পরিকল্পনামন্ত্রী আবদুল মান্নান এমপি বলেছেন,পদ্মা ব্রিজ নিয়ে আমরা গর্ববোধ করি।এখন আমাদেরকে আরও ব্রিজ,টানেল তৈরির জন্য প্রস্তত হতে হবে। দৌলতদিয়া ঘাটের ব্রিজের ফিজিবিলির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী সম্প্রতি এটা আমাকে জানিয়েছেন। আমার ধারণা খুব শিগগিরই দৌলতদিয়া ঘাটের ব্রিজ নির্মাণ কাজ শুরু করতে পারবো।
আইবি’র প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী নুরুল হুদা সেমিনারের সভাপতিত্ব করেন। আর এ সেমিনারে স্বাগত বক্তৃতা করেন আইইবি’র সম্মানী সাধারণ সম্পাদী প্রকৌশলী মো. শাহাদাৎ হোসেন (শীবলু,পিইঞ্জ। )
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ভোলার সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করারও চিন্তা রয়েছে। আর্থিক সক্ষমতা ইনশাআল্লাহ হবে আর কারিগরি বিষয়গুলোতে প্রকৌশলীতে দায়িত্ব নিতে হবে। সৌদি আরবে ১০০ মাইল গেলেও একটি সেতু পাওয়া যায় না। আর বাংলাদেশে ১০০ মাইল গেলেই একটি খাল বা সেতু পাবেনই। সেতু ও সড়ক অবকাঠামো বাংলাদেশের উন্নতিতে বড় ভূমিকা রাখবে।
তিনি বলেন, অবকাঠামোখাতে বাঙালি জাতির অর্জন সবচেয়ে বড় অবকাঠামো পদ্মা সেতু। আমাদের ইতিহাসে আমাদের প্রকৌশলীরা নিজেদের মেধা খাটিয়ে এই স্থাপনা তৈরি করেছেন। সরাসরি জড়িত থেকে যারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে এই সেতুর কাজ বাস্তবায়নে নিরন্তর সহযোগীতা করেছেন একজন তৃপ্ত ও বয়োজ্যেষ্ঠ নাগরিক হিসেবে তাদেরকে অভিনন্দন জানাই।
তিনি আরও বলেন, আমরা স্বাধীনতা অর্জন করলাম। এরপর পদ্মা সেতু নির্মাণ করলাম। ঘরে ঘরে মানুষের বিদ্যুৎ পৌছে দিলাম। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশের স্বাধীনতা এবং তার কন্যার নেতৃত্বে দেশের অন্যান্য অর্জন হয়েছে। বিদ্যুৎ, তথ্য ও প্রযুক্তি এবং সড়ক ও সেতু অবকাঠামো উন্নয়নে অভ‚তপূর্ব অবদান রাখায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানাই।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় পদ্মা বহুমূখী সেতু প্রকল্পের বিশেষজ্ঞ প্যানেলের প্রধান এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. ইঞ্জিনিয়ার এম. শামীম জেড বসুনিয়া বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল এই পদ্মা সেতু যেটা করে উনি সফল হয়েছেন। বাইরে কত কথাই শোনা যায়, সব কথায় কান না দিয়ে আমাদের কথা শুনবেন।
পদ্মা বহুমূখী সেতু প্রকল্পের বিশেষজ্ঞ প্যানেলের প্রধান এবং অধ্যাপক ড. ইঞ্জিনিয়ার আইনুন নিশাত বলেন, টেন্ডার (দরপত্র) এবং পরিবেশের যাচাই করার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী যে দৃঢ়তা দেখিয়েছেন তা সত্যিই প্রসংশনীয়। বিশ্বব্যাংক যত দিন পদ্মাসেতুর সঙ্গে ছিল ততদিন পদ্মাসেতুতে বাঁধা হয়েছিল।
স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি বলেন,পদ্মাসেতুর নিচে কিছু চরে কচ্ছপের ডিম পাড়ার জন্য কম্পেনসেটরি গ্রাউন্ড তৈরি করা হয়েছে। ইলিশ রক্ষা করতে গিয়েও আমরা কাজের গতি নিয়ন্ত্রণ করেছি। ল্যান্ড রিসেটেলমেন্ট বিষয়ে এখনো কোন প্রশ্ন উঠেনি। এটাই অন্যতম অর্জন।
পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্পের সম্মানী প্রকল্প পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, একটা শক্তিশালী টিম না হলে পদ্মা সেতু নির্মাণ করা সম্ভব হতো না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় খুব দ্রুতই ফাইল সম্পন্ন হতো।অনেকেই আশা ছেড়ে দিয়েছিল, আমরা প্রধানমন্ত্রীর কারনে আশাবাদী হয়ে বাঙালি জাতির স্বপ্ন পূরণ করতে সক্ষম হয়েছি।
আইইবি আয়োজিত পদ্মা সেতু বিষয়ক সেমিনারে মূলবক্তব্য উপস্থাপন করেন পদ্মা বহুমূখী সেতু প্রকল্পের বিশেষজ্ঞ প্যানেলের সদস্য অধ্যাপক ড. ইঞ্জিনিয়ার এম. ফিরোজ আহমেদ।
অন্যান্যের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন, আইইবির পুরকৌশল বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড.ইঞ্জিনিয়ার মুনাজ আহমেদ নূর, বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলাম, আইইবির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী মো. নুরুজ্জামান প্রমুখ।