পাকিস্তানের নজিরবিহীন বন্যায় দেশের বিশাল অংশ ডুবে প্রায় ১৫০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার দেশটির সরকারের প্রকাশিত সর্বশেষ তথ্যে এমনটি দেখা গেছে।
বর্ষাকালীন রেকর্ড বৃষ্টি ও উষ্ণ তাপমাত্রায় দেশটির উত্তরাঞ্চলের পর্বতগুলোর হিমবাহ গলে নেমে আসা পানিতে পাকিস্তানজুড়ে ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়। এতে দেশটির ২২ কোটি মানুষের মধ্যে প্রায় তিন কোটি ৩০ লাখ বন্যার কবলে পড়ে এবং ঘরবাড়ি, ফসল, রাস্তা, সেতু, যানবাহন ও গবাদিপশু ভেসে গিয়ে ৩০ বিলিয়ন ডলার ক্ষয়ক্ষতি হয় বলে হিসাব করা হয়েছে।
দেশটির জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দেশজুড়ে বন্যায় ৫৩০ শিশুসহ মৃতের সংখ্যা ১৪৮৬ জনে দাঁড়িয়েছে।
বন্যার তাণ্ডবে সিন্ধু প্রদেশে প্রায় লাখো মানুষ ঘরবাড়ি হারিয়েছে। পানি থেকে বাঁচতে এদের অনেকেই উঁচু মহাসড়কগুলোর পাশে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। ঘরহারা এসব মানুষের জন্য তাঁবু কেনা হচ্ছে বলে সিন্ধুর মুখ্যমন্ত্রী সৈয়দ মুরাদ আলী শাহ বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন।
বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও ঘনবসতি পূর্ণ শহরের মতো বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান যেন বন্যার পানিতে তলিয়ে না যায় তার চেষ্টায় গত কয়েক সপ্তাহ ধরে কর্তৃপক্ষ সেগুলোকে ঘিরে বাঁধ তৈরি করেছে। কৃষকরা এতোদিন বন্যার কবল থেকে তাদের গবাদিপশু রক্ষার করার চেষ্টা করে গেলেও এখন পশুখ্যাদ্য শেষ হতে থাকায় নতুন এক হুমকির মুখে পড়েছেন।
পাকিস্তান সরকার ও জাতিসংঘ এ বন্যার জন্য বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করেছে।
জুলাই ও অগাস্টে পাকিস্তানজুড়ে ৩৯১ মিলিমিটার (১৫ দশমিক ৪ ইঞ্চি) বৃষ্টি হয়েছে, যা ৩০ বছরের গড় থেকে প্রায় ১৯০ শতাংশ বেশি। বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত সিন্ধু প্রদেশে গড়ের চেয়ে ৪৬৬ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সংযুক্ত আরব আমিরাত ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে ত্রাণবাহী বিমান এসেছে।