ভারতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে আসা প্রতিনিধি ও তাদের স্ত্রীদের জন্য ভারতীয় শিল্প সামগ্রী প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
রাজস্থানের জয়পুরের শিল্পী আভাজ মোহাম্মদ সেখানকার ঐতিহ্যবাহী শিল্প ‘লাক্ষা চুড়ি’ প্রদর্শনের জন্য নিয়ে এসেছেন।
এই ‘লাক্ষা চুড়ি’ হলো রাজস্থানের জয়পুরের একটি প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী শিল্প। এখানকার নারীদের বিয়ের সময় লাল বা সবুজ রঙের ‘লাক্ষা চুড়ি’ পরিধান করতেই হয়। হোলির সময় নারীরা গোলাপি রঙের ‘লাক্ষা চুড়ি’ পরিধান করে।
এই লাক্ষা চুড়ি মূলত তৈরি হয় লাক্ষা পোকা থেকে। লাক্ষাকে আগুনের তাপে উত্তপ্ত করে প্লাস্টিকের মতো রূপ দেওয়া হয়। তারপর একে বিভিন্ন রঙ করা হয়। পরবর্তীতে বাট্টি নামের একটি কাঠি বা লাঠিতে সংযুক্ত করা হয়।
পিতলের বাটিতে একে চাপা দেওয়ার পর লাক্ষাকে ঠাণ্ডা করতে জলে ডুবিয়ে রাখা হয় বেশ কিছুক্ষণ। পরবর্তীতে একে মার্বেল পালিশ করা হয়।
১৯৪৭ সালের ২ মে জয়পুরে জন্মগ্রহণ করেন আভাজ মোহাম্মদ। তিনি পেশাগতভাবে তার বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করেছেন। তার বাবা তাকে শুধুমাত্র এ পেশা গ্রহণের ক্ষেত্রেই অনুপ্রাণিত করেন নি, তাকে একজন ভালো শিল্পী হওয়ার প্রশিক্ষণও দিয়েছেন। তিনি নিজ প্রচেষ্টায় ও মেধার গুণে শিল্পক্ষেত্রে নিজের জায়গা প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
শুধু জাতীয়ভাবেই নয়, আন্তজার্তিক অঙ্গনেও রয়েছে তার শিল্পের কদর। গত ৬০ বছর ধরে, তিনি ভারত ও ভারতের বাইরের বিভিন্ন দেশের স্কুল-কলেজগুলোতে হাজার হাজার শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন।
জয়পুরের শিল্পীরা ছাড়াও কাশ্মীরের শিল্পীরাও তাদের হাতের কাজ দিয়ে প্রতিনিধিদের মুগ্ধ করতে প্রস্তুত।
কাশ্মীরী হস্তশিল্প দীর্ঘকাল ধরেই মানুষদের মুগ্ধ করে আসছে। কাশ্মীরের কাগজ শিল্পী রিয়াজ আহমেদ খান ন্যাশনাল গ্যালারি অফ মর্ডান আর্টে স্টল স্থাপন করেছেন।
চতুর্দশ শতকে পারস্য থেকে আসা সুফি পণ্ডিত মীর সাঈদ আলী হামাদানি কাশ্মীরকে এই শিল্পের সঙ্গে পরিচিত করান।
কাশ্মীরের কাগজ শিল্পের মধ্যে রয়েছে কাগজ দিয়ে তৈরি কলমদানি থেকে শুরু করে সুন্দর সুন্দর বাটি। এগুলো তৈরি করতে কাগজের মণ্ডের সাথে খড় এবং কপার সালফেট যুক্ত করে একে বিভিন্ন আকার প্রদান করা হয়।
রিয়াজ আহমেদ খান মাত্র ১৫ বছর বয়স থেকেই এ শিল্পকাজের সাথে যুক্ত। তার বড়ভাই তাকে এ কাজে অনুপ্রাণিত করেছেন। এ কাজের জন্য তিনি অসংখ্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্ত হয়েছেন।
তাছাড়া ভারতীয় বস্ত্র, অলঙ্কার ও প্রত্নতত্ত্ব সামগ্রী প্রদর্শনের জন্যেও স্টল স্থাপন করা হয়েছে।
শুক্রবার প্রগতি ময়দানে ফোয়ারা প্রদর্শনীর ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
এছাড়া, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধীনে সঙ্গীত নাটক একাডেমি ভারতে ব্যবহৃত যন্ত্রসামগ্রীর মাধ্যমে সঙ্গীত পরিচালনা করতে চলেছে প্রতিনিধিদের সামনে।