Welcome Back!

Login to your account below

Forgotten Password?

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In
No Result
View All Result
  • Home
  • রাজনীতি
    • আইন আদালত
    • অপরাধ
  • অর্থনীতি
    • বাণিজ্য
  • বিনোদন
    • সংগীত
  • বিশ্ব
    • উত্তর- আমেরিকা
    • যুক্তরাষ্ট্র
      • নিউইয়ার্ক
      • ফ্লোরিডা
    • ইউরোপ
    • ওশেনিয়া
      • অষ্ট্রেলিয়া
      • নিউজিল্যান্ড
    • এশিয়া
    • বাংলাদেশ
    • মধ্যপ্রাচ্য
    • দক্ষিণ আমেরিকা
    • আফ্রিকা
  • যুদ্ধ
  • খেলা
  • সাহিত্য
    • পদ্য
    • গদ্য
  • প্রযুক্তি
    • বিজ্ঞান
  • প্রকৃতি
    • প্রত্নতত্ত্ব
  • মতামত
  • অন্যান্য
    • শিক্ষা ও সংস্কৃতি
    • আবহাওয়া
    • অনুসন্ধান
    • জীবনযাপন
    • প্রিন্ট পেপার
    • মানবাধিকার
    • ভ্রমন
  • পত্রিকা
    • বাংলাদেশের পত্রিকা
    • সারা পৃথিবী
    • বাংলা রেডিও, টিভি
    • আর্কাইভ
      • 2024

© 2024 banglatimes360.com - - BT360.