ব্রিটিশ অর্থমন্ত্রী কোয়াসি কোয়ার্টেংকে নিয়ে ‘বর্ণবাদী’ মন্তব্যের অভিযোগে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ এমপি রূপা হককে তার দল লেবার পার্টি থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
বিশ্ব গণমাধ্যম জানায়, সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) লিভারপুলে লেবার পার্টির কনফারেন্স ফ্রিঞ্জ ইভেন্ট চলাকালে দেশটির অর্থমন্ত্রী কোয়াসি কোয়ার্টেংয়কে ‘লোক দেখানো কৃষ্ণাঙ্গ’ বলে মন্তব্য করেন রূপা হক। সে মন্তব্য নিয়ে কড়া সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) তার বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেয় লেবার পার্টি।
রূপা হকের এমন মন্তব্যের পরে তাকে দলীয় হুইপ পদ থেকেও প্রত্যাহার করা হয়েছে। লেবার পার্টির সংসদীয় দল থেকে বরখাস্ত হওয়ায় তাকে আপাতত পার্লামেন্টে বসতে হবে স্বতন্ত্র এমপি হিসেবে।
লেবার পার্টির অন্য নেতারাও এমন মন্তব্যের জন্য রূপা হককে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। রূপা ওই কনফারেন্সে বলেন, কোয়াসিকে দেখে বোঝার উপায় নেই যে, তিনি একজন কৃষ্ণাঙ্গ।
কারণ তিনি ভালো ও দামি স্কুলে পড়ালেখা করেছে। দেশের সব অনেক ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেছেন। আপনি বুঝতেই পারবেন না যে তিনি কালো। গণমাধ্যম সূত্রে পরবর্তীতে জানা যায়, এমন মন্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন রূপা।
টোরি পার্টির চেয়ার জেক বেরি তার এ মন্তব্যকে বর্ণবাদী ও ঘৃণ্য বলে অভিহিত করেছেন। লেবার পার্টির ডেপুটি লিডার অ্যাঞ্জেলা রেনার বলেন, এ মন্তব্য অগ্রহণযোগ্য।
বিবিসির পলিটিক্স লাইভ প্রোগ্রামে কথা বলার সময় রেনার বলেন, পার্টির পররাষ্ট্র বিষয়ক মুখপাত্র ডেভিড ল্যামিও মন্তব্যটিকে দুর্ভাগ্যজনক বলে আখ্যা দিয়েছেন। মিসেস হকের ক্ষমা চাওয়া উচিত। আমি নিজেও এমন মন্তব্য করতাম না।
লিভারপুলে লেবার পার্টির কনফারেন্সে দলের নেতা কিয়ার স্টারমারের বক্তব্য শুরুর কিছু সময় আগে রূপার ওই মন্তব্যের অডিও ক্লিপ প্রকাশ করে গুইডো ফকস ওয়েবসাইট।
তার ওই মন্তব্যের অডিও প্রকাশ হলে ব্রিটেনের রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয় তুমুল সমালোচনা। টোরিরা দাবি তোলেন, ওই মন্তব্যের জন্য লেবার এমপিকে ক্ষমা চাইতে হবে। এমনকি রূপার নিজের দলের নেতারাও তার মন্তব্যকে অগ্রহণযোগ্য বলেন।
বহিষ্কারের খবর পাওয়ার পর রূপা হক এক টুইটে লেখেন, আমি কোয়াসি কোয়ার্টেংয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি ও আমার মন্তব্যের জন্য আন্তরিকভাবে ক্ষমা চেয়েছি। আমার মন্তব্য সুবিবেচনাপ্রসূত ছিল না। ওই মন্তব্যে যারা আঘাত পেয়েছেন, আমি মন থেকে তাদের কাছে ক্ষমা চাইছি।
এ মাসের শুরুতে ব্রিটেনের অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়া কোয়াসি কোয়ার্টেং পূর্ব লন্ডনে জন্মগ্রহণ করেছেন। তার পূর্বপুরুষরা এসেছিলেন আফ্রিকার দেশ ঘানা থেকে।