বয়স সবে ৩১। নেইমার চাইলে আরো কয়েকটা বছর ইউরোপেই খেলতে পারতেন। মেসি-রোনালদো অবর্তমানে প্রথম বারের মতো মর্যাদার ব্যালন ডি’অর জয়ের প্রচেষ্টাও চালাতে পারতেন। কিন্তু সেই সুযোগ পায়ে ঠেলে নেইমার কি না ইউরোপ ছেড়ে পাড়ি জমালেন সৌদি আরবের প্রো লিগে। এই বছরের আগ পর্যন্ত যে লিগ নিয়ে বিশ্ব ফুটবলপ্রেমীদের কোনো আগ্রহই ছিল না! নেইমার এই সৌদি প্রো লিগের দল আল হিলালে নাম লিখিয়েছেন। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, নেইমার কেন এমন একটা লিগে পাড়ি জমালেন? প্রশ্নটা করা হয়েছিল নেইমারকেও। উত্তরে ব্রাজিলিয়ান তারকা বলেছেন, ‘পাগল’ ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর কারণে!
নেইমার দেশ ব্রাজিল ছেড়ে ইউরোপের গরম প্রতিযোগিতায় যোগ দেন ২০১৩ সালে। স্বদেশি ক্লাব সান্তোস এফসি ছেড়ে যোগ দেন বার্সেলোনায়। সেই থেকে মাঠে অনেক বারই ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর মুখোমুখি হয়েছেন নেইমার। কিন্তু রোনালদোর সঙ্গে কখনোই একই ক্লাবে খেলা হয়নি। পর্তুগজি সুপারস্টারের সঙ্গে তার বন্ধুত্বটাও তেমন গাঢ় নয়। নেইমারের গভীর বন্ধুত্ব বরং রোনালদোর চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ও চিরশত্রু লিওনেল মেসির সঙ্গে। সেই পরম বন্ধু মেসি পাড়ি জমিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে। চাইলে নেইমারও বন্ধু মেসিকে অনুসরণ করে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমাতে পারতেন। তা না করে নেইমার আশ্রয় নিলেন মরুভূমির তপ্ত হাওয়ায়! যেখানে নিজের অভ্যাসমতো খোল্লামখোলা জীবন যাপন করতে পারবেন না। জীবন কাটাতে হবে একটা সীমারেখার মধ্যে। বাদ দিতে হবে জীবনের অনেক কিছু, যেসব এতদিন অতি আনন্দের সঙ্গে করে এসেছেন। মন চাইলেই যেতে পারবেন না নৈশক্লাবে, যখন ইচ্ছা দিতে পারবেন না পার্টি। অন্য নারীদের সঙ্গে বসতে পারবেন না মদের আসরে।
এসব কিছু জানার পরও নেইমার সৌদি আরবে কেন এলেন? শুধু নেইমারই নন, এবারের দলবদলে বিশ্ব ফুটবলের অনেক নামিদামি তারকাই ইউরোপ ছেড়ে যোগ দিয়েছেন সৌদি প্রো লিগে। করিম বেনজেমা, সাদিও মানে, এনগোলো কন্তে, রুবেন নেভেস, ম্যালকম, কালিদু কুলিবালিসহ অনেকেই এসেছেন সৌদিতে। নেইমার মনে করেন, রোনালদোই তারকা ফুটবলারদের সৌদিতে আসার পথটা খুলে দিয়েছেন।
কিছুদিন আগে রোনালদো নিজেও এমনটাই বলেছিলেন, ‘আমি পথ খুলে দিয়েছি। এখন অনেকেই সৌদিতে আসবে।’ গত জানুয়ারিতে রোনালদোই প্রথম বড় তারকা হিসেবে সৌদি আরবের আল নাসরে যোগ দেন। তখন অনেকেই রোনালদোকে নিয়ে অনেক আজেবাজে কথা বলেছেন। এমনকি রোনালদোকে ‘পাগল’ বলেও আখ্যায়িত করার চেষ্টা করেন কেউ কেউ। নেইমারের কথাতেও ফুটে উঠেছে সেটাই, ‘আমি মনে করি, যা কিছু হচ্ছে (তারকা ফুটবলাররা সৌদি লিগে যোগ দেওয়া), সব ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর কারণেই হচ্ছে। শুরুতে সবাই তো তাকে ‘পাগল’ বা এমন অনেক কিছুই বলেছে। কিন্তু এখন দেখুন, লিগটা শুধু বড়ই হচ্ছে।’