পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ তার মেয়াদ পূর্ণ করার আগেই ভেঙ্গে দিয়েছিলেন পার্লামেন্ট। এরপর দায়িত্ব নেয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার। নিয়ম অনুযায়ী সংসদ ভাঙ্গার ৯০ দিনের মধ্যে রাষ্ট্রপতিকে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে হয়। তবে দেশটির প্রধান নির্বাচন কমিশনার প্রেসিডেন্টকে সংশোধিত আইনের উদ্বৃতি দিয়ে বলেছেন তিনি আর তারিখ নির্ধারণের ক্ষমতা রাখেন না।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার বাধ্যবাধকতা থেকে পাকিস্তানের প্রধান নির্বাচন কমিশনার সিকান্দার রাজাকে চিঠি দিয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি আরিফ আলভি। এ বিষয়ে বৈঠকের আমন্ত্রণ জানান তিনি। চিঠির জবাবে রাজা জানান, নির্বাচনী আইন পরিবর্তন হয়েছে। এ জাতীয় বৈঠক করা তেমন গুরত্বপূর্ণ নয়।
রাষ্ট্রপতি আরিফ আলভি বুধবার রাজাকে চিঠি দিয়ে দেশে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে একটি বৈঠকের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। চিঠিতে সংবিধানের ২৪৪ অনুচ্ছেদের উদ্ধৃতি দিয়ে আলভি বলেছেন, জাতীয় পরিষদ সময়ের আগে ভেঙ্গে গেলে ৯০ দিনের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন পরিচালনা করতে তিনি বাধ্য।
আরিফ আলভী আরও লিখেছেন, ‘রাষ্ট্রপতি কর্তৃক প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে ৯ আগস্ট জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। ইসলামিক প্রজাতন্ত্র পাকিস্তানের সংবিধানের ৪৮ (৫) অনুচ্ছেদ অনুসারে বিলুপ্তির তারিখ থেকে নব্বই দিনের মধ্যে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের নতুন তারিখ ঘোষণা করতে বাধ্য।’
২০ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতি আলভি একতরফাভাবে ৯ এপ্রিল পাঞ্জাব এবং খাইবার পাখতুনখোয়া বিধানসভার নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছিলেন কারণ পিটিআই সরকারগুলো পার্টির চেয়ারম্যান ইমরান খানের নির্দেশে তাদের পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে দুটি আইনসভা ভেঙে দিয়েছিল। দুই বিধানসভার নির্বাচনের তারিখ নিয়ে আলোচনার জন্য তার আমন্ত্রণ ইসিপি প্রত্যাখ্যান করার পরে রাষ্ট্রপতি একতরফাভাবেই তারিখ ঘোষণা করে।
তবে পরিস্থিতি এখন পরিবর্তিত হয়েছে। নির্বাচনী আইনের সাম্প্রতিক সংশোধনী অনুসারে, সিইসিকে রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপ ছাড়াই নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতিকে উদ্দেশ্য করে চিঠিতে সিইসি রাজা বলেছিলেন, সংসদের একটি আইনের কারণে নির্বাচন আইনের ৫৭ নং ধারা সংশোধন করা হয়েছে তা উল্লেখ করা অত্যাবশ্যক ছিল। এই আইন প্রধান নির্বাচন কমিশনকে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার ক্ষমতা দিয়েছে। ইসিপি দেশে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্ব ‘খুব গুরুত্ব সহকারে’ নিচ্ছে এবং নির্বাচনী পরিকল্পনায় তাদের মতামত দেওয়ার জন্য প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোকেও আমন্ত্রণ জানিয়েছে।