জামায়াতে ইসলামী ২০–দলীয় জোট থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে কি না, এমন প্রশ্নের কোনো উত্তর দিলেন না বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ২০ দলীয় জোটে থাকা না থাকা নিয়ে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের বক্তব্য সম্পর্কে জানতে চাইলে ফখরুল বলেন, ‘নো কমেন্ট, এ বিষয়ে আমি উত্তর দেব না।’
সোমবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এই মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব।
সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল দাবি করেন, আন্দোলনে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে আওয়ামী লীগ দমন-পীড়ন চালাচ্ছে। সারাদেশে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা একটা নতুন মাত্রা যোগ করেছে। বিএনপির নেতা-কর্মীদের বাসা-বাড়িতে হামলা শুরু করেছে। বিভিন্ন সভা-সমাবেশে, দলীয় কার্যালয়ে, ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে আওয়ামী লীগ-যুব লীগ-ছাত্রলীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা হামলা চালাচ্ছে, মিথ্যা মামলা দিচ্ছে, নেতা-কর্মীদের খুন-জখম করছে।
তিনি বলেন, জ্বালানি তেল, দ্রব্যমূল্য ও পরিবহন ভাড়া বৃদ্ধি এবং ভোলায় দুই নেতার নিহত হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে সারাদেশে ২২ আগস্ট থেকে বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিলের কর্মসূচি চলছে। এই কর্মসূচি জনগণের মধ্যে অভূতপূর্ব সাড়া জাগিয়েছে। কর্তৃত্ববাদী সরকারের দুঃশাসনে অতিষ্ঠ হয়ে এর প্রতিবাদ জানাতে বিএনপির ডাকে মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছে। এতে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে আওয়ামী লীগের যে চরিত্র-সন্ত্রাসী তা আরও একবার উদ্ভাসিত হয়েছে। আওয়ামী লীগ দেউলিয়া হয়ে গেছে। তাই সন্ত্রাস ছাড়া তারা আর টিকে থাকতে পারছে না।
মির্জা ফখরুল বলেন, ক্ষমতাসীন দল একবারও চিন্তা করছে না হামলা-মামলার যে কাজটা তারা শুরু করেছে- এটা সমগ্র দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করবে। প্রকৃতপক্ষে এই আন্দোলনে সম্পূর্ণভাবে বর্তমান অবৈধ সরকার ভীত হয়ে, সন্ত্রস্ত হয়ে আজকে আবার তাদের সেই দমননীতি চালিয়ে যেতে শুরু করেছে।
তিনি বলেন, কিছুদিন আগে অবৈধ প্রধানমন্ত্রী বললেন যে, কাউকেই গ্রেপ্তার করা হবে না, সভা-সমাবেশ সব কিছু করতে দেওয়া হবে। তারা কথা বলবেন একটা আর কাজ করবেন আরেকটা। এটাই আওয়ামী লীগের চরিত্র। এভাবেই তারা এদেশে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছেন, বাংলাদেশকে একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছেন।
রোববার যশোর জেলায় বিএনপির কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের ওপর আওয়ামী লীগের কর্মীরা হামলা করেছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, তিনি (অমিত) অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন। এ ছাড়াও জেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর করে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। জেলা বিএনপির নেতাদের বাড়িতে বাড়িতে হামলা চলছে। অন্যান্য জেলায়ও দলের নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে হামলা হয়েছে।
এ ছাড়াও চট্টগ্রাম, খুলনা, হবিগঞ্জ, ফেনী, টাঙ্গাইল, সাতক্ষীরা, ঠাকুরগাঁও, পটুয়াখালী, নরসিংদী, বরিশাল, ভোলা, কুষ্টিয়া নোয়াখালী, নাটোর, মুন্সীগঞ্জ, জামালপুর, লক্ষ্মীপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ইত্যাদি জেলায় বিএনপির বিক্ষোভ কর্মসূচিতে সরকারি দলের হামলার বর্ণনা তুলে ধরেন দলটির মহাসচিব।
তিনি বলেন, আমাদের ঘোষিত উপজেলা-থানা-পৌরসভা-ইউনিয়ন পর্যায়ের কর্মসূচি আগামী ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে। যেসব উপজেলা ও থানায় কর্মসূচি হয়নি সেগুলোতে এই বিক্ষোভ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে। এর পরে আমরা পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করব।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরফত আলী সপু, সাইফুল আলম নিরব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।