ব্রাজিল কিংবদন্তি পেলের মৃত্যুর খবর সারা দুনিয়ার আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে পড়েছে। পুরো দুনিয়া তার মৃত্যু শোকে কাতর। তবে পেলের মৃত্যুর বিষয়ে এখনো একজন অজ্ঞাত। তিনি কিংবদন্তি পেলের জন্মদাত্রী মা। পেলের মা ডোনা সেলেস্তে অরান্তেস এখনো জানেন না নিজের ছেলে হারানোর কথা।
না, এমন নয় যে, পেলের পরিবারের সদস্যরা এখনো ছেলের মৃত্যুর সংবাদটি তার মাকে জানাননি! ৮২ বছর বয়সি ফুটবলের রাজার মৃত্যুর দুঃসংবাদটি ঠিকই তার মা ডোনা সেলেস্তে অরান্তেসের কানে তোলা হয়েছে। পেলের বোন মারিয়া লুসিয়া অরান্তেস নাসিমেন্তো নিজেই ভাইকে হারানোর কথাটা মা ডোনা সেলেস্তের কানে দিয়েছেন। কিন্তু শয্যাশায়ী ১০০ বছর বয়সি মা ডোনা সেলেস্তে অরান্তেস তা বুঝতে পারেননি বলেই মনে করেন মারিয়া লুসিয়া।
বয়সের ভারে বিছানাই একমাত্র ঠিকানা পেলের মা ডোনা সেলেস্তে অরান্তেসের। বিছানা থেকে উঠে বসার সাধ্য তার নেই। বলতে পারেন না কথাও। বেশির ভাগ সময়ই অবচেতন অবস্থায় বিছানায় পড়ে থাকেন। নিজে কথা বলা দূরের কথা, বেশির ভাগ সময় অন্যদের কথাও বুঝতে পারেন না। পেলের মৃত্যুর কথাটাও তিনি বুঝতে পারেননি বলেই মনে করছেন মারিয়া লুসিয়া, ‘এমনিতে মা ভালোই আছেন। নিজের জগতেই রয়েছেন। পেলে যে আর নেই, মাকে বলেছি। জানি না মা তা বুঝতে পেরেছেন কি না।’
তিন বারের বিশ্বকাপজয়ী পেলেকে তার পরিবারের সদস্যরা ডাকত ডিকো বলে। পেলে যখন হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছিলেন, এই ডাক নাম উল্লেখ করেই তার সংবাদ মাকে দিতেন বোন মারিয়া লুসিয়া, ‘মাকে যখন বলতাম ডিকো কি রকম আছে, চোখ তুলে তাকাতেন। আমি মাকে একবার এটাও বলেছিলাম, চলো সবাই মিলে পেলের জন্য প্রার্থনা করি। কিন্তু মায়ের জ্ঞান ছিল না।’
মাকে কখনোই হাসপাতালে পেলেকে দেখতে নিয়ে যাওয়া হয়নি। তবে বোন মারিয়া লুসিয়া প্রায়ই ভাইকে দেখতে গিয়েছেন। সর্বশেষ গিয়েছিলেন ২১ ডিসেম্বর। তখন কেমন ছিলেন পেলে, সেটা জানিয়ে মারিয়া লুসিয়া বলেছেন, ‘শেষ বার (২১ ডিসেম্বর) যখন ওকে দেখতে গিয়েছিলাম, ওকে শান্ত দেখাচ্ছিল। অল্প কিছু কথা হয়েছিল আমাদের। তখনই বুঝতে পেরেছিলাম, ভাই আমাদের ছেড়ে চলে যাচ্ছে। পেলে বলেছিল, ‘ঈশ্বরের হাতে রয়েছি।’
সত্যি সত্যিই ফুটবল সম্রাট এখন ঈশ্বরের হাতে।