কম পরিচিত সিনেটর আনোয়ার-উল-হক কাকার সোমবার পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে যাচ্ছেন। কয়েক মাসের মধ্যে পাকিস্তানে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। কাকার এমন একটি দেশের দায়িত্ব¡ নিচ্ছেন-যেটি কয়েক মাস ধরে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতায় জর্জরিত। পাকিস্তানের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ ইমরান খান কারাগারে। তাকে পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে।
সোমবার পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবসে বিকেলে টিভিতে সরাসরি সম্প্রচারিত অনুষ্ঠানে কাকার শপথ নেবেন।
বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ রবিবার গভীর রাতে জাতির উদ্দেশে এক ভাষণে বলেছেন, ‘অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনার জন্য তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার প্রতি আমার আস্থা আছে।’
কাকারের প্রথম কাজ হবে দেশ পরিচালনার জন্য একটি মন্ত্রিসভা গঠন করা। কারণ, এটি এমন একটি নির্বাচনী সময়ের দিকে যাচ্ছে- যা কয়েক মাস স্থায়ী হতে পারে।
সংবিধান অনুযায়ী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। এজন্যই গত সপ্তাহে আনুষ্ঠানিকভাবে সংসদ ভেঙে দেয়া হয়েছে।
কিন্তু সর্বশেষ জনশুমারির তথ্য অবশেষে এই মাসের শুরুতে প্রকাশিত হয়েছিল, এবং বিদায়ী সরকার বলেছে যে, নির্বাচন কমিশনের নির্বাচনী এলাকার সীমানা পুনর্বিন্যাসের জন্য সময় প্রয়োজন।
কয়েক মাস ধরে জল্পনা চলছে যে একটি ভোট বিলম্বিত হবে। কারণ নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকটের সম্মুখীন একটি দেশকে স্থিতিশীল করার জন্য প্রচেষ্টা চলছে।
২০২২ সালের এপ্রিল মাসে ইমরান খানকে অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে বরখাস্ত করার পর থেকে দেশটি রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে রয়েছে। দুর্নীতির অভিযোগে গত সপ্তাহে তাকে তিন বছরের কারাদন্ড দেয়া হয়।
দুর্নীতির অভিযোগে ইমরান খানকে পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু তিনি তার সাজা ও তাকে দোষী সাব্যস্ত করে যে রায় দেয়া হয়েছে- তার বিরুদ্ধে আপিল করছেন।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে খানের পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) পার্টির বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ কঠোর অভিযান চালিয়েছে। এ সময় ইমরান খানের হাজার হাজার সমর্থক ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কঠোর দমন-পীড়নের মাধ্যমে দলটির তৃণমূলকে দুর্বল করে দেয়া হয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক হাসান আসকারি রিজভী সপ্তাহান্তে এএফপি’কে বলেছেন, কাকারের ‘একটি সীমিত রাজনৈতিক ক্যারিয়ার রয়েছে এবং পাকিস্তানের রাজনীতিতে খুব বেশি প্রভাব নেই তার’।
তিনি আরো বলেন, ‘তবে এটি একটি সুবিধা হতে পারে। কারণ, প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে তার কোন দৃঢ় সম্পর্ক নেই।’
রিজভী আরো বলেন, ‘কাকারের অসুবিধা হল প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ না হওয়ার কারণে, তিনি সামরিক সংস্থার সক্রিয় সমর্থন ছাড়া যে সমস্যার মুখোমুখি হতে চলেছেন তা মোকাবেলা করা তার জন্য কঠিন হতে পারে।’
সহকর্মী বিশ্লেষক আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, কাকার ন্যাশনাল ডিফেন্স ইউনিভার্সিটিতে কোর্স করেছেন- যা পূর্বে সামরিক ওয়ার কলেজ ছিল।