বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলে ক্রমশ বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা, এতে করে আতঙ্কিত নগরবাসী। বিভিন্ন জায়গায় জমে থাকা পানি, ময়লা-আবর্জনার স্তূপে বাড়তে পারে মশার প্রজনন বলছেন, সচেতন মহল। দ্রুত সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা না নিলে এ রোগের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। এরই মধ্যে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নারী-পুরুষসহ ৭৬ জন রোগী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি রয়েছে। আর এ রোগে আক্রান্ত হয়ে এক জনের মৃত্যু হয়েছে।
স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, যারা আক্রান্ত হচ্ছেন তাদের বেশির ভাগই ঢাকা-বরিশাল যাতায়াতকারী। আর বরিশাল সিটি করপোরেশন বলছে, মশা নিধনের জন্য তারা ৩০টি ওয়ার্ডে স্প্রে ও ফগার মেশিন দিয়ে মশা নিধনের কাজ করছে। তবে নগরবাসীর অভিযোগ সিটি করপোরেশনের দেওয়া ওষুধে নিধন হচ্ছে না মশা।
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৯ জন। এ নিয়ে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৭৬ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। এছাড়াও পটুয়াখালী জেলায় ৫০, ভোলায় ১৫, পিরোজপুরে ৩১, বরগুনায় ১৫ ও ঝালকাঠি জেলায় আক্রান্ত নেই। এ নিয়ে বরিশাল বিভাগে চলতি মাসে মোট ৮৯৮ জন রোগী ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছিল। এর মধ্যে ছাড়পত্র নিয়েছে ৭০১ জন আর বর্তমানে হাসপাতালে রয়েছে ১৯৬ জন। গতকাল শনিবার দুপুরে বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় পরিচালক ডা. হুমায়ুন শাহিন খান বলেন, বিভাগের সব সরকারি হাসপাতালে নির্দেশনা দেওয়া আছে যেন ডেঙ্গু রোগীদের অতি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়। ডেঙ্গু নিরোধে সচেতনতাই প্রধান কাজ। মানুষ সচেতন না হলে ডেঙ্গুর প্রকোপ কমানো যাবে না বলে জানান এই কর্মকর্তা।
বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলাম বলেন, নানা সংকটের মধ্যেও ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসায় সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। স্থান সংকটের কারণে ডেঙ্গু রোগীদের আলাদা স্থানে চিকিৎসা দেওয়া যাচ্ছে না। তাই সীমিত সময়ের মধ্যে ডেঙ্গু রোগীদের যাবতীয় সমস্যা সমাধানসহ তাদের চিকিৎসায় সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, হাসপাতালে ডেঙ্গু কর্নার চালু আছে। ডেঙ্গু ওয়ার্ড প্রস্তুতের কাজ চলছে।
বরিশাল সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের মাধ্যমে পাঁচটি টিম করে ৩০টি ওয়ার্ডে প্রতিনিয়ত স্প্রে ও ফগার মেশিনের মাধ্যমে মশার ওষুধ দেওয়া হয়। সাধারণত জুন-জুলাই মাসে এ মশার উপদ্রব বেশি হয়, তাই আমরা সকাল-বিকলি দুই বেলাই মশার ওষুধ দিই। তিনি আরো বলেন, এখানে যারা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন, তারা কেউ এখান থেকে সংক্রামিত হচ্ছে না এরা বরিশালের বাহির থেকে এসেছে।