ঈদ মানেই খুশি। ঈদ মানেই আনন্দ। এই আনন্দ তখনই পূর্ণতা লাভ করে, যখন পরিবারের সবার একত্রে মিলিত হয়ে ঈদ উৎযাপন করার সুযোগ মেলে। আপনার-আমার সবার ক্ষেত্রেই এই কথা প্রযোজ্য। ইতিমধ্যে পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে ছুটছে মানুষ। জীবন-জীবিকার প্রয়োজনে ইট-কাঠের শহরে আবাস গড়লেও সবার মন পড়ে থাকে নিজ গ্রামে। যেখানে রয়েছে মানুষের নাড়ির টান। বাড়ি অনেক দূরে হলেও ঈদের মধ্যে প্রিয়জনের সঙ্গে মিলিত হতে চায় সবাই। খুশিকে আরো পরিপূর্ণ করতে এবং আপনজনকে দেখার আকাঙ্ক্ষা মেটাতে পথের কষ্ট নিয়ে ভাবে না কেউ। যেভাবেই হোক ঈদে বাড়ি পৌঁছানো চাই!
বাংলাদেশের বেশির ভাগ যাত্রী সড়কপথে বাড়িতে যায় এবং ফিরেও আসে এই সড়কপথেই। কিছুদিন আগে বাসে ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। এতে করে বেশকিছুটা ভোগান্তি পোহাবে ঘরমুখী মানুষ। এক্ষেত্রে অতিরিক্ত ট্রেনের বগির বন্দোবস্তের মতো কাজগুলো সমাধান করতে না পারলে বিড়ম্বনা বাড়বে। আর আকাশপথে ইচ্ছে থাকলেও সাধ্যে কুলাবে না মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্তদের। উৎসবকালে ঈদের আগে পরিবহনের টিকিট পাওয়াটা যেন ‘সোনার হরিণ’ হয়ে ওঠে! অনলাইনে টিকিট কাটার ক্ষেত্রেও দেখা যায় নানা বিড়ম্বনা। স্টেশনে সারা রাত অপেক্ষা করে টিকিট সংগ্রহের যে কষ্ট, তা কেবল ভুক্তভোগীমাত্রই বুঝতে পারেন। অবশ্য আপন জনের সঙ্গে মিলিত হতে পেরে ক্ষণিকের মধ্যেই সেই কষ্টের কথা ভুলে যায় মানুষ। এছাড়াও তীব্র যানজট তো আছেই।
সড়ক সংস্কার, অতিরিক্ত গাড়ির চাপ, মহাসড়কে তীব্র যানজট— এসবই ঈদ উৎসবে চিরচেনা দৃশ্য। অর্থাৎ, বেশ ভোগান্তি পোহাতে হয় ঈদে ঘরমুখী যাত্রীদের। ঈদ মৌসুমে প্রতি বছরই দেখা যায়, ঘরমুখী অতিরিক্ত যাত্রীর চাপে সড়কে গণপরিবহন ও নদীতে লঞ্চ দুর্ঘটনা ঘটে। তবে স্বস্তির কথা হচ্ছে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জন্য স্বপ্নের পদ্মা সেতু রয়েছে, যার ফলে লঞ্চ ও ফেরিতে চাপ কমে গেছে অনেকটা। এখন সড়কে দরকার শুধু ‘শৃঙ্খলা’। এমতাবস্থায় তড়িঘড়ি করে বাড়ি ফিরতে গিয়ে যাত্রাপথেই যেন মৃত্যু না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। সব সময় মনে রাখতে হবে, ‘সময়ের চেয়ে জীবনের মূল্য বেশি’। কারণ একটু অসচেতনতার কারণে শুধু আমরাই পৃথিবী ছেড়ে চলে যাই না, বরং পথে বসিয়ে দিয়ে যাই আমাদের পরিবারকেও। সুতরাং, সুস্থ ও সুন্দরভাবে সবাই যেন পরিবারের সঙ্গে ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে পারে, এবারের ঈদে বাড়ি ফেরার প্রত্যাশা এটাই।