দক্ষিণ কোরিয়ায় হ্যালোউইন উৎসবের জনসমাগমে পদদলিত ও শ্বাসরুদ্ধে প্রাণহানির ঘটনায় এখনও পর্যন্ত চার হাজারের মতো মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, নিখোঁজদের বিষয়ে সিউলের হাননাম দং কমিউনিটি সার্ভিস সেন্টারে খোলা অস্থায়ী অনুসন্ধান কেন্দ্রে রোববার (৩০ অক্টোবর) ভোর সাড়ে ৫টা থেকে ৪ হাজার ১০০ জনের সন্ধান চেয়ে টেলিফোন কল এসেছে এবং আরও ফোন আসছে।
প্রতি ঘণ্টায় এমন সন্ধান চেয়ে করা ফোনের সংখ্যা আপডেট করা হচ্ছে। নিখোঁজ স্বজনের সন্ধানে আসা মানুষের ভিড় উপচে পড়ছে। কেউ কেউ এই কেন্দ্রে কর্মরতদের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ করেছেন।
নগরীর বিভিন্ন হাসপাতাল ও অনুসন্ধান কেন্দ্রে প্রিয় জনের খোঁজে ঘুরছেন উদ্বিগ্ন মানুষেরা। আইভরিকোস্টের নাগরিক ফিলোমেন অ্যাবি তার ২২ বছর বয়সী ছেলে মাসেলাকে খুঁজতে কেন্দ্রে এসেছেন।
ইতাইওয়ানের একটি ক্লাবে কাজ করতো মাসেলা। শনিবার (২৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে বাসা ছাড়ে সে। মায়ের সঙ্গে মাসেলার সেটাই শেষ দেখা। ফিলোমেন অ্যাবি জানান, তিনি তার নাম্বারে কল করেছেন। সে ফোন ধরেনি। জন্ম নিবন্ধন ও বাসাবাড়ি নিবন্ধনের কাজ করা কর্মকর্তারা ফিলোমেন অ্যাবির মতো উদ্বিগ্ন মানুষদের সহায়তায় ব্যস্ত রয়েছেন।
অনেকগুলো ইমার্জেন্সি ফোন লাইনে একের পর এক ফোন আসছে। নিখোঁজ স্বজনের বিষয়ে তথ্য চেয়ে নানা প্রশ্ন করছেন কলাররা। অনুসন্ধানের জবাব দিতে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন কর্মকর্তারা।
দক্ষিণ কোরিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লি সাং-মিন দুপুরে এক ব্রিফিংয়ে জানান, নিহতদের প্রায় ৯০ শতাংশের শনাক্তকরণ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি ১০ শতাংশ মরদেহ শনাক্তের কাজ চলছে।
অনিবন্ধিত বিদেশি নাগরিক ও টিনেজ বয়সী স্থানীয় নাগরিকদের শনাক্ত করতে সময় বেশি লাগছে। এসব ক্ষেত্রে সরাসরি পরিবারের সঙ্গে কথা বলে পরিচয় নিশ্চিত হতে হচ্ছে।
এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এ ঘটনায় ৯৭ জন নারীসহ অন্তত ১৫৩ জন নিহত ও ৮২ জন আহত হয়েছেন। নিহতদের বেশিরভাগই ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সী। এখন পর্যন্ত ২২ জন বিদেশির প্রাণহানির কথা জানা গেছে।
এদের মধ্যে চীনের ৪ জন, ইরানের ৪ জন ও রাশিয়ার ৩ জন নাগরিক রয়েছেন। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, ভিয়েতনাম, উজবেকিস্তান, নরওয়ে, কাজাখস্তান, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড ও অস্ট্রিয়ার একজন করে নাগরিক রয়েছেন। নিহত অপর বিদেশির জাতীয়তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।