নারায়ণগঞ্জে নিহতের ঘটনায় মামলা
নারায়ণগঞ্জে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষের ঘটনায় গুলিতে শাওন প্রধান নিহতের ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা করেছেন তার বড় ভাই মিলন প্রধান। বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ২টার দিকে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় এ মামলা করেন তিনি।
শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আমীর খসরু মামলার বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, মামলায় কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি। তবে মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ‘শাওন রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীদের ছোড়া ইট ও আগ্নেয়াস্ত্রের গুলিতে গুরুতর জখম হয়ে শাওন মারা যান।’
এর আগে গতকাল রাত সোয়া ১টার দিকে কড়া পুলিশি পাহারায় নবীনগর কবরস্থানে শাওনের লাশ দাফন করা হয়। রাত সাড়ে ১২টার দিকে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালে বিপুলসংখ্যক পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পুলিশের উপস্থিতিতে নিহত শাওনের বড় ভাই মিলন প্রধান ও মামা মোতাহার হোসেনের কাছে লাশ হস্তান্তর করে পুলিশ। পরে পুলিশ ও জেলা ডিবি পুলিশের পাহারায় শাওনের লাশ বাড়িতে নেওয়া হয়। লাশ হস্তান্তরের পৌনে এক ঘণ্টার মধ্যে লাশ দাফন করা হয়।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, শাওন নবীনগর এলাকার একটি ওয়ার্কশপে মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করতেন। বৃহস্পতিবার সকালে শাওন ওয়ার্কসশপের মালামাল কেনার জন্য বাসা থেকে বের হয়ে শহরের উদ্দেশে রওনা দেন। বেলা ১টার দিকে শাওনের ভাই মিলন মুঠোফোনে খবর পান, শাওনের লাশ নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে। পরে মিলন হাসপাতাল গিয়ে তার ভাইয়ের লাশ শনাক্ত করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় লোকজনের বরাত দিয়ে মিলন মামলার এজাহারে উল্লেখ করেছেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সকালে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের ৫ হাজারের বেশি নেতা–কর্মী ইটপাটকেল ও লোহার রড, হকিস্টিকসহ অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে দফায় দফায় মিছিল করে এবং পুলিশের ওপর ইটপাটকেল ছোড়ে এবং ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। শাওন দুপুর পৌনে ১২টার দিকে শহরের ২ নম্বর রেলগেট এলাকায় পাকা রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীরা ইটপাটকেল ছোড়েন, ককটেল বিস্ফোরণ করে ও অবৈধ অস্ত্র নিয়ে পুলিশের ওপর আক্রমণ করতে থাকলে ওই ইটপাটকেল ও অবৈধ অস্ত্রের গুলিতে শাওন মাথায় ও বুকে গুরুতর জখম হয়ে রাস্তায় পড়ে যান। পরে রাস্তায় থাকা লোকজন উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা শাওনকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত শাওন প্রধান ফতুল্লার বক্তাবলী ইউনিয়নের পূর্ব গোপালনগর এলাকার সাহেব আলীর সন্তান। বাড়ির পাশের একরি ইজিবাইক তৈরির কারখানায় তিনি ওয়েল্ডিং মিস্ত্রির কাজ করতেন।