মেলায় আসা ক্রেতারাও জানান, তাঁরাও হাতের কাছে বিকল্প পেলে আর প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহার করবেন না। সবার কণ্ঠেই ছিল এক সুর—চাইলে প্লাস্টিকের পণ্য ব্যবহার না করেও দৈনন্দিন জীবন কাটানো যায়। এর জন্য প্রয়োজন সচেতনতা।
ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের তৈরি একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক পণ্যের বিকল্প পণ্য প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে জাতীয় পর্যায়ে প্রথমবারের মতো দুদিনব্যাপী এ মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (এসডো) এ মেলার আয়োজন করেছে। মেলায় অংশ নেওয়া উদ্যোক্তারা তাঁদের তৈরি পরিবেশবান্ধব পণ্যের প্রচারে সরকারের কাছে সহায়তা চেয়েছেন।
মেলায় ঘুরে দেখা গেল, মেলায় আগতরা চা–কফি খাচ্ছেন কাগজের কাপে। রয়েছে গরুর হাড়ের খোঁপার কাটা, মহিষের শিং দিয়ে তৈরি ভিজিটিং কার্ড হোল্ডার, বিভিন্ন ফলের বিচি দিয়ে তৈরি পেপার ওয়েট, আর সুপারি গাছের খোলের টিস্যু বক্স। টিস্যু বক্সের পাশাপাশি নানা তৈজসপত্র এমনকি বিয়ে, জন্মদিনসহ যেকোনো অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্র বানানো যাবে এ খোল দিয়ে।
মেলায় উদ্যোক্তারা এনেছেন বাঁশের স্ট্র। সেটি দিয়ে পান করা কোনো সমস্যাই নয়। বাঁশ, বেত ও নারকেলের মালা দিয়ে তৈরি পণ্য, পুরোনো কাপড় আবার ব্যবহার করে তৈরি নতুন শাড়ি বা অন্য কোনো পণ্য এবং হাতির দাঁত, পশুর হাড়, কাঠ, ঝিনুক ও শামুকের তৈরি গয়না কাগজের প্যাকেটে মুড়ে ক্রেতার হাতে দেওয়া হচ্ছে। দাঁতের যত্নে প্লাস্টিকের ব্রাশের পরিবর্তে মেসওয়াকও যে ব্যবহার করা যায় তা–ও জানালেন একজন উদ্যোক্তা।
আজ সকালে সাবেক সচিব ও এসডোর সভাপতি সৈয়দ মার্গুব মোর্শেদ আনুষ্ঠানিকভাবে মেলার উদ্বোধন করেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত ৩০ বছর ধরে প্লাস্টিক বন্ধে কাজ করছি। পরিবেশবান্ধব বিকল্প পণ্য মানুষের সামনে থাকতে হবে। প্লাস্টিকের বিকল্প আছে তা মানুষকে বোঝাতে হবে। মানুষকে সচেতন করার জন্যই এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। দেশকে প্লাস্টিকমুক্ত করতে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।’
মেলায় সৈয়দ মার্গুব মোর্শেদ অন্য অতিথিদের সঙ্গে নিয়ে দৈনিক পত্রিকায় মোড়ানো এসডোর তৈরি কাপড়ের ব্যাগের উদ্বোধন করেন। বাজার থেকে মাছ–মাংস কিনে এসব ব্যাগে ভরে বাড়ি আনাসহ নানা কাজে ব্যবহার করা যাবে।
এসডোর নির্বাহী পরিচালক সিদ্দিকা সুলতানা বলেন, ‘পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধে আইন আছে। আইন মানতেই হবে। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) মাধ্যমে এসডো হাইকোর্টে রিট করেছিল। রিটের পর সরকার ২০২৩ সালের মধ্যে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বন্ধে গেজেট প্রকাশ করেছে। পরিবেশ অধিদপ্তর গত বছর তিন বছর মেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে। সরকার অবশ্যই নির্ধারিত সময়েই একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বন্ধের উদ্যোগ নেবে।’
সিদ্দিকা সুলতানা বলেন, আগে যখন পলিথিন ব্যাগ ছিল না, তখন কিন্তু মানুষের ঠিকই চলত। প্লাস্টিকের আগ্রাসনে আগে ব্যবহার করা পাট, কাঠ বা পরিবেশবান্ধব অন্যান্য পণ্যকেই প্লাস্টিকের বিকল্প বলা হচ্ছে।
মেলায় বন অধিদপ্তরের সাবেক প্রধান বন সংরক্ষক ইশতিয়াক উদ্দীন আহমদ বলেন, প্লাস্টিকের ব্যবহার যে হারে বৃদ্ধি পেয়েছে, ঠিক সেই হারে কমাতে হবে। প্লাস্টিকের কারণে প্রাকৃতিক ও স্বাস্থ্যগতভাবে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। প্লাস্টিক মানুষের খাদ্যচক্রে ঢুকে যাচ্ছে। সমুদ্রে প্লাস্টিক ঢুকে পড়ায় সূর্যের কিরণ ঢুকতে পারছে না। ভবিষ্যতের জন্য ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করছে। স্থলভূমিতে প্লাস্টিকের কারণে দূষণের পাশাপাশি নদী–নালা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। প্লাস্টিক, বিশেষ করে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক একেবারেই বন্ধ হওয়া উচিত।
প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধে প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদনকারী ব্যবসায়ী মহলকেও এগিয়ে আসতে হবে বলে মন্তব্য করেন ইশতিয়াক উদ্দীন আহমদ। তাঁর মতে, প্লাস্টিকের ব্যবহারের কারণে এই ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক নিয়ে প্রকল্পের প্রধান ও এসডোর অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রোগ্রাম অফিসার ঋদিতা ফেরদৌস বলেন, একবার ব্যবহার করে যেসব প্লাস্টিক ফেলে দেওয়া হয়, তার ৬০ শতাংশেরই রিসাইকেল বা পুনর্ব্যবহার করা যায় না।
মেলায় বাগেরহাটের রামপালে কারখানায় তৈরি সুপারির খোলের বিভিন্ন পণ্য নিয়ে হাজির হয়েছিলেন ব্রাইট এরেকা লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইমরান হোসেন। কাঠ, বাঁশ, নারিকেল ও কাপড়ের তৈরি পণ্য প্রদর্শন করেন চড়ুইঘরের তানভিরুল করিম। মোহাম্মদ ইবনে হাসান হাড় ও শিংসহ বিভিন্ন জিনিসের তৈরি পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছিলেন।
মেলায় অংশ নেওয়া উদ্যোক্তারা বললেন, প্লাস্টিকের তুলনায় পরিবেশবান্ধব বিভিন্ন পণ্যের দাম কিছুটা বেশি মনে হতে পারে। তবে মনে রাখতে হবে, প্লাস্টিকের সঙ্গে মানুষ স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ি বয়ে নিয়ে যাচ্ছে। পরিবেশবান্ধব পণ্য কিনলে স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে আর ভাবতে হবে না।
শনিবার ছুটির দিন হওয়ায় সকালে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মেলায় উপস্থিত ছিলেন মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকে কর্মরত প্রতিভা রানী দাস। তিনি বলেন, এ ধরনের একটি মেলার খুব প্রয়োজন ছিল। পরিবেশবান্ধব পণ্য ব্যবহার করে প্লাস্টিক যে দৈনন্দিন জীবন থেকে হটানো সম্ভব, তা বোঝার জন্যও এ ধরনের মেলার প্রয়োজনীয়তা অনেক। এতে মানুষ সচেতন হবে।
মেলায় আসা ক্রেতারাও জানান, তাঁরাও হাতের কাছে বিকল্প পেলে আর প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহার করবেন না। সবার কণ্ঠেই ছিল এক সুর—চাইলে প্লাস্টিকের পণ্য ব্যবহার না করেও দৈনন্দিন জীবন কাটানো যায়। এর জন্য প্রয়োজন সচেতনতা।
ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের তৈরি একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক পণ্যের বিকল্প পণ্য প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে জাতীয় পর্যায়ে প্রথমবারের মতো দুদিনব্যাপী এ মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (এসডো) এ মেলার আয়োজন করেছে। মেলায় অংশ নেওয়া উদ্যোক্তারা তাঁদের তৈরি পরিবেশবান্ধব পণ্যের প্রচারে সরকারের কাছে সহায়তা চেয়েছেন।
মেলায় ঘুরে দেখা গেল, মেলায় আগতরা চা–কফি খাচ্ছেন কাগজের কাপে। রয়েছে গরুর হাড়ের খোঁপার কাটা, মহিষের শিং দিয়ে তৈরি ভিজিটিং কার্ড হোল্ডার, বিভিন্ন ফলের বিচি দিয়ে তৈরি পেপার ওয়েট, আর সুপারি গাছের খোলের টিস্যু বক্স। টিস্যু বক্সের পাশাপাশি নানা তৈজসপত্র এমনকি বিয়ে, জন্মদিনসহ যেকোনো অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্র বানানো যাবে এ খোল দিয়ে।
মেলায় উদ্যোক্তারা এনেছেন বাঁশের স্ট্র। সেটি দিয়ে পান করা কোনো সমস্যাই নয়। বাঁশ, বেত ও নারকেলের মালা দিয়ে তৈরি পণ্য, পুরোনো কাপড় আবার ব্যবহার করে তৈরি নতুন শাড়ি বা অন্য কোনো পণ্য এবং হাতির দাঁত, পশুর হাড়, কাঠ, ঝিনুক ও শামুকের তৈরি গয়না কাগজের প্যাকেটে মুড়ে ক্রেতার হাতে দেওয়া হচ্ছে। দাঁতের যত্নে প্লাস্টিকের ব্রাশের পরিবর্তে মেসওয়াকও যে ব্যবহার করা যায় তা–ও জানালেন একজন উদ্যোক্তা।
আজ সকালে সাবেক সচিব ও এসডোর সভাপতি সৈয়দ মার্গুব মোর্শেদ আনুষ্ঠানিকভাবে মেলার উদ্বোধন করেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত ৩০ বছর ধরে প্লাস্টিক বন্ধে কাজ করছি। পরিবেশবান্ধব বিকল্প পণ্য মানুষের সামনে থাকতে হবে। প্লাস্টিকের বিকল্প আছে তা মানুষকে বোঝাতে হবে। মানুষকে সচেতন করার জন্যই এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। দেশকে প্লাস্টিকমুক্ত করতে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।’
মেলায় সৈয়দ মার্গুব মোর্শেদ অন্য অতিথিদের সঙ্গে নিয়ে দৈনিক পত্রিকায় মোড়ানো এসডোর তৈরি কাপড়ের ব্যাগের উদ্বোধন করেন। বাজার থেকে মাছ–মাংস কিনে এসব ব্যাগে ভরে বাড়ি আনাসহ নানা কাজে ব্যবহার করা যাবে।
এসডোর নির্বাহী পরিচালক সিদ্দিকা সুলতানা বলেন, ‘পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধে আইন আছে। আইন মানতেই হবে। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) মাধ্যমে এসডো হাইকোর্টে রিট করেছিল। রিটের পর সরকার ২০২৩ সালের মধ্যে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বন্ধে গেজেট প্রকাশ করেছে। পরিবেশ অধিদপ্তর গত বছর তিন বছর মেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে। সরকার অবশ্যই নির্ধারিত সময়েই একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বন্ধের উদ্যোগ নেবে।’
সিদ্দিকা সুলতানা বলেন, আগে যখন পলিথিন ব্যাগ ছিল না, তখন কিন্তু মানুষের ঠিকই চলত। প্লাস্টিকের আগ্রাসনে আগে ব্যবহার করা পাট, কাঠ বা পরিবেশবান্ধব অন্যান্য পণ্যকেই প্লাস্টিকের বিকল্প বলা হচ্ছে।
মেলায় বন অধিদপ্তরের সাবেক প্রধান বন সংরক্ষক ইশতিয়াক উদ্দীন আহমদ বলেন, প্লাস্টিকের ব্যবহার যে হারে বৃদ্ধি পেয়েছে, ঠিক সেই হারে কমাতে হবে। প্লাস্টিকের কারণে প্রাকৃতিক ও স্বাস্থ্যগতভাবে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। প্লাস্টিক মানুষের খাদ্যচক্রে ঢুকে যাচ্ছে। সমুদ্রে প্লাস্টিক ঢুকে পড়ায় সূর্যের কিরণ ঢুকতে পারছে না। ভবিষ্যতের জন্য ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করছে। স্থলভূমিতে প্লাস্টিকের কারণে দূষণের পাশাপাশি নদী–নালা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। প্লাস্টিক, বিশেষ করে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক একেবারেই বন্ধ হওয়া উচিত।
প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধে প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদনকারী ব্যবসায়ী মহলকেও এগিয়ে আসতে হবে বলে মন্তব্য করেন ইশতিয়াক উদ্দীন আহমদ। তাঁর মতে, প্লাস্টিকের ব্যবহারের কারণে এই ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক নিয়ে প্রকল্পের প্রধান ও এসডোর অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রোগ্রাম অফিসার ঋদিতা ফেরদৌস বলেন, একবার ব্যবহার করে যেসব প্লাস্টিক ফেলে দেওয়া হয়, তার ৬০ শতাংশেরই রিসাইকেল বা পুনর্ব্যবহার করা যায় না।
মেলায় বাগেরহাটের রামপালে কারখানায় তৈরি সুপারির খোলের বিভিন্ন পণ্য নিয়ে হাজির হয়েছিলেন ব্রাইট এরেকা লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইমরান হোসেন। কাঠ, বাঁশ, নারিকেল ও কাপড়ের তৈরি পণ্য প্রদর্শন করেন চড়ুইঘরের তানভিরুল করিম। মোহাম্মদ ইবনে হাসান হাড় ও শিংসহ বিভিন্ন জিনিসের তৈরি পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছিলেন।
মেলায় অংশ নেওয়া উদ্যোক্তারা বললেন, প্লাস্টিকের তুলনায় পরিবেশবান্ধব বিভিন্ন পণ্যের দাম কিছুটা বেশি মনে হতে পারে। তবে মনে রাখতে হবে, প্লাস্টিকের সঙ্গে মানুষ স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ি বয়ে নিয়ে যাচ্ছে। পরিবেশবান্ধব পণ্য কিনলে স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে আর ভাবতে হবে না।
শনিবার ছুটির দিন হওয়ায় সকালে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মেলায় উপস্থিত ছিলেন মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকে কর্মরত প্রতিভা রানী দাস। তিনি বলেন, এ ধরনের একটি মেলার খুব প্রয়োজন ছিল। পরিবেশবান্ধব পণ্য ব্যবহার করে প্লাস্টিক যে দৈনন্দিন জীবন থেকে হটানো সম্ভব, তা বোঝার জন্যও এ ধরনের মেলার প্রয়োজনীয়তা অনেক। এতে মানুষ সচেতন হবে।
মেলায় আসা ক্রেতারাও জানান, তাঁরাও হাতের কাছে বিকল্প পেলে আর প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহার করবেন না। সবার কণ্ঠেই ছিল এক সুর—চাইলে প্লাস্টিকের পণ্য ব্যবহার না করেও দৈনন্দিন জীবন কাটানো যায়। এর জন্য প্রয়োজন সচেতনতা।
ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের তৈরি একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক পণ্যের বিকল্প পণ্য প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে জাতীয় পর্যায়ে প্রথমবারের মতো দুদিনব্যাপী এ মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (এসডো) এ মেলার আয়োজন করেছে। মেলায় অংশ নেওয়া উদ্যোক্তারা তাঁদের তৈরি পরিবেশবান্ধব পণ্যের প্রচারে সরকারের কাছে সহায়তা চেয়েছেন।
মেলায় ঘুরে দেখা গেল, মেলায় আগতরা চা–কফি খাচ্ছেন কাগজের কাপে। রয়েছে গরুর হাড়ের খোঁপার কাটা, মহিষের শিং দিয়ে তৈরি ভিজিটিং কার্ড হোল্ডার, বিভিন্ন ফলের বিচি দিয়ে তৈরি পেপার ওয়েট, আর সুপারি গাছের খোলের টিস্যু বক্স। টিস্যু বক্সের পাশাপাশি নানা তৈজসপত্র এমনকি বিয়ে, জন্মদিনসহ যেকোনো অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্র বানানো যাবে এ খোল দিয়ে।
মেলায় উদ্যোক্তারা এনেছেন বাঁশের স্ট্র। সেটি দিয়ে পান করা কোনো সমস্যাই নয়। বাঁশ, বেত ও নারকেলের মালা দিয়ে তৈরি পণ্য, পুরোনো কাপড় আবার ব্যবহার করে তৈরি নতুন শাড়ি বা অন্য কোনো পণ্য এবং হাতির দাঁত, পশুর হাড়, কাঠ, ঝিনুক ও শামুকের তৈরি গয়না কাগজের প্যাকেটে মুড়ে ক্রেতার হাতে দেওয়া হচ্ছে। দাঁতের যত্নে প্লাস্টিকের ব্রাশের পরিবর্তে মেসওয়াকও যে ব্যবহার করা যায় তা–ও জানালেন একজন উদ্যোক্তা।
আজ সকালে সাবেক সচিব ও এসডোর সভাপতি সৈয়দ মার্গুব মোর্শেদ আনুষ্ঠানিকভাবে মেলার উদ্বোধন করেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত ৩০ বছর ধরে প্লাস্টিক বন্ধে কাজ করছি। পরিবেশবান্ধব বিকল্প পণ্য মানুষের সামনে থাকতে হবে। প্লাস্টিকের বিকল্প আছে তা মানুষকে বোঝাতে হবে। মানুষকে সচেতন করার জন্যই এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। দেশকে প্লাস্টিকমুক্ত করতে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।’
মেলায় সৈয়দ মার্গুব মোর্শেদ অন্য অতিথিদের সঙ্গে নিয়ে দৈনিক পত্রিকায় মোড়ানো এসডোর তৈরি কাপড়ের ব্যাগের উদ্বোধন করেন। বাজার থেকে মাছ–মাংস কিনে এসব ব্যাগে ভরে বাড়ি আনাসহ নানা কাজে ব্যবহার করা যাবে।
এসডোর নির্বাহী পরিচালক সিদ্দিকা সুলতানা বলেন, ‘পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধে আইন আছে। আইন মানতেই হবে। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) মাধ্যমে এসডো হাইকোর্টে রিট করেছিল। রিটের পর সরকার ২০২৩ সালের মধ্যে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বন্ধে গেজেট প্রকাশ করেছে। পরিবেশ অধিদপ্তর গত বছর তিন বছর মেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে। সরকার অবশ্যই নির্ধারিত সময়েই একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বন্ধের উদ্যোগ নেবে।’
সিদ্দিকা সুলতানা বলেন, আগে যখন পলিথিন ব্যাগ ছিল না, তখন কিন্তু মানুষের ঠিকই চলত। প্লাস্টিকের আগ্রাসনে আগে ব্যবহার করা পাট, কাঠ বা পরিবেশবান্ধব অন্যান্য পণ্যকেই প্লাস্টিকের বিকল্প বলা হচ্ছে।
মেলায় বন অধিদপ্তরের সাবেক প্রধান বন সংরক্ষক ইশতিয়াক উদ্দীন আহমদ বলেন, প্লাস্টিকের ব্যবহার যে হারে বৃদ্ধি পেয়েছে, ঠিক সেই হারে কমাতে হবে। প্লাস্টিকের কারণে প্রাকৃতিক ও স্বাস্থ্যগতভাবে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। প্লাস্টিক মানুষের খাদ্যচক্রে ঢুকে যাচ্ছে। সমুদ্রে প্লাস্টিক ঢুকে পড়ায় সূর্যের কিরণ ঢুকতে পারছে না। ভবিষ্যতের জন্য ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করছে। স্থলভূমিতে প্লাস্টিকের কারণে দূষণের পাশাপাশি নদী–নালা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। প্লাস্টিক, বিশেষ করে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক একেবারেই বন্ধ হওয়া উচিত।
প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধে প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদনকারী ব্যবসায়ী মহলকেও এগিয়ে আসতে হবে বলে মন্তব্য করেন ইশতিয়াক উদ্দীন আহমদ। তাঁর মতে, প্লাস্টিকের ব্যবহারের কারণে এই ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক নিয়ে প্রকল্পের প্রধান ও এসডোর অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রোগ্রাম অফিসার ঋদিতা ফেরদৌস বলেন, একবার ব্যবহার করে যেসব প্লাস্টিক ফেলে দেওয়া হয়, তার ৬০ শতাংশেরই রিসাইকেল বা পুনর্ব্যবহার করা যায় না।
মেলায় বাগেরহাটের রামপালে কারখানায় তৈরি সুপারির খোলের বিভিন্ন পণ্য নিয়ে হাজির হয়েছিলেন ব্রাইট এরেকা লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইমরান হোসেন। কাঠ, বাঁশ, নারিকেল ও কাপড়ের তৈরি পণ্য প্রদর্শন করেন চড়ুইঘরের তানভিরুল করিম। মোহাম্মদ ইবনে হাসান হাড় ও শিংসহ বিভিন্ন জিনিসের তৈরি পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছিলেন।
মেলায় অংশ নেওয়া উদ্যোক্তারা বললেন, প্লাস্টিকের তুলনায় পরিবেশবান্ধব বিভিন্ন পণ্যের দাম কিছুটা বেশি মনে হতে পারে। তবে মনে রাখতে হবে, প্লাস্টিকের সঙ্গে মানুষ স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ি বয়ে নিয়ে যাচ্ছে। পরিবেশবান্ধব পণ্য কিনলে স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে আর ভাবতে হবে না।
শনিবার ছুটির দিন হওয়ায় সকালে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মেলায় উপস্থিত ছিলেন মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকে কর্মরত প্রতিভা রানী দাস। তিনি বলেন, এ ধরনের একটি মেলার খুব প্রয়োজন ছিল। পরিবেশবান্ধব পণ্য ব্যবহার করে প্লাস্টিক যে দৈনন্দিন জীবন থেকে হটানো সম্ভব, তা বোঝার জন্যও এ ধরনের মেলার প্রয়োজনীয়তা অনেক। এতে মানুষ সচেতন হবে।
মেলায় আসা ক্রেতারাও জানান, তাঁরাও হাতের কাছে বিকল্প পেলে আর প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহার করবেন না। সবার কণ্ঠেই ছিল এক সুর—চাইলে প্লাস্টিকের পণ্য ব্যবহার না করেও দৈনন্দিন জীবন কাটানো যায়। এর জন্য প্রয়োজন সচেতনতা।
ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের তৈরি একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক পণ্যের বিকল্প পণ্য প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে জাতীয় পর্যায়ে প্রথমবারের মতো দুদিনব্যাপী এ মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (এসডো) এ মেলার আয়োজন করেছে। মেলায় অংশ নেওয়া উদ্যোক্তারা তাঁদের তৈরি পরিবেশবান্ধব পণ্যের প্রচারে সরকারের কাছে সহায়তা চেয়েছেন।
মেলায় ঘুরে দেখা গেল, মেলায় আগতরা চা–কফি খাচ্ছেন কাগজের কাপে। রয়েছে গরুর হাড়ের খোঁপার কাটা, মহিষের শিং দিয়ে তৈরি ভিজিটিং কার্ড হোল্ডার, বিভিন্ন ফলের বিচি দিয়ে তৈরি পেপার ওয়েট, আর সুপারি গাছের খোলের টিস্যু বক্স। টিস্যু বক্সের পাশাপাশি নানা তৈজসপত্র এমনকি বিয়ে, জন্মদিনসহ যেকোনো অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্র বানানো যাবে এ খোল দিয়ে।
মেলায় উদ্যোক্তারা এনেছেন বাঁশের স্ট্র। সেটি দিয়ে পান করা কোনো সমস্যাই নয়। বাঁশ, বেত ও নারকেলের মালা দিয়ে তৈরি পণ্য, পুরোনো কাপড় আবার ব্যবহার করে তৈরি নতুন শাড়ি বা অন্য কোনো পণ্য এবং হাতির দাঁত, পশুর হাড়, কাঠ, ঝিনুক ও শামুকের তৈরি গয়না কাগজের প্যাকেটে মুড়ে ক্রেতার হাতে দেওয়া হচ্ছে। দাঁতের যত্নে প্লাস্টিকের ব্রাশের পরিবর্তে মেসওয়াকও যে ব্যবহার করা যায় তা–ও জানালেন একজন উদ্যোক্তা।
আজ সকালে সাবেক সচিব ও এসডোর সভাপতি সৈয়দ মার্গুব মোর্শেদ আনুষ্ঠানিকভাবে মেলার উদ্বোধন করেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত ৩০ বছর ধরে প্লাস্টিক বন্ধে কাজ করছি। পরিবেশবান্ধব বিকল্প পণ্য মানুষের সামনে থাকতে হবে। প্লাস্টিকের বিকল্প আছে তা মানুষকে বোঝাতে হবে। মানুষকে সচেতন করার জন্যই এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। দেশকে প্লাস্টিকমুক্ত করতে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।’
মেলায় সৈয়দ মার্গুব মোর্শেদ অন্য অতিথিদের সঙ্গে নিয়ে দৈনিক পত্রিকায় মোড়ানো এসডোর তৈরি কাপড়ের ব্যাগের উদ্বোধন করেন। বাজার থেকে মাছ–মাংস কিনে এসব ব্যাগে ভরে বাড়ি আনাসহ নানা কাজে ব্যবহার করা যাবে।
এসডোর নির্বাহী পরিচালক সিদ্দিকা সুলতানা বলেন, ‘পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধে আইন আছে। আইন মানতেই হবে। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) মাধ্যমে এসডো হাইকোর্টে রিট করেছিল। রিটের পর সরকার ২০২৩ সালের মধ্যে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বন্ধে গেজেট প্রকাশ করেছে। পরিবেশ অধিদপ্তর গত বছর তিন বছর মেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে। সরকার অবশ্যই নির্ধারিত সময়েই একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বন্ধের উদ্যোগ নেবে।’
সিদ্দিকা সুলতানা বলেন, আগে যখন পলিথিন ব্যাগ ছিল না, তখন কিন্তু মানুষের ঠিকই চলত। প্লাস্টিকের আগ্রাসনে আগে ব্যবহার করা পাট, কাঠ বা পরিবেশবান্ধব অন্যান্য পণ্যকেই প্লাস্টিকের বিকল্প বলা হচ্ছে।
মেলায় বন অধিদপ্তরের সাবেক প্রধান বন সংরক্ষক ইশতিয়াক উদ্দীন আহমদ বলেন, প্লাস্টিকের ব্যবহার যে হারে বৃদ্ধি পেয়েছে, ঠিক সেই হারে কমাতে হবে। প্লাস্টিকের কারণে প্রাকৃতিক ও স্বাস্থ্যগতভাবে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। প্লাস্টিক মানুষের খাদ্যচক্রে ঢুকে যাচ্ছে। সমুদ্রে প্লাস্টিক ঢুকে পড়ায় সূর্যের কিরণ ঢুকতে পারছে না। ভবিষ্যতের জন্য ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করছে। স্থলভূমিতে প্লাস্টিকের কারণে দূষণের পাশাপাশি নদী–নালা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। প্লাস্টিক, বিশেষ করে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক একেবারেই বন্ধ হওয়া উচিত।
প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধে প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদনকারী ব্যবসায়ী মহলকেও এগিয়ে আসতে হবে বলে মন্তব্য করেন ইশতিয়াক উদ্দীন আহমদ। তাঁর মতে, প্লাস্টিকের ব্যবহারের কারণে এই ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক নিয়ে প্রকল্পের প্রধান ও এসডোর অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রোগ্রাম অফিসার ঋদিতা ফেরদৌস বলেন, একবার ব্যবহার করে যেসব প্লাস্টিক ফেলে দেওয়া হয়, তার ৬০ শতাংশেরই রিসাইকেল বা পুনর্ব্যবহার করা যায় না।
মেলায় বাগেরহাটের রামপালে কারখানায় তৈরি সুপারির খোলের বিভিন্ন পণ্য নিয়ে হাজির হয়েছিলেন ব্রাইট এরেকা লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইমরান হোসেন। কাঠ, বাঁশ, নারিকেল ও কাপড়ের তৈরি পণ্য প্রদর্শন করেন চড়ুইঘরের তানভিরুল করিম। মোহাম্মদ ইবনে হাসান হাড় ও শিংসহ বিভিন্ন জিনিসের তৈরি পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছিলেন।
মেলায় অংশ নেওয়া উদ্যোক্তারা বললেন, প্লাস্টিকের তুলনায় পরিবেশবান্ধব বিভিন্ন পণ্যের দাম কিছুটা বেশি মনে হতে পারে। তবে মনে রাখতে হবে, প্লাস্টিকের সঙ্গে মানুষ স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ি বয়ে নিয়ে যাচ্ছে। পরিবেশবান্ধব পণ্য কিনলে স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে আর ভাবতে হবে না।
শনিবার ছুটির দিন হওয়ায় সকালে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মেলায় উপস্থিত ছিলেন মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকে কর্মরত প্রতিভা রানী দাস। তিনি বলেন, এ ধরনের একটি মেলার খুব প্রয়োজন ছিল। পরিবেশবান্ধব পণ্য ব্যবহার করে প্লাস্টিক যে দৈনন্দিন জীবন থেকে হটানো সম্ভব, তা বোঝার জন্যও এ ধরনের মেলার প্রয়োজনীয়তা অনেক। এতে মানুষ সচেতন হবে।