দেশের অর্থনীতিতে গত দশকে বড় অগ্রগতি হলেও চার ধরনের বিচ্যুতি রয়েছে বলে মনে করেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
তিনি বলেছেন, বেসরকারি বিনিয়োগ না হওয়া, কর আহরণের দুর্বলতা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগের অভাব এবং সামাজিক সুরক্ষার ঘাটতি- মোটা দাগে এ চারটি বিচ্যুতির দিকে মনোযোগ না দিলে উন্নয়ন টেকসই হবে না। এসব বিচ্যুতি মোকাবিলা করা না হলে পরবর্তীকালে উত্তরণ পর্যায়ে সংকটে পড়তে হবে।
মঙ্গলবার অর্থনৈতিক রিপোর্টারদের সংগঠন ইকোনোমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত ‘ইআরএফ সংলাপে’ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, সামষ্টিক অর্থনীতি বেশ চাপের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এবার জিডিপির অভিলাষ সংযত করে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের দিকে মনোযোগের পরামর্শ অর্থনীতিবিদরা দিয়েছিলেন। আমি মনে করি, বৈদেশিক বাণিজ্য বিনিময় হার ও মূল্যস্ফীতির যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা দ্রুত শেষ হবে না।
রাজধানীর পুরানা পল্টনে ইআরএফ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংলাপে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি শারমিন রিনভী। ইআরএফ সাধারণ সম্পাদক এসএম রাশিদুল ইসলাম অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, বাংলাদেশের মূল সমস্যা আর্থিক খাতের দুর্বলতা। প্রয়োজনীয় রাজস্ব সংগ্রহ না হওয়া এর কারণ। যে কারণে জ্বালানিতে ভর্তুকি এবং দরিদ্র্যদের খাদ্য সহায়তা ঠিকমতো দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি মূলত রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ দ্বারা ধাবিত। বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়েনি, জিডিপির ২৩ বা ২৪ শতাংশে আটকে আছে। রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ ৫/৬ শতাংশ থেকে ৭/৮ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগও খুব কম এসেছে। এফডিআই জিডিপির এক শতাংশের নিচে, যা গতিশীল অর্থনীতির জন্য যথেষ্ট নয়।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ বেশি হলে সেগুলোর সুবিধা নিয়ে ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ বাড়ে। কিন্তু বাংলাদেশে তা ঘটেনি। ফলে অবস্থা দাঁড়িয়েছে এক ইঞ্জিনে চলা প্লেনের মতো, যে বেশি দূর যেতে পারে না। কিছু দূর চলার পর রানওয়ে খুজতে থাকে।