পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশে পুরুষরা গুমের শিকার হচ্ছেন। এর প্রতিবাদে বেলুচ নারীদের নেতৃত্বে শুরু হওয়া লংমার্চ রাজধানী ইসলামাবাদে পৌঁছলে পুলিশ তা ছত্রভঙ্গ করতে জল কামান এবং টিয়ার গ্যাস ছুড়েছে। বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেওয়া মাহরাং বালোচসহ অন্তত ২০০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বেলুচিস্তানের পুরুষরা গুম এবং বিনা বিচারে হত্যার শিকার হওয়ার অভিযোগ ওঠার পর থেকে এর বিরুদ্ধে কয়েক সপ্তাহ ধরেই দেশ জুড়ে পদযাত্রা করে আসছে বিক্ষোভকারীরা। অতিসম্প্রতি এক বেলুচ পুরুষের মৃত্যুর পর বিক্ষোভ আরো জোরদার হয়েছে। নিহত ব্যক্তির স্বজনদের অভিযোগ, পুলিশ কাস্টডিতে থাকার সময় তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। পাকিস্তানের বেলুচ নারীদের নেতৃত্বে লংমার্চ শুরু হয়েছিল গত ৬ ডিসেম্বর।
বুধবারে নারীরা লংমার্চ নিয়ে রাজধানী ইসলামাবাদে পৌঁছায়। এরপরই বৃহস্পতিবার তাদের ওপর চড়াও হয় পুলিশ। বিক্ষোভকারীদের রেড জোনে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। এই এলাকায় নির্বাহী, বিচার বিভাগ এবং আইনসভার ভবন রয়েছে। জাতীয় প্রেসক্লাবের কাছেও বিক্ষোভকারীদের ক্যাম্প ভেঙে দিয়েছে পুলিশ। গ্রেফতার হয়েছে বেশির ভাগ বিক্ষোভকারী।
সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট হওয়া ভিডিওতে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মধ্যে বিক্ষোভকারীদের বেঁধে পুলিশের গাড়িতে তুলতে দেখা গেছে। এ সময় অনেকেই চিত্কার করছিল এবং কাঁদছিল। আবার অনেককে আহত অবস্থায় মাটিতে বসে থাকতে দেখা গেছে। পুলিশের এমন দমনাভিযানে দেশ জুড়ে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। সরকার বলছে, বিপর্যয় ঠেকাতে সরকারকে ব্যবস্থা নিতে হয়েছে। বেলুচ বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলতে তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী।
পাকিস্তানের বৃহত্তম প্রদেশ বেলুচিস্তান। সেখানে গোয়েন্দারা অনেককে তুলে নিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ আছে। তুলে নিয়ে যাওয়াদের ব্যাপারে সরকার কিছু বলছে না। আদালতে মামলাও নেওয়া হচ্ছে না। তুলে নিয়ে যাওয়া এসব মানুষের মধ্যে আছে—রাজনৈতিক কর্মী, সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী এবং শিক্ষার্থীরা।
পাকিস্তানের এই প্রদেশটিতে মানুষজনকে এভাবে তুলে নিয়ে গিয়ে গুম করে ফেলার অভিযোগ চলে আসছে সেই ২০০০ সাল থেকে। বহু বেলুচ নারীই তাদের প্রিয়জন নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার ঘটনায় বছরের পর বছর ধরে বিচার চাইছেন এবং বিষয়টিতে আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করে আসছেন।