পদ্মার বুকে যে সেতু নির্মাণ করা সম্ভব- এটা কোনোদিন বিশ্বাসই হয়নি। যে নদীতে এক সেকেন্ডে ১২ থেকে ৪ ফুট পানি চলে যায় সেখানে সেতু নির্মাণ এক অনন্য নির্মাণ বলে মন্তব্য করেন পদ্মা সেতু প্রকল্প বিশেষজ্ঞ প্যানেল সদস্য আইনুন নিশাত। তিনি বলেন, পদ্মা প্রবল শক্তিশালী নদী। এর থেকে শক্তিশালী নদী আছে শুধু আমাজন। বর্ষাকালে পদ্মায় অনেক সময় ফেরিগুলো ভিড়তে পারে না। জেটিগুলো থরথর করে কাঁপে। প্রচণ্ড স্রোত, শক্তি আর গভীরতর পদ্মা। আইনুন নিশাত বলেন, গঙ্গা এবং ব্রহ্মপুত্র দু’টো অন্যতম বৃহৎ নদী। সিরাজগঞ্জের কাছে ব্রহ্মপুত্র ১২ থেকে ১৪ কিলোমিটার প্রশস্ত। রাজশাহীর কাছে ৪ থেকে ৬ কিলোমিটার প্রশস্ত।এই ১৪ ও ৬ কিলোমিটারের পানি এসে মিলিত হলো আরিচার কাছে। এটা মাওয়াতে এসে পৌঁছায়।
বর্ষাকালে ৩০ থেকে ৩৫ লাখ কিউসেক পানি থাকে। এর থেকে বেশিও থাকে। ধরেন ৪০ লাখ কিউসেক। তিস্তায় ৩ লাখ কিউসেক হলেই আমাদের অবস্থা বেগতিক হয়ে যায়। পদ্মার মাওয়াতে এই শক্তিগুলো আরও শক্তিশালী হয়। পদ্মা নদী এপাশ থেকে ওপাশ সুইং করে, বিভিন্ন কারণে। তার অন্যতম কারণ হচ্ছে- নদী শুধু পানি নিয়ে যায় না। এর সঙ্গে স্যাডিমেন্ট নিয়ে যায়। স্যাডিমেন্ট হচ্ছে নদীর তলদেশে নুড়ি পাথর, মোটা পাথর, ছোট পাথর, মোটা বালু, চিকন বালু, পলি, সিল্ড, ক্লে। আর এর তলাটা সব সময় সরে যায়। শীতকালেই মাওয়াতে ১০০ ফুট গভীরতা পাওয়া খুব স্বাভাবিক। তার মধ্যে জোয়ার-ভাটার ব্যাপার আছে। আপনি যদি একটা কনক্রিটের পাথর ফেলেন। আপনি যেখানে ফেলবেন সেখান থেকে ৩০-৪০ ফুট চলে যায় পানির স্রোতে।