কক্সবাজারে আওয়ামী লীগ নেতা সাইফ উদ্দিন খুনের ঘটনায় পুলিশ সুপারের বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন নিহতের পরিবার ও কক্সবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল। তারা পুলিশ সুপারের বক্তব্যকে ‘অসামঞ্জস্যপূর্ণ ও প্রশ্নবোধক’ বলে মন্তব্য করে তা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
এদিকে আওয়ামী লীগ নেতা হত্যার ঘটনায় মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) রাতে নিহতের বাবা আবুল বশর বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের নামে মামলা করেছেন।
গ্রেপ্তার আশরাফুল ইসলাম কক্সবাজার শহরের পাহাড়তলী ইসলামপুর এলাকার মো. হাশেম প্রকাশ কাশেম মাঝির ছেলে ও ওয়ামী নামে একটি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী।
তিনি বলেন, কোনো ব্যক্তি বিশেষ কিংবা মহল আশরাফুলকে দিয়ে পরিকল্পনা মাফিক খুনের ঘটনাটিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে চেষ্টা করছে। এটি নিষ্পাপ ভাইয়ের চরিত্র হননের অপচেষ্টা বলে মনে করি। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, হত্যাকাণ্ডটি অত্যন্ত পরিকল্পিত এবং গ্রেপ্তার হওয়া আসামি নিঃসন্দেহে একজন পেশাদার খুনি। সাইফ উদ্দিনকে চেতনানাশক কিছু দ্রব্য খাওয়ানোর পর অচেতন করে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
কক্সবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল বলেন,সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপারের বক্তব্য আমাকে মর্মাহত করেছে। উপস্থাপিত বক্তব্যটি বস্তুনিষ্ঠ নয়, এখানে খুনির সাজানো কথা উপস্থাপন হয়েছে মাত্র। পুলিশ সুপার সংবাদ সম্মেলনে নিহত সাইফ উদ্দিনের রাজনৈতিক পরিচয় ও ব্যক্তিগত চরিত্র স্খলনের কথা বলেছেন। প্রতিহিংসাবশত তাকে হত্যা করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপিত কথাগুলো চূড়ান্ত কথা নয় বলেও দাবি করেছেন। তদন্ত প্রতিবেদন বের না হওয়া পর্যন্ত কোনো কিছু স্পষ্ট করে বলা যাবেনা। এটা যদি হয়ে থাকে তবে কেন সংবাদ সম্মেলনের নামে মৃত মানুষের চরিত্র হনন করা হলো? এ প্রশ্ন আমি এবং কক্সবাজারের মানুষের সবার।
অতিরিক্ত পুলিশ (সদর সার্কেল) মো. মিজানুর রহমান বলেন,আমরা খুনের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে এমন সব বিষয় নিয়ে কাজ করছি। ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার আশরাফুলের জবানবন্দি ও মেডিকেল চেকআপ শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য,সোমবার দুপুরে কক্সবাজার শহরের হোটেল হলিডে মোড়ের আবাসিক হোটেল সানমুনের ২০৮ নম্বর কক্ষ থেকে হাত বাঁধা অবস্থায় সাইফ উদ্দিনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় সোমবার রাতে সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে টেকনাফের হোয়াইক্যং এলাকা থেকে আশরাফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে। পরে মঙ্গলবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মাহফুজুল ইসলাম জানান,যৌন নির্যাতন থেকে রক্ষা পেতে আওয়ামী লীগ নেতা সাইফ উদ্দিনকে হোটেল কক্ষে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে।