রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে অবস্থানরত অবৈধদের নামিয়ে আবাসিক ১১ শিক্ষার্থীকে হলে তুলেছে হল প্রশাসন। গতকাল শুক্রবার রাত ৯টায় হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন উপস্থিত থেকে শিক্ষার্থীদের রুমে তুলে দেন।
এর আগে আবাসিক শিক্ষার্থীরা পূর্ব নির্দেশ অনুসারে বিকেল থেকেই হলের সামনে এসে ভিড় করতে থাকে। বিকেল ৪টায় অভিযান চালানোর কথা থাকলে প্রাধ্যক্ষ পরিষদের আহ্বায়ক না আসায় সেটি বিলম্ব হয়। পরে সন্ধ্যা ৬টার পর হলে প্রাধ্যক্ষ পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক ফেরদৌসী মহল এসেই উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মীসহ সকলকে হল থেকে সরে যাওয়ার অনুরোধ জানান। তারপর হল প্রশাসনের সঙ্গে প্রাধ্যক্ষের কার্যালয়ে মিটিংয়ে বসেন।
সন্ধ্যা ৭টার পর জনসংযোগ দপ্তর প্রশাসক অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পাণ্ডে ও ছাত্র উপদেষ্টা ড. তারেক নূর হলে আসেন। এসে তারা হল প্রাধ্যক্ষের সঙ্গে মিটিং করেন। মিটিং শেষে শিক্ষার্থীদের হলে ওঠানো শুরু হয়। এ পর্যন্ত ১১ জন শিক্ষার্থীকে হলে তুলে দিয়েছে প্রশাসন। বাকি সাতজনকে তোলার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
হল সূত্রে জানা যায়, করোনাভাইরাস মহামারির কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে ৯৪টি আসন খালি হয়। এরপর হল প্রশাসন শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আবেদনপত্র আহ্বান করে ভাইভা নিয়ে অ্যাকাডেমিক ফলাফল ও অন্যান্য বিবেচনায় ৬৬ জন শিক্ষার্থীকে হলে আসন বরাদ্দ দেয়। তবে এই ৬৬ জনের মধ্যে মাত্র ২২ জনকে তাদের আসনে তুলতে পেরেছে প্রশাসন। এখন পর্যন্ত ৯৪টি আসনের বিপরীতে ৭২টি দখল হয়ে আছে। বৈধভাবে যাদের আসন দেওয়া হয়েছে, তারাও অনাবাসিক দখলদারদের দ্বারা হুমকি পাচ্ছেন। এমনকি হল থেকে নামিয়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।
এর পরিপ্রক্ষিতে গত ২৩ জুন হল শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের প্রাধ্যক্ষের স্বাক্ষর করা একটি নোটিশের মাধ্যমে হলে অবস্থান করা অনাবাসিক, বহিরাগত ও অন্য হলের শিক্ষার্থীদের ২৯ জুনের মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়। কোনো শিক্ষার্থী তার সমস্যার বিষয়ে ব্যক্তিগতভাবে হল প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে ২৮ জুনের মধ্যে অভিভাবকসহ হল প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগের নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল।
জানতে চাইলে প্রাধ্যক্ষ পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক ফেরদৌসী মহল বলেন, ‘আমরা কাজ করতে চাই। প্লিজ আপনারা নিউজ করবেন না। আমাদের কাজ আমাদেরকে করতে দেন।’
প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বরাদ্দ দেওয়া আবাসিক ১৮ জন শিক্ষার্থীকে আজই (শুক্রবার) হলে তুলে দেবো। ইতিমধ্যে ১১ জনকে তুলে দিয়েছি। অনেক রুমে তালা দেওয়া আছে, তাদের আধাঘণ্টা সময় দিয়েছি। তার মধ্যে না আসলে তালা ভেঙ্গে তুলে দেওয়া হবে।