চলতি বছরে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে যৌথভাবে আয়োজিত হয় নারী ফুটবল বিশ্বকাপ। বৈশ্বিক এই টুর্নামেন্টে খেলা প্রতি পাঁচজন নারী ফুটবলারের মধ্যে একজন অনলাইনে হয়রানির শিকার হয়েছে বলে ফিফা ও ফিফপ্রোর এক সমীক্ষা রিপোর্টে জানানো হয়েছে।
৫.১ মিলিয়ন পোস্ট ও এর সঙ্গে সম্পৃক্ত কমেন্টসের ভিত্তিতে দেখা গেছে এবারের আসরে অংশ নেওয়া ৬৯৭ জন খেলোয়াড় ও কোচের মধ্যে কেউ না কেউ এই ধরণে হয়রানির শিকারে হয়েছেন। এক বিবৃতিতে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রণ সংস্থা ফিফা জানিয়েছে, ১৫২ জন খেলোয়াড় বৈষম্যমূলক, অপমানজনক ও হুমকিমূলক বার্তা পেয়েছেন। এর মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশ বার্তা ছিল হোমোফোবিক কিংবা যৌন হয়রানিমূলক প্রকৃতির।
সমীক্ষায় আরও দেখা গেছে গত বছর কাতারে অনুষ্ঠিত পুরুষ বিশ্বকাপের তুলনায় নারী বিশ্বকাপে ২৯ শতাংশ বেশি এই ধরনের হয়রানিমূলক বার্তা পেয়েছে ফুটবলাররা। ফিফার সোশ্যাল মিডিয়া প্রটেকশন সার্ভিস (এসএমপিএস) থেকে এই তথ্যগুলো পাওয়া গেছে। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স সফটওয়্যার ব্যবহার করে এই সমস্ত হয়রানিমূলক পোস্টের তথ্য বের করা হয়েছে।
খেলোয়াড়দের কাছে বিশেষ একটি অপশন ছিল যার মাধ্যমে তারা বিভিন্ন বার্তা মুছে দেওয়ার ক্ষমতা রাখতো। এই পদ্ধতির আওতায় প্রায় ১ লাখ ১৬ হাজার ৮২০টি হয়রানিমূলক বার্তা হিডেন করে রাখা হয়েছিল। এসএমপিএস ডাটা অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের নারী দলটি বিশ্বকাপ চলাকালীন সবচেয়ে বেশি হয়রানির শিকার হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্রের দলটি এই ধরনের হয়রানির শিকার হয়ে আসছে।
ফিফা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, আর্জেন্টিনার একজন করে খেলোয়াড়কে সবচেয়ে বেশি টার্গেট করা হয়েছে, তাদের নাম অবশ্য ফিফা প্রকাশ করেনি। রিপোর্টে কলম্বিয়ার ফুটবলার লেইসি সান্তোসের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে এই ধরনের বার্তা একজন খেলোয়াড়ের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এ প্রসঙ্গে সান্তোস বলেছেন, ‘একটি ম্যাচে পরাজয়ের পর একজন খেলোয়াড় ফুটবলে যদি কোন বিষয় নিয়ে সবচেয়ে বেশি মানসিক যন্ত্রণা পেয়ে থাকে সেটা হলো এই ধরনের বাজে ও অপমানজনক কমেন্টস। পেশাদার ফুটবলারের বাইরে আমরা সবাই মানুষ। কিছু কিছু খেলোয়াড় এর থেকে বেরিয়ে আসতে পারলেও অনেকেই তা পারেনা। এটা খুবই স্পর্শকাতর বিষয়, যে কারনে মানসিকভাবে অনেকেই ভেঙ্গে পড়ে।’
ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো জানিয়েছেন খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে এই ধরনের হয়রানির কোন ক্ষমা নেই। এক বিবৃতিতে ফিফা প্রধান বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কিংবা অন্য যেকোনো ভাবে খেলোয়াড়কে অপমান করার কোন অধিকার কারো নেই। এটা ফিফা টুর্নামেন্ট বা অন্য যেকোনো টুর্নামেন্টেই হোক না কেন।’