দেশের ফুটবল নিয়ন্ত্রণ সংস্থায় টালমাটাল অবস্থা। দুর্নীতির অভিযোগে দুই বছর নিষিদ্ধ হয়েছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ। এ ব্যাপারে বাফুফের কী প্রতিক্রিয়া। বিশেষ করে, সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের বক্তব্য কী- সেটা জানতে বাফুফে ভবনে ভিড় করেছিলেন সংবাদকর্মীরা। তবে খুব বেশি সময় কথা বলেননি সালাউদ্দিন। শেষে তো প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে ‘থ্যাঙ্ক ইউ’ বলে তড়িঘড়ি করে উঠে গেলেন!
শুক্রবার এক বিজ্ঞপ্তিতে সোহাগকে দুই বছরের নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে ফিফা। এরপর থেকেই বাফুফের সাধারণ সম্পাদকের রুমের সামনের নেমপ্লেটে নেই কারও নাম।
নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারটা সালাউদ্দিন শুক্রবারই জানতে পেরেছেন। এরপর বাফুফে থেকেও সোহাগকে নিষিদ্ধ করার কথা জানালেন সালাউদ্দিন, ‘একটা খারাপ সংবাদের কারণে আজকে আমরা সবাই একত্রীত হয়েছি। বাফুফে সাধারণ সম্পাদক দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছেন। কালকে আমিও জানতে পেরেছি এটা। কিছু ডকুমেন্ট পড়েছি, পুরোপুরি পড়তে পারিনি। নিষেধাজ্ঞা যখন দেখা হয়েছে, উনাকে (বাফুফেতেও) নিষিদ্ধ করা হয়ে গেছে।
তাহলে পরের পদক্ষেপ কী? বাফুফে সভাপতি বললেন, ‘জরুরি সভা ডেকে সিদ্ধান্ত নিতে চেয়েছিলাম। দুজন সহ-সভাপতি দেশের বাইরে আছেন, কাল (রবিবার) পৌঁছাবেন। পরের পদক্ষেপ কী নেবো, মিটিং করে সবাইকে জানিয়ে দেবো।
এখন তাহলে বাফুফের সিদ্ধান্ত কী? আপাতত ফিফার সিদ্ধান্তই অনুসরণ করছেন বাফুফে ও সালাউদ্দিন, ‘ফিফা বলেছে নিষিদ্ধ রাখতে, সেটাই করা হয়েছে। ওখানেই আছি আমরা। আরও বাদ বাকি কী পদক্ষেপ নেবো, সেটার জন্য আরও দুইদিন অপেক্ষা করতে হবে। সোমবার ফিফা খুলবে। জেনারেল সেক্রেটারির সঙ্গে আলোচনার পর আমরা নিজেরা সভা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবো।
নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা শুক্রবার এলেও ব্যাপারটি আগেই আঁচ করতে পেরেছিলেন সালাউদ্দিন। গত ফেব্রুয়ারিতে সোহাগসহ বাফুফের চার কর্তা ফিফা সদর দপ্তর জুরিখে গিয়েছিলেন। তখনই খারাপ কিছুর ইঙ্গিত পেয়েছিলেন বাফুফে সভাপতি, ‘ওরা যখন জুরিখে গেছে, তখনই শুনেছি কিছু চলছে। নৈতিক কমিটি যখন কাজ করছে, তখন কিছু একটা করবে ওরা।
সোহাগের অবস্থা এখন কী? সালাউদ্দিন জানালেন, ‘সোহাগের সঙ্গে রাতে কথা হয়েছে। তিনি (সোহাগ) মনে করছেন, তার ওপর অবিচার করা হয়েছে। আদালতে যাবেন।
আত্মপক্ষ সমর্থন বা আপিলের সুযোগ ফিফায় আছে। সালাউদ্দিন জানালেন, সোহাগ আদালতে যাবেন। কিন্তু মিথ্যা তথ্য দিয়ে ফিফা থেকে সোহাগ যে শাস্তি পেলেন, সেটা কি দেশের ফুটবলের জন্য লজ্জার নয়? প্রশ্নটার উত্তর সালাউদ্দিনের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি। শুধু ‘থ্যাঙ্ক ইউ’ বলে তড়িঘড়ি করে সংবাদমাধ্যমের সামনে থেকে চলে যান তিনি।
দেশের ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রণ সংস্থায় এত বড় দাগ লাগার পর বাফুফে সভাপতির সংবাদমাধ্যমে কথা বলার স্থায়িত্ব মাত্র সাড়ে তিন মিনিট!