ভবিষ্যতে গ্রহাণুর হাত থেকে বিশ্বকে বাঁচানোর পরীক্ষা করলো আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র নাসা। ১০ মাস আগে তাদের এই ডার্ট মহাকাশযান গ্রহাণু লক্ষ্য করে উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল। সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টা ১৪ মিনিটে (জিএমটি) মহাকাশযান গিয়ে গ্রহাণুতে আছড়ে পড়ে।
নাসার প্ল্যানেটারি সায়েন্স বিভাগের ডিরেক্টর লোরি গ্লেজ বলেছেন, আমরা নতুন যুগে প্রবেশ করলাম। যে যুগে নিজেদের রক্ষা করার ক্ষমতা আমাদের থাকবে। কোনো ভয়ংকর গ্রহাণু এসে আমাদের আঘাত করতে পারবে না।
মহাকাশযান থেকে লাইভ ফুটেজ এবং নাসার গ্রাউন্ড কন্ট্রোল টিমের প্রতিক্রিয়া সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। সংঘর্ষের এক সেকেন্ড আগে গ্রহাণুকে খুব কাছ থেকে তুলে ধরে ক্যামেরা। মহাকাশযানটি ঘণ্টায় ১৪ হাজার মাইল (২২ হাজার ৫০০ কিলোমিটার) বেগে গিয়ে গ্রহাণুর উপর আছড়ে পড়ে। এই প্রথম এই ধরনের পরীক্ষা করা হলো। এবার ফলাফল পরীক্ষা করে দেখবেন বিজ্ঞানীরা।কয়েক সপ্তাহ আগে ডার্ট থেকে একটা ছোট্ট উপগ্রহ লিসিয়াকিউব বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এটা গ্রহাণুতে মহাকাশযান আছড়ে পড়ার পর তার খুব কাছ দিয়ে যায়, যাতে ছবি তোলা যায়। সংঘর্ষের ফলে পাথর এবং অন্য ধ্বংসস্তূপ ছড়িয়ে যায়।
গ্লেজ বলেছেন, এখান থেকে বিজ্ঞানের নতুন যাত্রা শুরু। এখন দেখার বিষয় হলো, সেটি গতিপথ বদল করে কি না।
এই মিশনের জন্য খরচ হয়েছে ৩২ কোটি ৫০ লাখ ডলার। কাইনেটিক এনার্জি দিয়ে মহাকাশে কারো অবস্থান বদল করার চেষ্টা এই প্রথম।
ড্রেস রিহার্সাল : এখনো পর্যন্ত কোনো গ্রহাণু, ধূমকেতু বা অন্য কোনো বস্তু পৃথিবীর কাছে নেই। নাসার ভাষায় পৃথিবীর সঙ্গে সংঘর্ষ হতে পারে, এমন কিছু এখন নেই। তবে বিজ্ঞানীদের সাবধান বাণী হলো, এরকম একাধিক বস্তুর দেখা পাওয়া যেতে পারে।
বিজ্ঞানীদের হাতে এখন বিকল্প হলো, যখন এই ধরনের গ্রহাণু বা ধূমকেতু আসবে, তখন বিজ্ঞানীরা তার গতিপথ বদলে দিতে পারবেন। দ্বিতীয় বিকল্প হলো, মহাকাশে সেগুলোকে ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করা। এতে ছোট ছোট টুকরো আছড়ে পড়লেও অভিঘাত অতটা ভয়ংকর হবে না।