বাংলাদেশের তৈরি পোশাক পণ্য আগস্ট মাসে বিশ্ববাজারে রপ্তানি হয়েছে ৪০৪ কোটি ৪৮ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার। যা ২০২২ সালের একই সময়ে ছিল ৩৭৪ কোটি ৫৭ লাখ ৬০ হাজার ইউএস ডলার। অর্থাৎ ২০২২ সালের আগস্ট মাসের তুলনায় ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে রপ্তানি বেড়েছে ২৯ কোটি ৯১ লাখ ইউএস ডলার বা ৭ দশমিক ৯৯ শতাংশ। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে।
ইপিবির তথ্যমতে, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের প্রথম দুই (জুলাই ও আগস্ট) মাসে ৭৯৯ কোটি ৮৬ লাখ ইউএস ডলার সমপরিমাণ পোশাক পণ্য রপ্তানি হয়েছে। যা ২০২২-২৩ অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৭১১ কোটি ২৬ লাখ ৭০ হাজার ডলার সমপরিমাণ পণ্য। অর্থাত্ ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালের জুলাই ও আগস্ট মাসে ১২ দশমিক ৪৬ শতাংশ রপ্তানি বেড়েছে।
দুই প্রকার পোশাক পণ্যের মধ্যে শুধু চলতি অর্থবছরের আগস্ট মাসে ওভেন পোশাক খাতে ১৭২ কোটি ৯১ লাখ ৩০ হাজার ডলার সমপরিমাণ পণ্য রপ্তানি হয়েছে। যা ২০২২ সালের একই সময়ে ছিল ১৬৮ কোটি ৪২ লাখ ৩০ হাজার ডলার। অর্থাত্ পণ্য রপ্তানি বেড়েছে ২ দশমিক ৬৭ শতাংশ। অপরদিকে নিট পোশাক খাতে আগস্ট মাসে ২৩১ কোটি ৫৭ লাখ ৩০ হাজার ডলার। যা ২০২২ সালে ছিল ২০৬ কোটি ১৫ লাখ ৩০ হাজার ডলার। অর্থাত্ রপ্তানি বেড়েছে ১২ দশমিক ৩৩ শতাংশ।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যমতে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে মোট ৫ হাজার ৫৫৬ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। আর শীর্ষ ১২টি দেশে রপ্তানি হয়েছে ৪ হাজার ২০৪ কোটি ডলারের পণ্য। ২০২১-২২ অর্থবছরে এই বাজারগুলোতে রপ্তানি হয়েছিল ৪ হাজার ১১ কোটি ডলারের পণ্য। এসব দেশে এক বছরের ব্যবধানে রপ্তানি বেড়েছে ১৯৩ কোটি ডলারের বেশি। তবে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া, জার্মানি, পোল্যান্ড যথাক্রমে- ৬.৮৮ শতাংশ, ০.৮৯ শতাংশ, ২৭.৮৭ শতাংশ, ৬.১৩ শতাংশ ও ১৩ শতাংশ নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
দেশের তৈরি পোশাকের বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে মোট রপ্তানির ৮৮ শতাংশই আসে তৈরি পোশাক থেকে। ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রথম বারের মতো আমেরিকার বাজারে রপ্তানি ১০ বিলিয়ন বা ১ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়ে যায়। তবে গত অর্থবছরে রপ্তানি কমে ৯৭০ কোটি ডলারে নেমেছে, যা আগের বছরের চেয়ে প্রায় ৭ শতাংশের মতো কম।
ইউরোপের দেশ জার্মানি বাংলাদেশি পণ্যের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বড় বাজার। ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশটিতে ৭০৮ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা তার আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৭ শতাংশ কম। ২০২১-২২ অর্থবছরে এই বাজারে রপ্তানি হয় ৭৫৯ কোটি ডলারের পণ্য। ২০২৩ অর্থবছরে জার্মানিতে মোট রপ্তানির ৯৪ শতাংশ ছিল তৈরি পোশাক। যার মূল্যমান প্রায় ৬৬৮ কোটি ডলার। আর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রপ্তানি হয় হোম টেক্সটাইল পণ্য।
২০২২-২৩ অর্থবছরে চীনে ৬৭৭ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা তার আগের বছরের তুলনায় ০.৮৯ শতাংশ কম। ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশটিতে ৬৮৩ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। গত অর্থবছরে দেশটিতে ২৮৯ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক, ৭ কোটি ডলারের হোম টেক্সটাইল ও ১১ কোটি ডলারের প্লাস্টিক রপ্তানি হয়।
ইউরোপ যুদ্ধের প্রভাবে রাশিয়া ও পোল্যান্ডেও রপ্তানি কমেছে। পোল্যান্ডে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১৮৫ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা তার আগের বছরের তুলনায় ১৩ শতাংশ কম। ২০২২-২৩ অর্থবছরে রাশিয়ায় ৪৬০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এছাড়া যুক্তরাজ্যের বাজারে ৫৩১ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা ২০২১-২২ অর্থবছরের তুলনায় ১০ শতাংশ বেশি। ইউরোপের আরেক দেশ স্পেনে ৩৬৮ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। দেশটিতে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৬.৩৩ শতাংশ।