স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন হবে আগামীকাল। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও (বিসিবি) এই উদ্বোধন উৎসবে নিয়েছে নানা আয়োজন। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে বিসিবি’র কার্যালয় রঙিন আলোতে সাজানো হচ্ছে। এছাড়াও উদ্বোধনের দিনে বিবিরি কার্যালয়ে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের সঙ্গে মাদ্রাসা ও এতিম শিশুদের জন্য খাবার বিতরণ করা হবে। দৈনিক মানবজমিনকে বিসিবি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজামুদ্দিন চৌধুরী সুজন বলেন, ‘বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন সেতুতে উদ্বোধনের দিন উপস্থিত থাকবেন। সেদিন আমরা বিসিবিতে মিলাদ ও দোয়ার আয়োজন করেছি। এছাড়াও এতিম শিশুদের খাবার বিতরণ করবো। আমরা মিরপুর স্টেডিয়ামকে আলোক সজ্জায় আলোকিত করবো। এই সেতু আমাদের মানুষের অনেক বড় স্বপ্ন পূরণ করতে যাচ্ছে।’ নদী পারাপারে লম্বা সময়ের কারণে পদ্মার ওপারের ক্রিকেটে খুব একটি উন্নতির ছোঁয়া লাগেনি। বিশেষ করে খুলনায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট আয়োজন কঠিন ছিল।
তবে এই সেতু হলে যাতায়াতের সময়টা কমে আসবে। ওপারের ক্রিকেটও হবে গতিশীল হবে বলে মনে করেন বিসিবির প্রধান নির্বাহী। তিনি বলেন, ‘সেতুর বড় উপকার হচ্ছে পদ্মার ওপারের মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়ন। আর খেলাধুলা তো আগেও সেখানে হয়েছে। তবে এই সেতু হওয়ার কারণে আমি বলবো সেখানে শুধু ক্রিকেট নয়, সব ধরনের খেলাধুলার প্রসার আরো বাড়বে।’
‘ওপারে ক্রিকেট হবে গতিশীল’- নাঈমুর রহমান দুর্জয় বাংলাদেশ টেস্ট দলের প্রথম অধিনায়ক নাঈমুর রহমান দুর্জয় পদ্মা সেতুর উদ্বোধন নিয়ে আপ্লুত। তার মতে এতদিন সময়ের কারণে পদ্মার ওপারে ক্রিকেট খুব বেশি আলোকিত হতে পারেনি। বিশেষ করে সময়ের কারণে সেখানে ম্যাচ দেয়াও কঠিন বিষয় ছিল। ২০১২ সালের পর খুলনায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট আয়োজন সম্ভব হয়নি। এমনকি সেখানে নিয়মিত ঘরোয়া ক্রিকেট আয়োজনও কঠিন চ্যালেঞ্জ বিসিবির জন্য। বরিশাল বিভাগেও একই অবস্থা। সেতু তৈরি হওয়ায় ১৯ জেলার মানুষের জন্য ক্রিকেট খেলাটি পৌঁছে দেয়া আরো সহজ হবে বলে মনে করেন দুর্জয়। তিনি বলেন, ‘দেখেন পদ্মা আমার কাছে হলো একটি স্বপ্ন চোখের সামনে বাস্তব হওয়া। নানা প্রতিবন্ধকতা পেছনে ফেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে এই সেতুকে বাস্তবে রূপ দিয়েছেন সে জন্য তাকে ধন্যবাদ। আর এই সেতু হওয়াতে আমি বলবো পদ্মার ওপারে ক্রিকেট খেলা আরো দ্রুত ছড়িয়ে দেয়া সম্ভব হলো। সেখানে আমরা আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজন করারও সাহস পাবো। এমন না যে সেখানে আগে খেলা হয়নি। আমি বলবো ওপারের ক্রিকেটের উন্নয়ন এই সেতুর কারণে আরো গতিশীল হলো। সেখানে এখন ক্রিকেটের বড় বড় অবকাঠামো করা আরো সহজ হলো। এছাড়াও আমি মুখিয়ে আছি এই সেতু দিয়ে উত্তাল পদ্মা পার হওয়ার জন্য।’
ক্রিকেটে দারুণ প্রভাব ফেলবে- আকরাম খান জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আকরাম খান মনে করেন পদ্মা সেতু দেশের ক্রিকেটে দারুণ প্রভাব ফেলবে। বিশেষ করে খুলনা ও বরিশাল বিভাগের ক্রিকেটে এই প্রভাব থাকবে দারুণ। আকরাম বর্তমানে বিসিবি’র ফেসিলিটিজ বিভাগের চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘আমরা যখন চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় ক্রিকেট খেলতে আসতাম তখন দুটি ফেরি পার হতে হতো। আমরা জানি ফেরি পারাপারে কতটা কষ্ট। পদ্মা সেতুর জন্য শুরুতেই প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। আমি মনে করি এই সেতু দেশের ক্রিকেটে দারুণ প্রভাব ফেলবে। বিশেষ করে খুলনা স্টেডিয়ামে আমরা নিয়মিত খেলা দিতে পারবো। সেই স্টেডিয়ামের উন্নয়ন কাজগুলো দ্রুত করা যাবে। শুধু তাই নয়, বরিশাল বিভাগের স্টেডিয়ামগুলোও এখন আমরা নিয়মিত ব্যবহার করতে পারবো। সেখানে যে ক্রিকেট অবকাঠামো আছে তার উন্নতি হবে দ্রুত।’