ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে এবার প্রয়োজনে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি দিলো রাশিয়া। সংবাদমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে দেশটির নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রেসিডেন্ট মেদভেদেভ এ হুমকি দেন।
বলেন, ইউক্রেনে অধিকৃত ভূখণ্ডের বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে গণভোটের আয়োজন করছে রুশ-স্থাপিত প্রশাসন ও বিচ্ছিন্নতাবাদী কর্তৃপক্ষ। এ থেকে আর পিছু হটা যাবে না। এসব অঞ্চলের সুরক্ষা নিশ্চিত করবে রাশিয়া। তবে রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি গ্রহণযোগ্য নয় বলে হুশিয়ার করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তেনিও গুতেরেস।গণভোট নিয়েও দেশটিকে সতর্ক করেন তিনি।
ইউক্রেন ইস্যুতে পশ্চিমাবিশ্বের অভিযোগের মুখে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক বয়কট করেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ।
এদিকে আলোচনার মাধ্যমে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে চীন। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রকে মানচিত্র থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা করছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন। তাছাড়া ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি তার দেশে আক্রমণ চালানোর দায়ে নিরাপত্তা পরিষদ থেকে রাশিয়ার ভেটো ক্ষমতা ছিনিয়ে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বর্তমানে দেশটির সর্বোচ্চ নিরাপত্তা সংস্থা রাশিয়া’স সিকিউরিটি কাউন্সিলের ডেপুটি চেয়ারম্যান দিমিত্রি মেদভেদেভ বুধবার এক বৈঠকে একটি লিখিত প্রস্তাব উত্থাপন করেন। সেখানে বলা হয়, ‘(ইউক্রেনে) আমাদের পিছু হটার কোনো সুযোগ নেই। আমরা দনেস্ক ও লুহানস্কের স্বাধীনতার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং ইতোমধ্যে ইউক্রেনের বেশ কিছু অঞ্চল রুশ বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে এসেছে। যদি দনেস্ক ও লুহানস্কসহ ইউক্রেনের অন্যান্য অঞ্চল রাশিয়ার ভূখণ্ডে যুক্ত হতে যায়, তাহলেও আমাদের আপত্তি থাকা উচিত নয়। সম্প্রতি আমরা ইউক্রেনে আরো সেনা পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছি; কিন্তু আমার মতে, কেবল সেনা পাঠানো নয়, (ইউক্রেনের সামরিক অভিযানে) সমরাস্ত্র ব্যবহারের দিকেও আমাদের মনোযোগ দেয়া প্রয়োজন; এবং দনেস্ক, লুহানস্ক, খেরসন, জাপোরিজ্জিয়া প্রদেশসহ আরো যেসব অঞ্চল ইতোমধ্যে রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে এসেছে, সেসব এলাকা ধরে রাখতে হলে প্রয়োজনে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের জন্য প্রস্তুতি আমাদের থাকা উচিত।’
রুশ সংবাদমাধ্যম স্পুটনিকের খবরে বলা হয়েছে, বুধবার মস্কোতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিনে রাশিয়া’স সিকিউরিটি কাউন্সিলের একটি বৈঠক হয়েছে। প্রেসিডেন্ট পুতিন, উপপ্রধানমন্ত্রী ডেনিস মান্তুনভ ও রুশ সেনাবাহিনীর কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন বৈঠকে।
সেখানেই এই লিখিত প্রস্তাব উত্থাপন করেন দিমিত্রি মেদভেদেভ। বৈঠকে উপস্থিত অন্যরা তার এই প্রস্তাবে সমর্থনও দিয়েছেন। বৈঠকের একটি সূত্র স্পুটনিককে জানিয়েছে, এখন মেদভেদেভের এই প্রস্তাবটি রাশিয়ার আইনসভার নিম্নকক্ষ দুমা ও উচ্চকক্ষ ফেডারেশন কাউন্সিলে তোলা হবে এবং আইনপ্রণেতাদের ভোট চাওয়া হবে। যদি সংখ্যাগরিষ্ঠ আইনপ্রণেতা এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন, সে ক্ষেত্রে ইউক্রেন অভিযানে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যাবহারে আর কোনো প্রশাসনিক বাধা থাকবে না রুশ বাহিনীর সামনে।