চিন্তা করা যায়, বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশ ম্যাচ জিতল, অথচ কোনো উচ্ছ্বাস নেই। ম্যাচ জয়ের আনন্দে যেখানে খেলোয়াড়দের উল্লাস করার কথা সেখানে উলটো হয়েছে। ম্যাচ জিতেও বাংলাদেশের কোনো ক্রিকেটারের মুখে হাসি দেখা গেল না। মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ের স্টেডিয়ামের মাঠ থেকে ড্রেসিং রুমে ফেরার সময় বাউন্ডারির কাছাকাছি শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটারদের সঙ্গে যখন সাকিবরা হাত মেলাচ্ছেন, তখন দুই দলের কারো মুখেই হাসি নেই। মুখ দেখে বোঝা গেল না কে জিতেছে, কে হেরেছে। টিভি স্ক্রিনে ইংরেজিতে লেখা উঠছে বাংলাদেশ ৩ উইকেটে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়েছে। বাংলাদেশ এখন চ্যাম্পিয়নস ট্রফির জন্য লড়াই করছে। অনেক সমীকরণ পার হয়ে যেতে হবে। তার আগে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়টা জরুরি ছিল। সেটাই করে রাখলেন সাকিবরা। ১১ নভেম্বর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শেষ ম্যাচ।
শ্রীলঙ্কা এবং বাংলাদেশ, দুই দেশেরই বিশ্বকাপ অভিযান আগেই শেষ হয়ে গেছে। সেমিফাইনালে যাওয়ার স্বপ্ন ভেঙে খান খান হয়ে গেছে আগেই। টানা ব্যর্থতায় দেশের কোটি কোটি ক্রিকেট ভক্ত সাকিবদের পারফরম্যান্সে হতাশ। প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানকে হারিয়ে টানা ৬ ম্যাচে হেরেছে সাকিবের নেতৃত্বের বাংলাদেশ। হারতে হারতে ক্লান্ত বাংলাদেশ কাল রাতে ৮ নম্বর ম্যাচে জয়ের দেখা পেল। এটা স্বস্তির জয়। বাংলাদেশের বিশ্বকাপ তো শেষ। তারপরও একটা জয় যদি দেশের ক্রিকেটারদের আবার রিদমে ফেরাতে পারে, সেটা তো মন্দ নয়। বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে হাফ সেঞ্চুরি করে বাকি ছয় ম্যাচে দুই অঙ্কের রান করতে পারেননি নাজমুল হোসেন শান্ত, কাল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১০১ বল খেলে ৯০ রানে আউট হন তিনি। অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ক্রিজে ছিলেন। তিনি ৬৫ বলে ৮২ রান করেন। আফসোস থাকবে দুই জনেই সেঞ্চুরি করতে পারেননি। ম্যাচ সেরা খেলোয়াড় হন সাকিব।
‘টাইমড আউট’ হয়েছেন শ্রীলঙ্কার বর্ষীয়ান ব্যাটসম্যান অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস। তার আউট নিয়ে সাকিব বলেছেন, আমাদের এক জন ফিল্ডার আমার কাছে এসে বললেন, আমরা এখনই আবেদন করি, তাহলে ম্যাথুস আউট হয়ে যাবে। তখনই আউটের আবেদন করি। আম্পায়ার আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন আমি এটা সিরিয়াস কি না। আমি সিরিয়স বলে দিয়েছেন। কারণ আমি যুদ্ধে ছিলাম এবং আমার দলের জয় নিশ্চিত করার জন্য আমাকে সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল। আপনি যদি নিয়মের মধ্যে থাকেন, তাহলে সুযোগ নেওয়া যাবে। ওখানে আমরা সফল হয়েছিল।’ অনেক দেরিতে এলো কি না? সাকিব বললেন, ‘হ্যাঁ দেরিতে হলেও এসেছে।’
টস জিতে প্রথমে শ্রীলঙ্কাকে ব্যাট করতে পাঠায় বাংলাদেশ। আসালাঙ্কার সেঞ্চুরির সুবাদে শ্রীলঙ্কা ২৭৯ রান করে। সাাকিব ও শান্তর ১৬৯ রানের পার্টনারশিপ বাংলাদেশ শিবিরে এনে দেয় জয়ের গন্ধ। শান্ত করেন ৯০। অন্যদিকে সাকিব ৮২ রানে আউট হন। এই দুই জন আউট হয়ে যাওয়ার পরে মুশফিকুর রহিম (১০), মাহমুদউল্লাহর (২২) মতো সিনিয়র ক্রিকেটারের উইকেট হারালেও জিততে সমস্যা হয়নি বাংলাদেশের। ৭ উইকেট হারিয়ে ৪১ ওভার ১ বল খেলে ২৮২ রানে জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ।