ক্রিকেট দুনিয়া বেশ ব্যস্ত সময়টাই পার করে দিল। টি-২০ বিশ্বকাপ ক্রিকেট নিয়ে মেতে থাকা দর্শক আজ শেষ বার চোখ রাখবে খুদে সংস্করণের টুর্নামেন্টের ফাইনাল মঞ্চে। ইল্যান্ডের মুখোমুখি হবে পাকিস্তান। খেলা শুরু হবে দুপুর ২টায়।
বাংলাদেশ যতটুকু সময় অস্ট্রেলিয়ার মঞ্চে টিকে ছিল, সবার নজর ছিল সাকিব, তাসকিন, লিটন দাস, সৌম্যদের নিয়ে। সেই সঙ্গে পাকিস্তান, ভারতও ছিল বাংলাদেশের ক্রিকেট দর্শকদের পছন্দের তালিকায়। দুই দলের বিপক্ষে বাংলাদেশের লড়াই বিতর্ক ছড়িয়েছে। আম্পায়ার হোক কিংবা খেলোয়াড়দের কোনো বিষয় হোক, বাংলাদেশের ক্রিকেট দর্শকদের ব্যথা দিয়েছে। তবে পাকিস্তান সমর্থকদের জন্য বড় সুখবর ছিল ভারতের বিদায়। এটাও ঠিক যে, ভারত বিদায় নেওয়ায় বড় একটা দর্শক টিভির পর্দা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। আজকের ফাইনালে সবার চোখ থাকবে। উপমহাদেশে ট্রফি আসবে, নাকি ইউরোপে ট্রফি নিয়ে যাবে—সেই লড়াই দেখার অপেক্ষায় টিভির সামনে কোটি কোটি দর্শক।
আজ ফাইনাল মহারণের মধ্যে বাগড়া দিচ্ছে বৃষ্টি। মেলবোর্নের আকাশ মেঘাচ্ছন্ন বললেও ভুল হবে। কারণ গতকাল ঢাকা থেকে যোগাযোগ করা হলে সেখান থেকে জানা গেছে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে। মেলবোর্নে যারা খেলা কাভার করতে গিয়েছেন, তারা বৃষ্টিতে আটকা পড়েছেন। বৃষ্টির ধারা দেখে শঙ্কিত অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশের সাংবাদিকেরা। আজ আদৌ ফাইনাল ম্যাচ গড়াতে পারবে কি না। এই আশঙ্কা একেবারে উড়িয়েও দেওয়া যাচ্ছে না। তাই সবাই ধরেই নিচ্ছেন, বৃষ্টিই এখন সবচেয়ে বড় প্রতিপক্ষ। রোববার ৯৫ শতাংশ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা, ১৫ থেকে ২৫ মিলিমিটার বৃষ্টির শঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না আবহাওয়াবিদেরা। যদি খেলা না হয়, রিজার্ভ ডে রয়েছে। আজ খেলা না হলে আগামীকাল সোমবার রিজার্ভ ডেতে খেলা হবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হচ্ছে, রিজার্ভ ডেতেও বৃষ্টির শঙ্কা। ১০ ওভার করে ম্যাচ সম্পন্ন করতে না পারলে যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন ঘোষণার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে আইসিসি।
এদিকে যুগ্মভাবে ট্রফি নিতে চান না বাটলার বা বাবর কেউই। ইংলিশ অধিনায়ক জশ বাটলার তো এমন সম্ভাবনা কল্পনাই করতে পারছেন না। ফাইনালের আগে জানিয়েছেন সম্ভাবনার গল্প, জানান দিয়েছে আত্মবিশ্বাসের সুর। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, আমাদের দল বেশ ভালো। যেভাবে খেলোয়াড়েরা পারফর্ম করছে, তা অবশ্যই দুর্দান্ত। আমার খেলোয়াড়েরা যদি তাদের সেরাটা দিতে পারে, তাহলে আমাদের হারানো যে কোনো দলের জন্যই কঠিন হবে। আমরা যেকোনো প্রতিপক্ষের বিপক্ষে অবিশ্বাস্য রকমের বিপজ্জনক দল হতে পারি। তার প্রমাণ ক্রিকেট দুনিয়া দেখেছে।’
জশ বাটলারের এমন আত্মবিশ্বাসের সুর অবশ্য কোনো বাণী নয়। সেমিফাইনালে তারা রীতিমতো ভারতকে বিধ্বস্ত করেছে। এমন পারফরম্যান্সের কারণে ইংল্যান্ড তাই যেকোনো প্রতিপক্ষের জন্যই এক অশনিসংকেত।
পাকিস্তানকেও একেবারে হেলায় দেখার সুযোগ নেই। শুরুটা বাজে হলেও দুর্দান্তভাবে টুর্নামেন্টে ফিরেছে তারা। তর্কযোগ্যভাবে বিশ্বের সেরা পেস বোলিং লাইনআপ পাকিস্তানের। তাদের সব ক্রিকেটার ক্রমেই ছন্দে ফিরেছেন। শাহিন আফ্রিদি দারুণ বোলিং করেছেন শেষ তিন ম্যাচে।
যে ওপেনিং জুটির ফর্ম নিয়ে এত চিন্তার বিষয় ছিল, সেই বাবর-রিজওয়ান সেমির ম্যাচে শতরানের জুটি গড়েছেন। এবারের টুর্নামেন্টে নিজেদের প্রথম ফিফটিও পেয়েছেন এই ম্যাচেই। এছাড়া টুর্নামেন্টের মাঝপথে মোহাম্মদ হারিসের সংযুক্তি পাকিস্তানের টপ অর্ডারে বাড়তি শক্তি যোগ করেছে। সব মিলিয়ে ইংল্যান্ডের জন্য পাকিস্তান মোটেই সহজ প্রতিপক্ষ নয়।