পরিচিতজনেরা জানেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরের খলিল মিয়া ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে বাসে পপকর্ন বিক্রি করে সংসার চালান। তিনি আশুলিয়ার যে এলাকাতে থাকেন, সেই এলাকার লোকজনও তা জানেন। প্রতিবেশীরা জানতেন, রাজধানীর গাবতলী এলাকায় পপকর্ন বিক্রি কর সে।
অবশ্য খলিল মিয়া পপকর্ন বিক্রি কর, তবে এর আড়ালে সে মাদক কারবারীও। মূলত মুখরোচক খাবার পপকর্নের ভেতর বিশেষ কায়দায় ইয়াবা ট্যাবলেট ঢুকিয়ে গাবতলীর বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করাই ছিল তার কাজ! বছরখানেক ধরে সে অভিনব এই কৌশলে ইয়াবার চালান সরবরাহ করে আসছিল।
এই খলিল মিয়াকে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গাবতলী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) সদস্যরা। তখনও তার কাছে মিলেছে পপকর্ন আর পপকর্ন রাখার ঝুঁড়ি। তবে এসবের ভেতরে ছিল তিন হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট!
ডিএনসি কর্মকর্তারা বলছেন, খলিল মিয়ার মতো মাদকের কারবারিরা নানা কৌশলে মাদক পৌঁছে দিচ্ছে খুচরা বিক্রেতা থেকে শুরু করে মাদকসেবীদের কাছে। পাকস্থলী থেকে শুরু করে লাশ বহনের কফিন, নানা পণ্য, সবজি, গাড়ির জ্বালানির ট্যাংকার এবং জুতার ভেতরও এসব মাদক বহন করা হয়। সেই ধারাবাহিকতায় এবার ধরা পড়ল খলিলের অভিনব কৌশল।
খলিলকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঢাকা মেট্রো দক্ষিণের উপপরিচালক মো. মাসুদ হোসেন জানান, খলিলের ইয়াবা বিক্রির অভিনব কৌশলের বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে গাবতলীর কোর্টবাড়ি এলাকায় অভিযান চালানো হয়। সেখান থেকে প্রথমে ১০০ পিস ইয়াবাসহ তার সহযোগী আদিস মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যানুযায়ী খলিল মিয়াকেও পাওয়া যায়। ওই সময়ে তার কাছে থাকা পপকর্নের ঝুঁড়িতে ভরা তিন হাজার পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়। এরপর আশুলিয়া এলাকায় তার বাসায় অভিযান চালিয়ে আরও তিন হাজার পিস ইয়াবা পাওয়া যায়।
ওই অভিযানে থাকা ডিএনসির কোতয়ালী সার্কেলের পরিদর্শক জাহিদুল ইসলাম জানান, গ্রেপ্তার খলিল ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে বাসে করে পপকর্ন বিক্রির আড়ালে গত এক বছর ধরে গাবতলী ও মিরপুর এলাকায় ইয়াবা সরবরাহ করে আসছিল।
তিনি বলেন, দুইজনকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তাদের কাছ থেকে কারা ইয়াবা কিনতো, এরা ইয়াবার চালান পেত কোথায়-সে তথ্য উদ্ঘাটনের চেষ্টা চলছে। ওই দুইজনকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছে।