দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশে নাশকতার আশঙ্কা করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। দুষ্কৃতকারীদের টার্গেট দেশি-বিদেশি নানা গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। এছাড়া টার্গেট কিলিং তারা করতে পারে। ব্যক্তিগত, রাজনৈতিক ও পূর্বশত্রুতার কারণেও টার্গেট কিলিংয়ের আশঙ্কা রয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো প্রতিটি নির্বাচনি আসনের খোঁজখবর নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করে তা শীর্ষ প্রশাসনের কাছে জমা দিয়েছে। মঙ্গলবার রেললাইনের নাটবল্টু খুলে রেখেছিল দুষ্কৃতকারীরা। পরে পুলিশের নজরদারিতে তা ধরা পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেয় পুলিশ। এটি না ধরা পড়লে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারত।
নির্বাচন যতই এগিয়ে আসছে, এটিকে কেন্দ্র করে নাশকতামূলক তৎপরতার শঙ্কাও তত বাড়ছে। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে গোয়েন্দা সংস্থাসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত বাহিনীগুলোও বাড়িয়েছে তৎপরতা। যারা নাশকতা করতে পারে, তাদের ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করছে বিভিন্ন সংস্থা। এ ব্যাপারে সম্প্রতি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে নাশকতা ঠেকাতে বিস্তারিত আলোচনা হয়। নাশকতা প্রতিরোধে তিনটি ছক করে নিরাপত্তাব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হয়েছে। নির্বাচনের আগে, নির্বাচনের দিন ও নির্বাচনের পরে সম্ভাব্য সব ধরনের নাশকতা রুখে দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
এক্ষেত্রে গোয়েন্দা নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে। সব জায়গায় নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। নির্বাচনের দিন প্রিসাইডিং অফিসারসহ ভোটকেন্দ্রে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের নিরাপত্তার পাশাপাশি মানুষ যাতে অবাধে ভোট দিয়ে নির্বিঘ্নে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে, তা নিশ্চিত করতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। নির্বাচনের পরও যে কোনো ধরনের নাশকতা হতে পারে সেজন্যও প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। টার্গেট কিলিংয়ের ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে নাশকতামূলক তৎপরতার শঙ্কা আগে থেকেই ছিল সংশ্লিষ্টদের কাছে। সম্প্রতি এ শঙ্কা আরও বেড়েছে।
আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, নাশকতা ঠেকাতে পুলিশের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সামনে যে ধরনের সহিংসতা হতে পারে—সেটা সংস্থা থেকে তথ্য নিয়ে সারা দেশে নিরাপত্তাব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হয়েছে। একই সঙ্গে গোয়েন্দা নজরদারিও থাকবে, যাতে কেউ কোনো ধরনের নাশকতা সৃষ্টির চেষ্টা করতে না পারে। দেশব্যাপী পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা বিরাজমান থাকবে।
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) মহাপরিচালক এম খুরশীদ হোসেন বলেন, নির্বাচন ঘিরে সম্ভাব্য নাশকতা রুখতে র্যাবের পোশাক ও গোয়েন্দা দুই ধরনের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। নাশকতা-সহিংসতাসহ সব ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঠেকাতে র্যাব প্রস্তুত রয়েছে।