দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় কক্সবাজারের বাহারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন খোকনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন চট্টগ্রামের একটি বিশেষ আদালত।
সোমবার (৯ জানুয়ারি) সকালে চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে চেয়ারম্যান খোকনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক মুনশি আব্দুল মজিদ।
চট্টগ্রাম আদালতে দুদকের আইনজীবী কাজী ছানোয়ার আহমেদ লাভলু এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, দুদকের চাকরিচ্যুত উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন মামলাটি দায়ের করেছিলেন।
আমজাদ হোসেন খোকন টেকনাফের উপকূলীয় বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর পুরান পাড়া ২ নম্বর ওয়ার্ডের মোহাম্মদ ইসলামের ছেলে ও ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতের দুদকের আইনজীবী লাভলু বলেন, দুদকের মামলায় সোমবার (৯ জানুয়ারি) সকালে বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চান কক্সবাজারের বাহারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন খোকন। আদালত শুনানি শেষে তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।
আদালত সূত্র জানিয়েছে, বাহারছড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেনের বিরুদ্ধে নামে-বেনামে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ পায় দুদক। অনুসন্ধান শেষে প্রাথমিকভাবে তার বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের সত্যতা পাওয়ায় তার সম্পদ বিবরণী দাখিলের আদেশ জারি করে দুদক। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে তিনি সম্পদ বিবরণী জমা দেননি। পরে নিয়মানুযায়ী ২০২১ সালের ২৪ মার্চ তার বিরুদ্ধে দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-২ এ মামলাটি দায়ের করেন ওই সময়ের উপ-সহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিন। পরবর্তীতে ২০২২ সালের ১১ সেপ্টেম্বর ওই মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দেয় দুদক। মামলায় চেয়ারম্যান খোকনকে একমাত্র আসামি করা হয়।
উল্লেখ্য, দৃশ্যমান কোন ব্যবসা না থাকায় বছরের পর বছর বেকার জীবন কাটানো আমহাদ হোসেন খোকন কোটি টাকা ব্যয়ে ডুপ্লেক্স বাড়ি গড়ে তুলেছেন টেকনাফের উপকূলীয় বাহারছড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেন খোকন। ইউনিয়নের পুরান পাড়া এলাকায় তার বাড়িটি নির্মাণাধীন থাকার সময় সবার নজরকাড়ে। এ নিয়ে ২০১৯ সালে সচিত্র প্রতিবেদন করে প্রিন্ট ও অনলাইন গণমাধ্যম। এরপরই যুবলীগ সাধারণ সম্পাদকের আয়ের উৎস খুঁজতে মাঠে নামে দুদক ও গোয়েন্দা সংস্থা। প্রাথমিক তদন্তে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের সত্যতা পায় তদন্তকারীরা। তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, বেকার এ যুবকের ইয়াবার সাম্রাজ্যের কথা। যদিও তিনি নিজেকে জমি ব্যবসায়ী হিসেবে প্রচার করেছেন সবসময়। দুদক টাকার উৎস জানতে চিঠি দিলেও তার উত্তর না দেওয়ায় মামলা হয়। এরপরও তিনি সদ্য সমাপ্ত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে লড়ে চেয়ারম্যান পদে জয় লাভ করেছেন। রাজনৈতিক অঙ্গনে তিনি টেকনাফ উপজেলা যুবলীগ সভাপতি নুরুল আলম ও জেলা যুবলীগ সভাপতি সোহেল আহমদ বাহাদুরের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।