নাটোরের লালপুরে আসামি নাজিরকে না পেয়ে জামিনে মুক্ত থাকা আসামি নজরুল ইসলামকে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ। পুলিশের ভুলের খেসারত হিসেবে নজরুলকে ছয় দিন কারাভোগ করতে হয়।
অবশেষে নজরুলের আইনজীবী আদালতের নজরে আসলে আদালতের বিচারক আদালত চত্বর থেকেই তাকে জামিনে মুক্তি দেন। এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন লালপুর থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) মো: আলিম। নজরুল পুরাতন ঈশ্বরদী গ্রামের মৃত আব্দুল জব্বার শেখের ছেলে।
ভুক্তভোগি নজরুল ইসলামের মা তহিরন বেগম জানান, তার ছেলে নজরুল ইসলামসহ পাঁচজনের নামে জুয়া আইনে মামলা দায়ের করেন লালপুর থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) মোল্লা সোহেল মাহমুদ। গত ২৪ মে দায়ের করা ওই মামলায় নজরুল ইসলাম (৩৮), হাবিল শেখ (৫৫), মো: ইউনুস (৪০) ও মো: আশিক সর্দারকে (১৯) গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করা হয়। ওই তারিখেই আদালত আসামিদের জামিন মঞ্জুর করেন।
কিন্তু বাদি মামলায় একই গ্রামের মৃত জব্বার মন্ডলের ছেলে মো: নজিরকে (৪৫) পলাতক আসামি হিসাবে দেখান। তিনি আদালতে হাজির না হওয়ায় তার নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। ওই গ্রেফতারি পরোয়ানা তামিল করতে গিয়ে লালপুর থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) মো: আলিম গত বৃহস্পতিবার পুরাতন ঈশ্বরদী গ্রামে যান।
তিনি উক্ত আসামি মো: নজিরকে না পেয়ে জামিনে মুক্ত থাকা আসামি নজরুল ইসলামকে থানায় নিয়ে যান। পরের দিন শুক্রবার তাকে মো: নজির নামীয় আসামি হিসাবে দেখিয়ে আদালতে চালান দেন। এ সময় নজরুল ইসলাম বার বার পুলিশের ভুলের সমালোচনা করলে তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। ওই দিন আদালতে আসার পর আসামি পরীক্ষার সময়ও বিষয়টি আমলে না নিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
নজরুল ইসলামের আইনজীবী দীনাই তাছরিন বিষয়টি আদালতের নজরে নিয়ে আসলে মঙ্গলবার সকালে নজরুল ইসলামকে লালপুর আমলী আদালতে হাজির করা হয়। আইনজীবী আসামি মো: নজিরের পরিবর্তে মো: নজরুল ইসলামকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসার বিষয়টি আদালতকে জানান এবং আদালত থেকে আসামিকে মুক্তি দেয়ার আবেদন করেন। শুনানী শেষে আদালতের বিচারক জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো: মোসলেম উদ্দীন আসামি নজরুল ইসলামকে তাৎক্ষণিক মুক্তি দেয়ার নির্দেশ দেন।
এবিষয়ে লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনোয়ারুজ্জামান জানান, গ্রেফরের সময় নজরুল ইসলাম নিজেকে মো: নজির হিসাবে পরিচয় দিয়েছিলেন। তাই পুলিশ কর্মকর্তা তাকে গ্রেফতার করেছেন। দুজনই একই মামলার আসামি হওয়ায় এই বিভ্রান্তি হয়েছে ।