দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর পুনরুদ্ধার করা হচ্ছে পাকিস্তানে থাকা ১২০০ বছরের পুরোনো বাল্মীকি মন্দির। বুধবার (৩ আগস্ট) পাকিস্তানের সংখ্যালঘুদের উপাসনাগৃহের তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকা ইভাকুই ট্রাস্ট প্রপার্টি বোর্ড (ইটিপিবি) এই কথা জানিয়েছে।
পাকিস্তানের লাহৌরের আনারকলি বাজার কাছে থাকা বাল্মীকি মন্দিরটি একটি খ্রিস্টান পরিবার প্রায় ২০ বছর ধরে জবরদখল করে রেখেছিল। তবে ইটিপিবি গত মাসে ওই পরিবারের কাছ থেকে মন্দিরটি উদ্ধার করে।
ইটিপিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ওই খ্রিস্টান পরিবারের সদস্যদের দাবি ছিল, তারা ধর্মান্তরণের ফলে হিন্দু হয়েছেন। আর এরপর গত দুই দশক ধরে তারা এই মন্দিরের দখল নিয়ে রেখেছিলেন এবং শুধু ‘বাল্মীকি’ বর্ণের হিন্দুদেরই মন্দিরে পুজো করার অধিকার দিতেন। তবে দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর এই মন্দির পুনরুদ্ধার করে সবাইকে প্রবেশাধিকারের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
ইটিপিবির মুখপাত্র আমির হাশমি সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, খুব শীঘ্রই মাস্টার প্ল্যান অনুযায়ী বাল্মীকি মন্দির পুনরুদ্ধারের কাজ শুরু হবে। তিনি বলেন, মন্দির দখলকারীদের উচ্ছেদ করার পর বুধবার কমপক্ষে ১০০ জনেরও বেশি হিন্দু, শিখ এবং খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষ বাল্মীকি মন্দিরে জড়ো হন। হিন্দুরা তাদের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালন করে ভোগের ব্যবস্থাও করেছিলেন।
ইটিপিবির একজন কর্মকর্তা বলেন, মন্দিরের ভূমি রাজস্ব নথি অনুযায়ী এই মন্দির ইটিপিবিকে হস্তান্তর করা হয়েছিল। তবে ২০১০ সালে ওই খ্রিস্টান পরিবার দাবি করে, ওই মন্দির এবং মন্দির লাগোয়া জমির মালিকানা তাদের। এই নিয়ে দেওয়ানি আদালতে একটি মামলাও করা হয়। তবে শুনানি শেষে খ্রিস্টান পরিবারের পক্ষ থেকে মিথ্যে মামলা করা হয়েছে বলে জানান আদালত।
দেশভাগের পরে পাকিস্তান ছেড়ে ভারতে চলে যাওয়া শিখ এবং হিন্দুদের মন্দির এবং জমি দেখাশোনার দায়িত্বে রয়েছে ইটিপিবি। ইটিপিবি পাকিস্তানে ২০০টি গুরুদ্বার এবং ১৫০ মন্দিরের তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ১৯৯২ সালে ভারতে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর লাহৌরের বিক্ষুব্ধ জনতা বাল্মীকি মন্দিরে হামলা চালায় বলে অভিযোগ রয়েছে। মন্দিরটিতে আগুনও লাগিয়ে দেওয়া হয়।