ভারতের উত্তরাখন্ডে টানেল ধসে তার অভ্যন্তরে ৪০ জন শ্রমিক আটকা পড়েছেন। দুইদিন ধরে আটকে থাকা শ্রমিকদের কাছে টানেলের পানির পাইপলাইনে করে খাবার, অক্সিজেন ও পানি সরবরাহ করা হয়েছে।
গত রোববার (১২ নভেম্বর) সকালে ব্রহ্মখাল-যমুনোত্রী মহাসড়কে অবস্থিত টানেলে ধসের এ ঘটনা ঘটে।
উদ্ধার কর্মীরা সুড়ঙ্গ খনন করে তাদের উদ্ধার করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু এখনও তাদের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। শ্রমিকরা যে জায়গায় আটকে পড়েছেন তার আশপাশের প্রায় ২০০ মিটার এলাকা জুড়ে পাথর ছড়িয়ে পড়েছে। উদ্ধারকারীরা সেই পাথর সরিয়ে বা কেটে সুড়ঙ্গ তৈরি করে এগোচ্ছে। এসব শ্রমিক আটকে পড়ার ৪৮ ঘণ্টা পার হলেও এখনও তাদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। আটকে পড়া শ্রমিকদের বেশির ভাগই বিহার, ঝাড়খন্ড, পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, উত্তরাখন্ড, উত্তর প্রদেশ ও হিমাচলের অভিবাসী।
স্থানীয় দুর্যোগ পরিষেবা বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, ‘শ্রমিকরা মূলত একটি বাফার জোনে আটকে পড়েছেন। তারা এখনও সুস্থ রয়েছেন। টানেলের পানির পাইপ লাইনে করে খাবার, অক্সিজেন ও পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। পাশাপাশি তারা যেখানে আটকে পড়েছেন সেখানে প্রায় ৪০০ মিটার এলাকা রয়েছে হাঁটাচলা ও মুক্ত বাতাসে শ্বাস নেওয়ার জন্য। এরই মধ্যে আটকে পড়াদের কাছে ওয়াকিটকি পাঠানো হয়েছে। তার মাধ্যমে তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।’
উদ্ধারকারীরা বর্তমানে যে অবস্থানে রয়েছেন, সেখান থেকে শ্রমিকদের কাছে পৌঁছাতে হলে আরও অন্তত ৪০ মিটার সুড়ঙ্গ খোঁড়া প্রয়োজন বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। এরই মধ্যে পাথর ও টানেলের বিধ্বস্ত স্ল্যাব সরিয়ে ২১ মিটার পথ পরিষ্কার করা হয়েছে। আরও ১৯ মিটার পথ এখনও পরিষ্কার করতে হবে। উদ্ধারকারীরা সুড়ঙ্গ খুঁড়ে সেখানে প্রায় ৩ ফুট ব্যাসের একটি পাইপ স্থাপন করার পরিকল্পনা করেছেন। যাতে করে এই পাইপের মধ্য দিয়ে টানেলে আটকে পড়া লোকদের বের করে আনা সম্ভব হয়।
উদ্ধারকারী দলের এক কর্মকর্তা জানান, এরই মধ্যে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ঘটনাস্থলে আনা হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘটনাস্থলের একাধিক ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। সেই ভিডিওগুলোতে দেখা যায়, টানেল অবরুদ্ধ করে রেখেছে কংক্রিটের বিশাল স্তূপ। টানেলের এর ভাঙা ছাদ থেকে ধাতব কাঠামো নিচে নেমে এসে ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে আটকে পড়া শ্রমিকদের উদ্ধারে আরও বাধার সৃষ্টি করেছে।
উল্লেখ্য, ব্রহ্মখাল-যমুনোত্রী মহাসড়কে অবস্থিত টানেলটির দৈর্ঘ্য প্রায় সাড়ে ৪ কিলোমিটার। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ভূমিধ্বসের কারণেই এই টানেল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে।