সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলায় বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এতে বাড়িঘরের বৈদ্যুতিক মিটারে পানি ঢুকে গেছে। পানি উঠেছে বিদ্যুতের সাবস্টেশনে, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে খুঁটি। দুর্ঘটনা এড়াতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ায় এই তিন জেলায় এখন প্রায় ১৩ লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎহীন।
বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) পরিচালক (কারিগরি) মো. রফিকুল ইসলাম গতকাল শনিবার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এই তিন জেলায় আমাদের ১৫ লাখ ৯১ হাজার বিদ্যুতের গ্রাহকের মধ্যে গতকাল পর্যন্ত ১০ লাখ ৭৩ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎহীন রয়েছে। বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হলে এ সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। ’ এদিকে পিডিবি সূত্রে জানা যায়, সিলেট ও সুনামগঞ্জে তাদের প্রায় আড়াই লাখ গ্রাহক আছে। তাদের মধ্যে দুই লাখের বেশি এখন বিদ্যুৎহীন।
আরইবি পরিচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সিলেট ও নেত্রকোনা জেলার কিছু উপজেলায় এখনো বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু থাকলেও সুনামগঞ্জ জেলার পুরো অংশেই বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যার ফলে এই জেলার গ্রাহকরা বিদ্যুৎহীন অবস্থায় আছে। বিভিন্ন জায়গায় পানি ঢুকে গেছে মিটার ও সাবস্টেশনে। সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলায় ৫৯টি সাবস্টেশন রয়েছে। এর মধ্যে ১৮টিই এখন পানির মধ্যে। ২৮৮টি ফিডার লাইনের মধ্যে এখন পর্যন্ত ১৫৫টি বন্ধ রয়েছে।
বিদ্যুতের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে জানতে চাইলে আরইবির এই পরিচালক বলেন, ‘বন্যার পানি না কমা পর্যন্ত বিদ্যুতের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে বলা যাচ্ছে না। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক হতে পারে। ’ তিনি বলেন, পানি কমে গেলে আমরা চেষ্টা করব যত দ্রুত সম্ভব বিদ্যুৎ সরবরাহ করার। বিভিন্ন এলাকায় মিটারগুলোতে পানি ঢুকে গেছে। মিটারে পানি ঢুকলে তা পরীক্ষা করে মিটার চালু করতে হবে। তা না হলে দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকে।
পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য গত শুক্রবার বিদ্যুৎ বিভাগ একটি মনিটরিং টিম গঠন করেছে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ সিলেট অঞ্চলের গ্রাহকদের সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে সবাইকে ধৈর্য ধরার অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, ‘বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়া মাত্র আবার বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা হবে। বিষয়টি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। ’
আরইবি সূত্রে জানা যায়, সিলেট, সুনামগঞ্জের পাশাপাশি এখন নেত্রকোনা জেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটছে। তাই ওই সব এলাকার নিরাপত্তার স্বার্থে আমাদের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে রাখতেই হবে। পানি কমতে শুরু করার সময়টা সবচেয়ে বিপজ্জনক হয়। সেই সময় দুর্ঘটনা বেশি ঘটে। সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। আরইবির পক্ষ থেকে এরই মধ্যে সতর্কতা জারি করা হয়েছে ওই সব এলাকায়।