প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মানবাধিকার, গণতন্ত্র ও বেসামরিক জনগণের নিরাপত্তাবিষয়ক আন্ডারসেক্রেটারি এবং তিব্বতবিষয়ক মার্কিন বিশেষ সমন্বয়ক উজরা জেয়া।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর গত শুক্রবার রাতে উজরা জেয়ার নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধিদলটির সফরসূচি ঘোষণা করেছে। সফরসূচি অনুযায়ী, মার্কিন প্রতিনিধিদলটি গতকাল শনিবার ভারত সফর শুরু করেছে। এ অঞ্চলে সফর শুরুর আগে উজরা জেয়া যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ ইমরান ও ভারতের রাষ্ট্রদূত তরণজিৎ সিং সান্ধুর সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানায়, ভারত ও বাংলাদেশ দুই দেশেই উজরা জেয়া ধর্মীয় ও নৃগোষ্ঠীগত সংখ্যালঘুসহ মত প্রকাশ ও সংগঠনের স্বাধীনতা, নারী ও কন্যাশিশুদের অন্তর্ভুক্তি, প্রতিবন্ধী ও ঝুঁকিতে থাকা গোষ্ঠীকে নিয়ে কাজ করে এমন নাগরিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবেন।
যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রতিনিধিদলের সফর নিয়ে রাজনৈতিকসহ বিভিন্ন মহলে আলোচনা আছে। এর মূল কারণ যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। এই লক্ষ্যে দেশটি গত মে মাসে বাংলাদেশের জন্য ভিসানীতি ঘোষণা করে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের আন্ডারসেক্রেটারি একজন সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তা। ঢাকায় পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে তাঁর আনুষ্ঠানিক বৈঠক করার কথা রয়েছে। সরকারের একাধিক মন্ত্রীর সঙ্গেও তাঁর সাক্ষাৎ হতে পারে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, আন্ডারসেক্রেটারি উজরা জেয়া ভারতে অবস্থানরত তিব্বতের ধর্মগুরু দালাইলামার সঙ্গে বৈঠক করবেন। এর মাধ্যমে তিনি চীনকে বার্তা দেবেন।
উজরা জেয়া নয়াদিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিনয় কোয়াত্রার সঙ্গে বৈঠক করবেন। ওই বৈঠকে আঞ্চলিক ইস্যুতে বাংলাদেশ পরিস্থিতি, আসন্ন নির্বাচন, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক ও স্থিতিশীলতা নিয়েও আলোচনা হতে পারে বলে কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে।
বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র সরব। তবে ভারত এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে দুই দেশের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে—এমনটিই নয়াদিল্লি বলে থাকে। নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে শেখ হাসিনার সরকারের ভূমিকার কথাও ভারত স্বীকার করে।
অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের চাপ এবং এর সম্ভাব্য প্রভাবের বিষয়ে ভারতেও আলোচনা হয়েছে। গত মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফরের আগে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, বাংলাদেশ প্রসঙ্গে নরেন্দ্র মোদি মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে আলোচনা করবেন। শেষ পর্যন্ত বৈঠকে আলোচনা হয়েছিল কি না সে বিষয়ে কোনো পক্ষই কোনো বক্তব্য দেয়নি।