ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুতে একই স্থানে নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর নির্বাচনী সভার আহ্বান করার প্রেক্ষিতে উভয়পক্ষের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে রোববার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৭টা থেকে সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) ভোর ৬টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন।
রোববার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার জটারখালি বাজারে উভয়পক্ষের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে ১৪৪ ধারা জারি করে স্থানীয় প্রশাসন। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিরুপমা রায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঝিনাইদহ-২ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী নাসের শাহরিয়ার জাহেদী মহুলের উপস্থিতিতে উপজেলার জোড়াদাহ- জটারখাল বাজারের ইউনিয়ন পরিষদের কার্যালয়ের সামনে রোববার বিকেলে পথসভার আহ্বান করা হয়। দুপুর হতেই স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা সেখানে জড়ো হতে থাকেন।
কয়েকদিন আগে ঘোষণা দিয়েই এ পথসভার আহ্বান করা হলেও বিকেলে একই স্থানে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম বাবু কর্মীসভার নামে ঐ ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের নেতাকর্মীদের হঠাৎ করে জড়ো করতে থাকেন। এ সময় উভয়পক্ষের কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। উভয়পক্ষের লোকজনই সেখানে স্লোগান দিতে থাকেন এবং নৌকা প্রতীকের কর্মীসমর্থরা রাস্তায় ব্যারিকেড সৃষ্টি করে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সভা পন্ড করার চেষ্টাসহ স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীদের উপর চড়াও হন। এমন পরিস্থিতিতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা সেখান থেকে সরে গিয়ে হরিশপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তাদের পথসভা চালাতে থাকেন। এ সময় পথসভায় যোগদানের উদ্দেশ্যে আগত স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীদের একটি দল ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের সামনে দিয়ে আসার সময় তাদের ওপর নৌকার কর্মীরা হামলা চালায়। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে তীব্র উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এ অবস্থায় পুলিশ লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
পরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিরুপমা রায়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে তিনি ওই এলাকায় আগামীকাল ভোর পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করেন।
জোড়াদাহ ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম বাবু মিয়া বলেন, রোববার সন্ধ্যায় নৌকা প্রার্থীর কর্মীসভা আহ্বান করা হয়। সেই অনুযায়ী বিকেল থেকেই সেখানে নৌকা প্রতীকের কর্মী ও সমর্থকরা জড়ো হতে থাকেন। কিন্তু হঠাৎ করেই স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকরা এসে সভা করতে চান। সেখানে স্বতন্ত্র প্রার্থীও আসেন। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে কিছুটা উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছিল।
স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের (একাংশ) সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম পালু বলেন, ‘আমরা কয়েকদিন আগেই ওই স্থানে সভা করার ঘোষণা দেই। সভায় স্বতন্ত্র প্রার্থী নাসের শাহরয়িার জাহেদী মহুলের বক্তব্য দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেখানে আগে থেকেই ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে নৌকার সমর্থকরা জড়ো হলে বিশৃঙ্খল সৃষ্টি করে। এ নিয়ে একটু উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছিল। পরে আমরা পাশের একটি স্কুলে নির্বাচনী সভা করেছি।’