আগামী দু’তিন মাসের মধ্যে ডলারের দাম কমে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার খরচ সহনীয় পর্যায়ে চলে আসার পূর্বাভাস দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার। তার মতে, কারসাজি ঠেকিয়ে সঙ্কট দূর করতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকারি নানা সংস্থা এক সাথে কাজ করছে। দুদিনের ব্যাংকিং সম্মেলনের উদ্বোধন করে এসব কথা জানান তিনি।
দেশে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) পরবর্তী অর্থনৈতিক সূচকে যখন রপ্তানি ও প্রবাসী আয় ছিলো পড়তির দিকে তখনই শুরু হয় রুশ ইউক্রেন যুদ্ধ। ফলে বিশ্বের দেশে দেশে তৈরী হয় আর্থিক মন্দা। সেই সঙ্গে অস্থির হয় বৈদেশিক মুদ্রার বাজার। বেড়ে যায় মূল্যস্ফিতি। যার কারণে মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে গেছে বহু গুণ। অস্থিতিশীল ওঠে উঠেছে পণ্যের বাজারও।
অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে কলকারখানার চাকা যাতে ঘোরে সেজন্য ব্যাংক খাতের মাধ্যমে সহজ শর্তে প্রায় দু’লাখ কোটি টাকার প্রণোদনা দিয়েছে সরকার। ঋণ বিতরণে লক্ষ্যমাত্রাও বেঁধে দেয়া হয়।
শনিবার (২৭ আগস্ট) বার্ষিক ব্যাংক সম্মেলনে ব্যাংকগুলোর শীর্ষ নিবার্হীরা জানান, তড়িঘরি ঋণ বিতরণ, ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপিসহ নানা কারণে ভবিষ্যতে ব্যাংকখাত আরো চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। বক্তারা বলেন, বৈশ্বিক অবস্থাকে আমলে নিলে এই মুর্হুতে ব্যাংকগুলোকে মুনাফার পেছনে না ছুটে, দূর্নীতি কমিয়ে সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে। শনিবার, বিআইবিএম) মিলনায়তনে সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর বলেন, দেশের স্বার্থ ক্ষুন্ন করে, এমন কোন ব্যবসা করা যাবে না। তিনি আরও বলেন, চলমান ডলারের সংকট শিগগিরই কেটে যাবে। একই সঙ্গে বাজারদরের ওপর ভিত্তি করে ডলার রেট নির্ধারণ করা হবে।
গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার বলেন, বর্তমানে ডলার নিয়ে আমরা একটু সমস্যায় আছি। সবাইকে ধৈর্য ধরে এ পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে।
বর্তমানে আমরা যে মুদ্রাস্ফীতির সম্মুখীন হচ্ছি, তা আমদানি প্রবণতার কারণে হয়েছে। ডলারের দাম মূলত রেমিট্যান্স ও রফতানি এবং বহিঃপ্রবাহ ও আমদানির ওপর নির্ভর করে।
সবকিছুর মধ্যে ভারসাম্য থাকলে দাম স্থিতিশীল থাকে। দুই-তিন মাসের মধ্যে ডলারের সংকট কেটে যাওয়ার প্রত্যাশা জানিয়ে গভর্নর বলেন, অবস্থা দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, ব্যাংকের পরিচালক ও ব্যবস্থাপনার কর্মকর্তাদের দায়িত্ব ও কাজ সুনির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে। সেই অনুযায়ী তারা কাজ করবেন।
পরিচালকরা ব্যবস্থাপনার কাজ করবেন না। আর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী, ব্যাংকের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করে যাবেন।
দু’দিনের এই সম্মেলনে ৩০টি ব্যাংকিং বিষয়ক প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হবে। যেখানে আলোচনার মূলে থাকবে বিশ্ব অর্থনীতির প্রেক্ষাপটে আর্থিক ও ব্যাংক খাতের চ্যালেঞ্জ।