ড. সোহেল রানা : –
কিভাবে একজন দায়িত্বশীল ডিজিটাল নাগরিক হবেন এবং কিভাবে আপনি নিজেকে অনলাইন বা ডিজিটাল মাধ্যমে উপস্থাপন করবেন তার গুরুত্ব বা নিয়ম সম্পর্কে জানা। এই বিষয়ে বিশদ আলোচনার পুর্বে আমাদের জানতে হবে ডিজিটাল নীতিশাস্ত্র জিনিসটা আসলে কি বা কেন এটা এতো গুরুত্বপুর্ন?
প্রযুক্তি এবং ডিজিটাল বিপ্লব আমাদের জীবনধারা, কাজের গতিশীলতা এবং বিশ্বব্যাপী যোগাযোগ ব্যবস্থাকে উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তন করেছে। বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম (যেমন ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম), ইমেল, সেলফোন, ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মতো মাধ্যমগুলি বিশ্বজুড়ে যোগাযোগের সুবিধাকে দিয়েছে আরও বেশি গতি। এই যেমন ধরুন ইমেল বা তাৎক্ষনিক বার্তাপ্রেরণ, বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম, ফোনকল বা ভিডিও কনফারেন্সিংইয়ের মাধ্যমে যেকোন সময়, পৃথিবীর যেকোন প্রান্ত থেকে আমরা আমাদের পরিচিতদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে সক্ষম৷ দেখুন, প্রযুক্তি শিক্ষা ব্যবস্থাকে কিভাবে আরও সহজলভ্য এবং সাশ্রয়ী করে তুলেছে। আজকে আমরা ঘরে বসে অনলাইন ডিগ্রী অর্জন করতে পারি। পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষণীয় (অনলাইন) ব্লগ বা শেখার প্ল্যাটফর্ম আছে, যেগুলি আমাদের কাজের গতিকে দিয়েছে ভিন্ন এক মাত্রা যা ভৌগলিক সীমাবদ্ধতার পাশাপাশি আর্থিক বাধাকেও অতিক্রম করেছে। বর্তমানের এই তথ্য প্রযুক্তি এটা নিশ্চিত করে সবাই যেন শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে যা তাদের অবস্থান বা আর্থিক পরিস্থিতি বিচার না করেই। আবার দেখুন, স্বাস্থ্যসেবায় প্রযুক্তির উন্নয়ন, আজ আমরা প্রযুক্তির কল্যানে (উদাহরণঃ টেলিমেডিসিন) ঘরে বসেই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারি বা তাদের সাথে রোগ নিয়ে আলোচনা করতে পারি যেটা রোগীর অর্থ সাশ্রয়ে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। বিনোদনের ক্ষেত্রে তে বলাই বাহুল্য, কারন প্রযুক্তি বিনোদনকে নিয়ে গেছে অন্য এক উচ্চতায়। এই যেমন স্মার্টফোন, ট্যাবলেট বা অন্যকোন প্রযুক্তি নির্ভর ডিভাইসে সিনেমা দেখা, টিভি-শো দেখা, গান শোনা এবং এইসব অত্যাধুনিক ডিভাইসগুলি আবার বিভিন্ন ধরনের গেম খেলার ক্ষমতাও রাখে।
আজকের দিনে ঘরে বসেই দেশ-বিদেশের খবর জানতে পাচ্ছি। বিশ্ব অর্থনীতি এবং কাজের প্রকৃতি উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত হয়েছে আজকের প্রযুক্তির উদ্ভাবনের মধ্য দিয়ে। বাণিজ্যের বিশ্বায়নকে সহজতর করেছে, নতুন নতুন শিল্প ও বাজারের জন্ম দিয়েছে এবং অনলাইন পণ্য সরবরাহের মতো প্রক্রিয়াগুলিকে সুগম করেছে। ঘরে বসেই পন্য বেচা-কেনা করতে পারি এই প্রযুক্তির কল্যানেই। তার মানে, এই প্রযুক্তিগত বিপ্লব শুধুমাত্র আমাদের পছন্দগুলিকেই প্রসারিত করেনি বরং আমরা কীভাবে আমাদের অবসর সময় কাটাবো তাতেও বাড়িয়েছে নমনীয়তা, যেমন বিভিন্ন ডিভাইসে বিনোদনের বিকল্প অন্যকিছু অফার করছে৷ কিন্তু একবারও কি ভেবে দেখেছেন, এই প্রযুক্তি আপনাকে-আমাকে কতটা অলস করে তুলছে? কতটা বেখেয়ালি করছে আমাদের? ঘন্টার পর ঘন্টা আমরা কিভাবে আমাদের মুল্যবান সময়কে নষ্ট করছি এইসবের পিছনে। আজকের দিনে আমি বা আপনি এই প্রযুক্তির কল্যানেই পন্য কেনা বেচা করতে পারি ঘরে বসে এবং ক্রেতা-বিক্রেতাকে আকৃষ্ট করতে, সেই পন্যের বিজ্ঞাপনও করছি বিভিন্ন আঙ্গিকে, বিভিন্ন ধাঁচে এবং বিভিন্ন মাধ্যমে (ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম, লিঙ্কডইন, ইউটিউব, ইত্যাদি), আর তাতেই সবচেয়ে বেশি পরিলক্ষিত হচ্ছে বেখেয়ালিপনা। আমি-আপনি হয়তো জানিই না কিভাবে নিজেকে উপস্থাপন করতে হয় এইসব প্রযুক্তি নির্ভর ডিজিটাল মাধ্যমে। দেখুন, না জানাটা দোষের কিছু না! দোষটা হচ্ছে আমি জানবো না কেন? প্রযুক্তির সুবিধা আছে মানেই যে আমি যেমন ইচ্ছা তেমন ব্যবহার করবো, সেটা ঠিক নয়। গাড়ি আছে মানেই যে হাইওয়েতে আমি বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালাবো, তা কিন্তু পারি না। আমাদেরকে নিয়ম মেনেই চালাতে হয়। মোদ্দাকথা, এই সমাজে বা দেশে আমরা যা কিছুই করি না কেন, তা নিয়ম মেনেই করি। ঠিক তেমনি, ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারেরও কিছু নিয়ম আছে যাকে বলা হয় ডিজিটাল নীতিশাস্ত্র এবং জীবনধারা (Digital Ethics and Lifestyle) ।
আজকের আলোচনার বিষয় হচ্ছে, কিভাবে একজন দায়িত্বশীল ডিজিটাল নাগরিক হবেন এবং কিভাবে আপনি নিজেকে অনলাইন বা ডিজিটাল মাধ্যমে উপস্থাপন করবেন তার গুরুত্ব বা নিয়ম সম্পর্কে জানা। এই বিষয়ে বিশদ আলোচনার পুর্বে আমাদের জানতে হবে ডিজিটাল নীতিশাস্ত্র জিনিসটা আসলে কি বা কেন এটা এতো গুরুত্বপুর্ন?
ডিজিটাল নীতিশাস্ত্র হল ইন্টারনেট বা ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করার সময় কীভাবে একজন ব্যক্তি নৈতিক ও পেশাগতভাবে আচরণ করবে তার একটা সঠিক অধ্যায়ন। মনোবিজ্ঞানীদের মতে, অন্য সবার মতো যারা ইন্টারনেট বা স্মার্ট ভিভাইস ব্যবহার করেন (যার পরিমাণ আমাদের প্রায় সকলেই), তাদের বিবেচনা করা উচিৎ যে, অনলাইনে বা ডিজিটাল মাধ্যমে তাদের নিজেদের সম্পর্কে কী তথ্য পাওয়া যায়, অর্থাৎ আমার ক্লায়েন্ট বা অনুগামী বা অনুসারীরা ডিজিটাল মাধ্যমে আমার সম্পর্কে তারা কী জানতে পারে বা আমাকে কিভাবে দেখতে চায়। সংক্ষেপে যদি বলি, ডিজিটাল নীতিশাস্ত্র হল, প্রযুক্তি বা এটা নির্ভর বিভিন্ন ডিভাইস ব্যবহার করার সময় আমরা যে নিয়ম এবং নৈতিকতা অনুসরণ করবো তার একটা সঠিক তালিকা। আরও একটি গুরুত্বপুর্ন শব্দ জানতে হবে, সেটা হল “ডিজিটাল নাগরিক”। একজন ডিজিটাল নাগরিক হলেন এমন একজন, যিনি কর্মক্ষেত্রে বা দৈনন্দিন জীবনে কাজের উদ্দেশ্যে অথবা ব্যক্তিগত বিনোদনের জন্য প্রযুক্তির ব্যবহার করেন। এর প্রধান দুইটি বৈশিষ্ট্য আছে, প্রথমটিকে বলা হয় ডিজিটাল সাক্ষরতা (Digital literacy) যার অর্থ হল প্রযুক্তি নির্ভর যেসব ডিজিটাল ডিভাইস আছে (যেমন কম্পিউটার, ল্যাপটপ, স্মার্ট মোবাইল ইত্যাদি) তার সঠিক ব্যবহার করে প্রয়োজনীয় তথ্য খোঁজা, তা বুঝতে পারা এবং তা অন্যের সাথে আদান-প্রদান করা। আমেরিকান লাইব্রেরি অ্যাসোসিয়েশন (এলা) বলে যে এটা এক ধরনের জ্ঞান, যা প্রযুক্তি ব্যবহার করে তথ্য অনুসন্ধান ও তার মূল্যায়ন করার জন্য এবং তা তৈরী করে অন্যের সাথে কিভাবে আদান প্রদান করবেন, তার জন্য চিন্তাভাবনা এবং প্রযুক্তিগত দক্ষতা উভয়েরই প্রয়োজন। আর দ্বিতীয়টিকে বলা হয় গ্রহণযোগ্য ব্যবহার নীতি (AUP)। এটা হল একটি নথি যা ব্যবহারকারীর অনুশীলন ও সীমাবদ্ধতাগুলিকে নির্দিষ্ট করে, যা একজন ব্যবহারকারীকে একটি কর্পোরেট নেটওয়ার্ক বা ইন্টারনেট এর আওতায় থাকাকালীন এর ব্যবহারের জন্য সম্মত হতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, ধরুন আপনি একটা ব্যাংককে চাকুরী করেন বা কাজ করেন, একজন ব্যাংকের কর্মকর্তা বা কর্মী হিসেবে যখন আপনি প্রযুক্তি নির্ভর পন্য যেমন, ইন্টারনেট, কম্পিউটার, মোবাইল ফোন কিংবা টেলিফোন ব্যবহার করবেন, তখন আপনি কী কী করতে পারবেন আর কী কী করতে পারবেন না তার একটা গ্রহণযোগ্য নীতি আপনাকে মানতে হবে। ভিন্নভাবে বলা যায়, একজন ব্যাংকের কর্মী হিসেবে ব্যাংকের কোন তথ্য আপনি আপনার আত্বীয়-স্বজন বা জনসাধারনের জন্য ডিজিটাল মাধ্যমে ছড়িয়ে দিতে পারবেন আর কোনগুলি পারবেন না, বলতে পারেন তার একটা খসরা চুক্তি। অর্থাৎ একটি গ্রহণযোগ্য ব্যবহার নীতি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করে যে ব্যবহারকারী কী কী করতে পারবে এবং কী কী করার অনুমতি তার নেই৷
এবার ফিরে যাই আমাদের আসল কথায়। প্রযুক্তি একদিকে যেমন আমাদের সুবিধা দিয়েছে, ঠিক তার বিপরীতে আমাদেরকে করছে বেপরোয়া। আমরা ভুলেই যাই কখন কোনটার সঠিক ব্যবহার করতে হয় বা কতক্ষন পর্যন্ত আমরা এর ব্যবহার করবো। এই যেমন ধরুন, বিক্ষিপ্তভাবে গাড়ি চালনা করা (Distracted driving) হল যখন কেউ গাড়ি চালাচ্ছে কিন্তু তার মনোযোগ থাকছে অন্য জিনিসের দিকে, সাধারণত সেটা বেশিরভাগ হয় সেলফোনের মতো ইলেকট্রনিক পণ্যের দিকে। উদাহরণস্বরূপ, এই আমিই যখন গাড়ি চালাই, হঠাৎ কেউ যদি আমার মোবাইলে কোন বার্তা পাঠায়, বা ফেসবুকে কোন নোটিফিকেশন আসে (হতে পারে সেটা অনেক গুরুত্বপুর্ন), তাহলে, ড্রাইভিং করার সময় আমার ডিভাইসের সাথে আমার কী করা উচিৎ?
উত্তরঃ আমি অনেক কিছুই করতে পারি, আমি আমার মোবাইল বন্ধ করতে পারি অথবা সাইলেন্স মুডে রাখতে পারি পাশাপাশি আমি আমার মোবাইলে একটা স্বয়ংক্রিয় উত্তর সেট করতে রাখতে পারি যে “আমি এখন গাড়ি চালাচ্ছি এবং অতি দ্রুতই আপনার কাছে ফিরে আসছি” আর হ্যাঁ, অবশ্যই আমার জিপিএস বা ম্যাপ টা চালু করে রাখবো আমার সম্ভাব্য গন্তব্য সহ। যদি এমন হয় যে আমার কাউকে বার্তা বা জরুরী বার্তা (ইমেইল) পাঠাতেই হবে বা একটা অডিও/ভিডিও কল করতেই হবে, সেক্ষেত্রে গাড়ীটাকে যতটা সম্ভব নিরাপদ স্থানে সরিয়ে পার্ক করবো, তারপর প্রয়োজনীয় কাজ টা সেরে নেবো।
বর্তমানের এই প্রযুক্তির দ্বারা সৃষ্ট বৈধ/আইনি (Legal), নৈতিক মূল্য (Ethical), নৈতিক ব্যক্তিগত মান ও বিশ্বাস (Moral) বিষয়ক সমস্যাগুলি নিয়ে আপনি কি কখনও ভেবেছেন বা ভেবে থাকলেও তা কতটুকু? অর্থাৎ, প্রযুক্তি ব্যবহারের কারণে আইনিক, নীতিশাস্ত্র এবং নীতিমূলক অসস্থিও যে হতে পারে এবং একটি নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে কী সঠিক বা কী ভুল তা সর্বদাই পরিষ্কার হয় না, তা নিয়ে কি কখনও ভেবেছেন। প্রযুক্তি ব্যবহারকালীন সময়ে, তিনটি প্রশ্ন আপনি নিজেকে করতে পারেন, (১) এটা কি বৈধ? অর্থাৎ যে কারণে প্রযুক্তির ব্যবহার বা অপব্যবহার যাই করেন না কেন, স্পষ্টভাবে তা নিষিদ্ধ এমন কোন আইন আছে কিনা? (২) এটা কি নৈতিক (নৈতিক মূল্যবোধের মানদণ্ডে)? সমাজ কি এই কার্যকলাপ (আপনি যা করছেন অর্থাৎ আপনি নিজেকে যেভাবে ডিজিটাল মাধ্যমে উপস্থাপন করছেন)-কে অনুমোদন বা স্বীকৃতি দেয় কিনা এবং আপনার পেশাগত বা শিক্ষাগত আচরণবিধি কি বলে এই বিষয়ে, (৩) এটা কি নৈতিক (ব্যক্তিগত মান ও বিশ্বাস এর মানদণ্ডে)? আপনার ব্যক্তিগত নৈতিকতার উপর ভিত্তি করে আপনার কাছে এগুলি কি সঠিক বলে মনে হয় কিনা?
একজন সচেতন ডিজিটাল নাগরিক হিসেবে আমাদের প্রত্যেকের উচিৎ ডিজিটাল প্রযুক্তির সাথে সম্পর্কিত সকল ঝুঁকি এড়াতে সর্বোত্তম যেসব অনুশীলনগুলি আছে তা চিহ্নিত করা এবং তা অনুসরন করা। কিছু পদক্ষেপ আমরা এইভাবে নিতে পারিঃ
(১) আপনি চাইলে যেকোন কিছুই সামাজিক মাধ্যমে (যেমন ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম, লিঙ্কডইন, ইত্যাদি ইত্যাদি) জনসাধারনের জন্য উন্মুক্ত করতেই পারেন। কিন্তু সস্তা জনপ্রিয়তা লাভের আশায় এমন কিছু যা অশ্লীলতা প্রদর্শন করে বা দৃষ্টিকটু বলে মনেহয় তা পরিহার করাই শ্রেয়। এখন আপনি যদি হিরো আলম বা জায়েদ খানদের মত ধুর্তদের (যাদের আসল উদ্দেশ্যই হল আলোচনার বিষয়বস্তু হওয়া) ভক্ত বা অনুসারী হয়ে থাকেন সেটা ভিন্ন কথা। আমার লেখা তাদের জন্য নয়।
(২) সামাজিক মাধ্যমে কোন কিছু পোস্ট বা শেয়ার করার পুর্বে আপনি যা লিখছেন বা লিখেছেন তার বানান এবং ব্যাকরণ পরীক্ষা করুন, নয়তো পাঠক হয়তো বুঝতেই পারলো না যে আপনি কি লিখেছেন বা বোঝাতে চেয়েছেন। আপনাকে ধার করা ভাষায় (মাতৃভাষা ব্যতিত সকল ভাষা) লিখতে হবে এমন না, আপনি আপনার মাতৃভাষাতেই লিখুন যেন সবাই আপনাকে সহজ ভাবে বুঝতে পারে।
(৩) ধরুন আপনি কারও পোস্ট নিজের প্রোফাইলে বা নিজের সামাজিক মাধ্যমের দেয়ালে বা ওয়ালে শেয়ার করবেন, তাহলে যিনি আসল পোস্টদাতা বা এই লেখনীর মালিক তার অনুমতি নিবেন সবার পুর্বে এবং লেখার কোন এক স্থানে বলুন জনাব ‘ক’ এই লেখনীর আসল মালিক। এটা সবক্ষেত্রেই প্রযোজ্য, কারন অন্যের লেখা নিজের বলে চালানো একটা বিশাল অন্যায়। একাডেমিয়ায় এর শাস্তি ভয়াবহ।
(৪) আপনি যদি কোনো অভিযোগ অথবা নেতিবাচক মন্তব্যের উত্তর দিতে চান, তবে আপনার উত্তর প্রেরণের আগে দেখুন এবং নিশ্চিত হন যে আপনার উদ্দেশ্য সাবলীল এবং সেগুলি আপনার অভিপ্রায় প্রতিফলিত করে।
(৫) সামাজিক মাধ্যমে এমন কিছু শেয়ার করবেন না যা অন্য কাউকে বিব্রত করতে পারে। আপনার কাছে যেটা বিনোদন, অন্যের কাছে সেটা অসস্থি বা বিরক্তির কারনও হতে পারে।
(৬) শুধুমাত্র আপনার যাচাই করা তথ্য শেয়ার করুন।
(৭) আপনার সামাজিক মাধ্যমের অ্যাকাউন্টগুলিতে সম্ভাব্য সকল প্রকার গোপনীয়তা রক্ষা করুন, কে কী/কোনটা দেখতে পারবে আর কোনটা পারবে না।
মোদ্দাকথা, আপনার অনলাইন বা ডিজিটাল মাধ্যমের কার্যকলাপের প্রতি মনোযোগী হোন। আজকের বিশ্বে, শুধুমাত্র একটি ক্লিকের মাধ্যমে যে কারো সম্পর্কে তথ্য পাওয়া অসম্ভব কিছু নয়। আপনি কলেজ/ইউনিভার্সিটি শিক্ষার কথা ভাবছেন এবং একটি ভাল বেতনের চাকরি পাওয়ার কথা ভাবছেন, তাহলে আপনি ডিজিটাল মাধ্যমে যা করছেন বা করেন কিংবা কি শেয়ার করেন বা করছেন তা আপনার ভবিষ্যতের সকল সুযোগ এবং সম্ভাবনাকে প্রভাবিত করতে পারে। এই কারণে, শুরুতেই ডিজিটাল মাধ্যমে আপনার উপস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা আপনার জন্য একান্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনাকে অবশ্যই বুঝতে হবে যে আপনি অনলাইনে যা করেন বা করছেন তার প্রায় সবকিছুরই একটি ডিজিটাল পদচিহ্ন (Copy) থেকে যেতে পারে।
পরিশেষে ডিজিটাল পদচিহ্নগুলি নিয়ন্ত্রন করার জন্য আপনাকে কিছু টিপস দিয়ে যাই। প্রথমেই আপনি আপনার নাম দিয়ে গুগলে অনুসন্ধান করে দেখুন কি দেখতে পান। তারপরে আপনি বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে করা পোস্ট বা ব্লগ পোস্ট এবং এমনকি বিভিন্ন ফোরামে করা আপনার মন্তব্যের পর্যালোচনা করুন। সন্দেহজনক বিষয়বস্তু নিজেই মুছে ফেলুন না পারলে প্রকাশক বা ওয়েবসাইটের মালিককে বলুন তিনি যেন আপনার করা মন্তব্য বা পোস্ট মুছে ফেলেন। শক্তিশালী পাসওয়ার্ড তৈরি করুন, গোপনীয়তা রক্ষা করুন নিরাপদ সাইবার নিরাপত্তার অভ্যাসগুলি অনুশীলন করুন।