সাম্প্রতিক বন্যার জলে নেত্রকোণায় ২৬ হাজার ৪১৭টি পুকুর এবং খামারের ১১ কোটি ৫৭ লাখ টাকার মাছ ও পোনা ভেসে গেছে। অধিকাংশ মাছ চাষি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছিলেন, যা এখন তাদের বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বন্যার সাথে তাদের স্বপ্নও ভেসে গেছে নিপা এগ্রো ফিশারিজের মালিক মোঃ রোকনুজ্জামান খান খোকন জানান, তিনি এক শ’ শতাংশ জমিতে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করেছেন।আফসোস করে বলেন, ‘সব মাছ বিক্রির জন্য প্রস্তুত ছিল। এসব মাছ বিক্রি করে ৩০ লাখ টাকা পাবো বলে আশা করেছিলাম। কিন্তু আকস্মিক বন্যা আমার আশাকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি একটি ব্যাংক থেকে ১২ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলাম। জানি না কিভাবে এ ঋণ শোধ করব। আরিফুর রহমান ও মুখলেসুর রহমান নামে অপর দুই মৎস্য খামারি জানান, ৩৪ একর জমিতে তারা ২ কোটি টাকার মাছ চাষ করেছেন তারাও ব্যাংক থেকে ১ কোটি ৯ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। কিন্তু বন্যায় তাদের সব মাছ ভেসে গেছে। নেত্রকোণার বাউশি ইউনিয়নের মাছ চাষি মোঃ ইলিয়াস তালুকদার বলেন, ‘বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক থেকে আমি ১১ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলাম। আমার পরিচিত কয়েকজনের কাছ থেকেও টাকা নিয়েছি। মাছ চাষে ৩০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছি। কিন্তু আমার সব স্বপ্ন ভেসে গেলো। ঋণ শোধ করতে করতেই আমার বাকি জীবন পার করতে হবে। নেত্রকোণা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহজাহান কবির জানান, ভয়াবহ বন্যায় মোট ১৫ হাজার ৮২৬ জন মাছ চাষি ও মৎস্য খামারি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘বন্যায় মাছের খামার হিসেবে ব্যবহৃত প্রায় সাড়ে তিন হাজার হেক্টর এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কৃষকদের ১১ কোটি ৫৭ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে’।