ভারতে বেআইনি কর্মকাণ্ডের অভিযোগে পপুলার ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়াকে (পিএফআই) ৫ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। মুসলিম সংগঠন হিসেবে পরিচিত পিএফআইকে নিষিদ্ধ করা নিয়ে তীব্র উত্তেজনা দেখা দিয়ে ভারত জুড়ে। আজ বুধবার থেকেই এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে বলে জানা গেছে।
এরই মধ্যে দেশজুড়ে তল্লাশি চালিয়ে দুই দফায় ৩৫৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পিএফআইয়ের বিরুদ্ধে ভারতের জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ-এর অভিযোগ, জঙ্গিবাদীদের অর্থ সাহায্য করে সংগঠনটি। এমনকি মুসলিম যুব সম্প্রদায়কে অস্ত্র প্রশিক্ষণ দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে।
ভারত সরকারের দাবি, ১৯টি মামলায় সুনির্দিষ্ট তথ্য হাতে নিয়েই মৌলবাদী ভাবনায় পরিচালিত সংগঠনটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে গোয়েন্দাদের পিএফআই–বিরোধী অভিযানের সমালোচনাও শুরু হয়েছে। পিএফআই মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে পাল্টা অভিযোগ করেছে ভারতে হিন্দুত্বরাজ কায়েম করতেই তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হচ্ছে।
দেশ জুড়ে পিএফআইয়ের বিরুদ্ধে তল্লাশি অভিযান চলছে। রাজধানী দিল্লিতেও রাখা হয়েছে কড়া নজরদারি। মঙ্গলবার গোটা দেশের ৮টি রাজ্যে একযোগে অভিযানে নামে এনআইএ। গ্রেপ্তার করা হয় ২৪৭ জনকে। কর্ণাটক, উত্তর প্রদেশ, গুজরাট, দিল্লি, মহারাষ্ট্র, আসাম এবং মধ্যপ্রদেশে চলে তল্লাশি। কর্ণাটক থেকে ৭২ এবং উত্তর প্রদেশ থেকেই ৪৪ জনকে গ্রেপ্তার করে এনআইএ। মহারাষ্ট্রের অমরাবতী থেকে পিএফআই নেতা সোহাই নাকভিকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
এর আগে, ২২ সেপ্টেম্বর ১৫টি রাজ্যে তল্লাশি চালিয়ে ১০৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। উত্তর প্রদেশের উপ-মুখ্যমন্ত্রী ব্রজেশ পাঠকের দাবি, ‘পিএফআইয়ের নেটওয়ার্ক উপড়ে ফেলবে সরকার।’ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশ্বিনী কুমার চৌবের অভিযোগ, গোটা দেশে বড় ধরনের হামলার ছক কষেছিল সংগঠনটি। তাদের মূল লক্ষ্য বিজেপি। আসামের মুখ্যমন্ত্রী ও বিজেপি নেতা হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেছেন, জঙ্গি সংগঠন পিএফআইকে নির্মূল করা হবে।
তবে বিজেপি বিরোধীরা বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন। কেরালায় সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক এমভি গোবিন্দনের দাবি, ‘পিএফআইকে নিষিদ্ধ ঘোষণার আগে উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন আরএসএসকেও নিষিদ্ধ করতে হবে।’ বিহারের মুখ্যমন্ত্রী ও জেডিইউ নেতা নিতীশ কুমারও পিএফআই বিরোধী অভিযানের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। কংগ্রেসও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।