ইরানি পুলিশের হেফাজতে গত ১৬ সেপ্টেম্বর মারা যান মাহসা আমিনি (২২)। পরিবার ও বহু ইরানির অভিযোগ, পুলিশের নির্যাতনে মারা যায় আমিনি। তবে পুলিশ এই অভিযোগ প্রত্যাখান করেছে। আমিনির এমন মৃত্যু ঘিরে এর পর ইরানে শুরু হয় বিক্ষোভ। দেশজুড়ে তা ছড়িয়ে পড়ে। এতে দেশটির হাজার হাজার নারী, তরুণী, স্কুল শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে ইরান পুলিশের সংঘর্ষে দুই শতাধিক বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে অনেক শিশুও রয়েছে বলে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা দাবি করে। তবে এখন পর্যন্ত বিক্ষোভ থেমে নেই।
গতকাল বুধবার মাহসা আমিনির মৃত্যুর ৪০দিন পূর্তি ছিল। এই উপলক্ষে শোক জানাতে কুর্দি অধ্যুষিত শহর সাকেজে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়েছিল। ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেখানে বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালিয়েছে ইরানি পুলিশ। সেইসঙ্গে আমিনির কবরস্থলের কাছে হাজার হাজার শোকার্তদের সঙ্গে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষ হয়েছে।
এ ছাড়া কুর্দির একটি মানবাধিকার গোষ্ঠীও সাকেজ শহরের জিনদান স্কয়ারে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলি এবং টিয়ারগ্যাস ছোড়ার কথা নিশ্চিত করেছে। এর আগে ইরানের নিরাপত্তা বাহিনী আমিনির মৃত্যুর ৪০ দিন পূর্তিতে নতুন করে বিক্ষোভ হতে পারে- এ আশঙ্কায় বুধবার সাকেজ এবং কুর্দিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলে নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করে ইরান।
সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ছবি ও ভিডিওতে দেখা যায়, প্রচুর দাঙ্গা পুলিশ সাকেজ শহরে মোতায়েন করা হয়েছে। তা উপেক্ষা করে হাজার হাজার মানুষ মিছিল করে মাহসাকে যেখানে কবর দেওয়া হয়েছে সেই কবরস্থানের দিকে যাচ্ছে।
ইরান কর্তৃপক্ষ দেশটিতে ও বিভিন্ন নিরপেক্ষ সংবাদমাধ্যমগুলোকে দেশটি থেকে খবর নিতে অনুমতি দিচ্ছে না। তাই দেশটিতে কী ঘটছে তা সহজে স্পট করা অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে।
, সেখানে দেশটির লোকেদের মধ্যে এখন ক্ষোভ বইছে যা তিনি কখনো দেখেননি।
তিনি বলেন, বুধবারের বিক্ষোভ ছিল বিশাল এবং সম্ভবত সম্ভবত সর্ববৃহৎ। এক টুইটার পোস্টে তিনি বলেন, ৪০ দিন ধরে উত্তাল ইরান। দেখা যাচ্ছে ইরান সরকার বিক্ষোভ দমাতে এখন পর্যন্ত যা-ই কৌশল নিয়েছে তা ছিল ভয়ানক সাংঘার্ষিক এবং নৃশংস। তবে বিক্ষোভ দমাতে তা কাজে দেয়নি।
দেশটিতে গতকাল তেহরান ছাড়াও আনদিমেশখ বরুজার্দ, লাহিজানেও বিক্ষোভ দেখা গেছে। গতকালের বিক্ষোভে অন্তত ১০ হাজার মানুষের সমাগম হয়েছে বলে জানিয়েছে।
২৭ বছর বয়সী এক ইরানি বিক্ষোভকারী পার্সিয়ানকে বলেন, বর্তমানে সমাজ এখন অনেক ক্ষুব্ধ। তাদেরকে (ইরানি নেতৃত্ব) না করে দেওয়ার অধিকার আমি চাই। দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হয়ে থেকে আমি ক্লান্ত কারণ আমি নারী। শাসকদের ভয়ে পুরুষরাও বিপর্যস্ত।