ব্যাংক থেকে মোবাইল ফোনে আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠানে তাৎক্ষণিক টাকা স্থানান্তরের সুযোগ চালু হয়েছে। সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন একাডেমি প্রতিষ্ঠাকরণ (আইডিয়া) প্রকল্পের আওতায় চালু হওয়া দেশের ইন্টার অপারেবল ডিজিটাল ট্রানজেকশন প্ল্যাটফর্ম (আইডিটিপি) বিনিময়ে গত ডিসেম্বরে প্রায় ২০ হাজার লেনদেন সম্পন্ন হয়েছে, টাকার অঙ্কে যার পরিমাণ ২ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। এ সেবা পরিচালনা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক জানিয়েছেন, ‘বিনিময়ে’ গ্রাহকেরা স্বাচ্ছন্দ্যে লেনদেন করতে পারছেন। দিনে দিনে এটির ব্যবহারও বাড়ছে।
গত ১৩ নভেম্বর নতুন এই সেবার উদ্বোধন করা হয়। তবে এখনো সব ব্যাংক ও এমএফএস প্রতিষ্ঠান এই সেবায় যুক্ত না হওয়ায় লেনদেন বাড়ছে না। আপাতত বিকাশ ও রকেটের পাশাপাশি কিছু ব্যাংক এই সেবা দিচ্ছে। ব্যাংকগুলো হলো সোনালী ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, মিডল্যান্ড ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক ও ডাচ্-বাংলা ব্যাংক। এ ছাড়া পিএসপি হিসেবে যুক্ত হয়েছে প্রগতি সিস্টেমের টালিপে।
ভারতের ইউনাইটেড পেমেন্ট ইন্টারফেসের (ইউপিআই) আদলে দেশে বিনিময় চালু করা হয়। সেবাটি চালুর সময় খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলেছিলেন, এই সেবা চালুর মাধ্যমে দেশে ডিজিটাল লেনদেনের ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যুক্ত হবে। তবে সবাই যুক্ত না হওয়ায় সেবাটির সুবিধা এখনো পুরোপুরি পাওয়া যাচ্ছে না।
এদিকে বিকাশ থেকে রকেটে, অর্থাৎ এক এমএফএস প্রতিষ্ঠান থেকে অন্য এমএফএসে টাকা স্থানান্তরে গ্রাহকের প্রতি হাজারে খরচ হচ্ছে ৫ টাকা। আর এমএফএস প্রতিষ্ঠান থেকে ব্যাংকে টাকা পাঠালে প্রতি হাজারে খরচ ১০ টাকা। এমএফএস থেকে পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডারের (পিএসপি) হিসাবে টাকা পাঠালে প্রতি হাজারে খরচ ৫ টাকা। বিনিময় সেবা ব্যবহার করে যেকোনো অঙ্কের লেনদেনে অর্থ গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান আইডিটিপিকে ৫০ পয়সা দেবে। আর বিনিময়ের মাধ্যমে এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে পাঠাতে খরচ সর্বোচ্চ ১০ টাকা। ব্যাংক থেকে পিএসপি ও এমএফএসে টাকা পাঠাতে কোনো খরচ নেই। তবে যেই পিএসপি ও ব্যাংকে টাকা যাবে, তাদের দশমিক ৪৫ শতাংশ হারে মাশুল দিতে হবে। আর এই মাশুল পাবে যে প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা যাবে, সেই প্রতিষ্ঠান।
বিনিময় ব্যবহার করতে চাইলে গ্রাহককে নিবন্ধন করতে হবে। নিবন্ধনের পর গ্রাহকের নামের পরে @binimoy.gov.bd যুক্ত হয়ে একটি আইডি তৈরি হবে। নিবন্ধন শেষ হলে গ্রাহক দুটি অপশন দেখতে পাবেনÍ‘সেন্ড মানি’ ও ‘রিসিভ মানি’। গ্রাহক যদি কাউকে টাকা পাঠাতে চান, তখন সেন্ড মানি অপশনে গেলে নিজের যেসব আর্থিক প্রতিষ্ঠানে গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট আছে, তা থেকে একটি বেছে নিতে হবে। এবার যাকে পাঠাবেন, তার মুঠোফোন নম্বর বা ইতিমধ্যে যদি ঐ ব্যক্তির বিনিময়ে আইডি থাকে, সেই আইডি নম্বর দিয়ে টাকা পাঠানো যাবে। আর যাকে টাকা পাঠানো হলো, তিনি ‘রিসিভ মানি’ অপশনে গিয়ে নিজের অ্যাকাউন্টে থাকা যেকোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নম্বরে টাকাটা গ্রহণ করতে পারবেন।