ফরম যাই হোক আইসিসি টুর্নামেন্ট এলেই ধারাবাহিকতা প্রতিশব্দ হয়ে ওঠে নিউজিল্যান্ডের। নক আউট পর্বে তাদের নাম যেন অবধারিতভাবেই লেখা থাকে। কিন্তু সেমিফাইনালে পাকিস্তানের সামনে পড়লেই বদলে যায় চিত্র। ওয়ানডে ও টি-২০ মিলিয়ে এনিয়ে চার বার বিশ্বকাপে পাকিস্তানের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে কিউইরা। এর আগে দুই দলের সেমিফাইনালে দেখা হয়েছে ১৯৯২ ও ১৯৯৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপ এবং ২০০৭ টি-২০ বিশ্বকাপে। কিন্তু তিনটির একটিতেও জয়ের মুখ দেখেনি নিউজিল্যান্ড। সিডনিতে তাই আজ সেই গেরো খুলতেই মাঠে নামবে কেন উইলিয়ামসনের দল।
কিন্তু সব ছাপিয়ে ১৯৯২ বিশ্বকাপটাই বারবার চোখে ভাসছে ক্রিকেট ভক্তদের। অকল্যান্ডে সেবার ইনজামাম উল হকের বীরত্বে ফাইনালে উঠেছিল পাকিস্তান। ৩০ বছর পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে কী ভাগ্য বদলাতে পারবে কিউইরা। উইলিয়ামসন অবশ্য প্রতিশোধ গেরো এসব নিয়ে ভাবছেন না। বরাবরই সাদামাটা মনের মানুষ তিনি। সংবাদ সম্মেলনে এমন কিছু বলেন না, যেখানে সহজেই শিরোনাম খুঁজে পাওয়া যায়।
এবারের বিশ্বকাপেও তারা লাইমলাইটে থেকেও যেন আড়ালে। প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে ধসিয়ে শুরু। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে হারলেও সেমিতে যেতে কোনো অসুবিধাই হয়নি কিউইদের। ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং মিলিয়ে সবচেয়ে ভারসাম্যপূর্ণ দল তারা। তাই নির্দিষ্ট খেলোয়াড়ের ওপর নির্ভরশীল নয় তারা। এমনটাই জানালেন উইলিয়ামসন।
বিশ্বকাপের ঠিক আগে ত্রিদেশীয় সিরিজে ঘরের মাঠে পাকিস্তানের কাছে হেরেই শিরোপা হারিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। অতীত নিয়ে অবশ্য ভাবতে চান না উইলিয়ামসন। গতকাল ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে কিউই অধিনায়ক বলেন, ‘আমি মনে করি টি-২০ ও এই টুর্নামেন্টের স্বভাবটা পরিবর্তনশীল। সবাই একে অপরকে হারাচ্ছে। তার মানে হলো এক বা দুই জনের ওপর নির্ভরশীলতা নেই। ছেলেরা যেভাবে পারছে তাদের দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। এবং আমরা দল হিসেবে সেটাই করার চেষ্টা করছি।’
এতো ধারাবাহিকভাবে আইসিসি টুর্নামেন্টে সেমিফাইনাল খেলার রহস্যের ব্যাপারে উইলিয়ামসন বলেন, ‘পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে আমরা কেবল এক ম্যাচ ধরেই এগিয়েছি এবং আমরা এখন সেমিফাইনালে আছি। এটি চমৎকার একটা জায়গা। যে ধরনের ক্রিকেট আমরা খেলতে চাই এবং খেলে আসছি সেখানেই আমাদের মনোযোগ।’
গত আসরে ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে শিরোপা হারিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। কাগজেকলমে সেমিফাইনালে পাকিস্তানের চেয়ে অপেক্ষাকৃত শক্তিশালী দল। পেস আক্রমণে অভিজ্ঞ ট্রেন্ট বোল্ড, টিম সাউদি আছেন দুর্দান্ত ফরমে। কেন উইলিয়ামসন বাজে সময়ের মধ্য দিয়ে গেলেও নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে রানে ফেরেন তিনি। বাজপাখির মতো ফিল্ডিং আর পাওয়ার হিটিংয়ের কারণে গ্লেন ফিলিপসকে নিয়ে আলাদাভাবেই ভাবতে হবে পাকিস্তানকে।