থাইল্যান্ডের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় নং বুয়া লাম্পু প্রদেশে শিশুদের জন্য পরিচালিত একটি ডে-কেয়ার সেন্টারে এলোপাতাড়ি গুলিতে অন্তত ৩৪ জন নিহত হয়েছেন। পুলিশের সাবেক এক কর্মকর্তা এই বন্দুক হামলা চালিয়েছেন বলে বৃহস্পতিবার দেশটির পুলিশের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন।
দেশটির পুলিশের উপ-মুখপাত্র আর্চন ক্রাইটং বলেছেন, গুলিতে কমপক্ষে ৩৪ জন মারা গেছেন।
থাই পুলিশের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ডে কেয়ার সেন্টারে নিহতদের মধ্যে শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকরাও রয়েছেন। পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত এক কর্মকর্তা ওই হামলা চালিয়েছেন। তাকে ধরতে পুলিশের অভিযান চলছে।
দেশটির সরকারের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ডে কেয়ার সেন্টারে হামলার পর দেশটির সংশ্লিষ্ট সব সংস্থা এবং কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুত চান ওচা। একই সঙ্গে অপরাধীকে দ্রুত গ্রেপ্তারের নির্দেশও দিয়েছেন তিনি।
পুলিশের বলছে, ডে কেয়ার সেন্টারে শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্কদের গুলির পাশাপাশি ছুরিকাঘাতও করেছেন ওই হামলাকারী। তবে হামলার উদ্দেশ্য এখনও পরিষ্কার নয়।
থাইল্যান্ডের স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, হামলাকারী পুলিশ কর্মকর্তাকে সম্প্রতি চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। দেশটির পুলিশ বলেছে, হামলাকারী সাবেক পুলিশ কর্মকর্তাকে শেষবার ব্যাংককে রেজিস্ট্রেশন করা নম্বর প্লেটসহ একটি সাদা-চার দরজার টয়োটা ট্রাক চালাতে দেখা গেছে।
নং বুয়া লাম্ফু প্রদেশের এক জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, নিহতদের মধ্যে ২৩ শিশু, দুই শিক্ষক ও পুলিশের এক কর্মকর্তা রয়েছেন।
পুলিশের মুখপাত্র আর্চন ক্রাইটং বলেছেন, বৃহস্পতিবার সকালের দিকে বন্দুকধারী সাবেক ওই পুলিশ কর্মকর্তা নং বুয়া লাম্ফু শহরের ডে কেয়ার সেন্টারে অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। গোলাগুলির পর নিজ বন্দুকের গুলিতে হামলাকারী আত্মহত্যা করেছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে রক্তাক্ত ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতদের স্বজনদের কান্নাকাটি করতে দেখা গেছে। অন্য একটি ভিডিওতে দেখা যায়, দেশটির একটি টেলিভিশন চ্যানেলের একজন প্রতিনিধি ডে কেয়ার সেন্টারটিতে কতজন শিশু ছিল বলে ঘটনাস্থলে থাকা এক নারীর কাছে জানতে চান। এ সময় ওই নারী বলেছেন, ৩০ জন…। তবে তাদের মধ্যে মাত্র একজন বেঁচে গেছে।
এই অঞ্চলের অন্যান্য দেশের তুলনায় থাইল্যান্ডে বন্দুকের মালিকানার হার অনেক বেশি। কিন্তু দেশটির সরকারি পরিসংখ্যানে বিপুল সংখ্যক অবৈধ অস্ত্রের হিসাব অন্তর্ভুক্ত নেই। আর এসব অস্ত্রের বেশিরভাগই বছরের পর বছর ধরে সংকটে বিধ্বস্ত প্রতিবেশী দেশগুলোর কাছ থেকে অবৈধপথে থাইল্যান্ডে আনা হয়।
থাইল্যান্ডে এলোপাতাড়ি গোলাগুলির ঘটনা প্রায় বিরল। তবে ২০২০ সালে দেশটির ক্ষুব্ধ এক সেনা সদস্য ব্যক্তিগত সম্পত্তির বিরোধের জেরে গুলি চালিয়ে অন্তত ২৯ জনকে হত্যা করেন। দেশটির চারটি স্থানে ঘুরে ঘুরে চালানো ওই হামলায় আহত হয় আরও ৫৭ জন।