ইরানের সিস্তান ও বেলুচিস্তান প্রদেশের রাজধানী জাহেদানে নিরাপত্তা বাহিনী ও বেলুচ জনগোষ্ঠীর মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর পাকিস্তানের সঙ্গে গাবদ-রিমদান সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে তেহরান। এখানকার এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বেলুচ এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর সৃষ্ট সহিংসতা এড়াতে কর্তৃপক্ষ এ ব্যবস্থা নিয়েছে।
সরকারি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ডন জানিয়েছে, ইরানের নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বেলুচ জনগণের সংঘর্ষে বহু লোক নিহত হওয়ার পর গাবাদ ক্রসিং পয়েন্টটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে সেখান দিয়ে লোক চলাচল ও সব ধরনের ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে। একটি সূত্র জানায়, সে সময়কার সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক লোক নিহত হয়েছে।
কয়েকটি মানবাধিকার সংস্থা জানিয়েছে, জাহেদানে পুলিশ প্রধানের বিরুদ্ধে ১৫ বছরের এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠলে সর্বত্র বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এরপরই পুলিশের সঙ্গে তাদের তীব্র সংঘর্ষ শুরু হয়। এ ঘটনার শিকার ঐ মেয়েটি সেখানকার সংখ্যালঘু বেলুচ জনগোষ্ঠীর। এ কারণেই বিক্ষোভ বিস্ফোরণোন্মুখ হয়ে উঠে।
গত শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর জাহেদানে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) প্রদেশীয় গোয়েন্দা প্রধান আলী মৌসাভী ঐ সহিংসতায় গুলিবিদ্ধ হন এবং পরে হাসপাতালে মারা যান। এই হামলার দায় স্বীকার করেছে উগ্রবাদী আল-আদল বাহিনী। তারা সিস্তান ও বেলুচিস্তানের স্বাধীনতা এবং এই প্রদেশের প্রধান জাতিগোষ্ঠী বেলুচদের অধিকার আদায়ের জন্য আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।
পাকিস্থানের কেন্দ্রীয় সরকারের তদন্ত সংস্থার এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ইরানি কর্তৃপক্ষ জাহেদান থেকে গাবদ-রিমদান সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, ‘তারা পাকিস্তান থেকে ইরানে কাউকে প্রবেশের অনুমতি দিচ্ছে না।’ পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর সাবেক উপদেষ্টা সরদারজাদা উমায়ের মুহাম্মদ হাসানি বলেন, সীমান্ত বন্ধ হলে ইরান নিজেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ পাকিস্তানের মধ্য দিয়ে ইরানে খাদ্য সরবরাহ করা হয়। তিনি বলেন, সীমান্ত বন্ধের এ সিদ্ধান্ত তাদের নিজেদের জন্য সুখকর হবে না।