ডলার সংকট কাটাতে আমদানিতে কড়াকড়ি আরোপ করেছে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক। আমদানি নিয়ন্ত্রণের কারণে ধারবাহিকভাবে বাণিজ্য ঘাটতি কমছে।
এপ্রিল মাস শেষে দেশের বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়ে এক হাজার ৫৭৩ কোটি ডলারে নেমে এসেছে। ২০২২ সালের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল দুই হাজার ৭৬৯ কোটি ডলার। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে এই ঘাটতি কমেছে ৪৩ দশমিক ১৯ শতাংশ।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে।
তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে চলতি হিসাবের লেনদেন ভারসাম্যের ঘাটতিও কমে ৩৭৭ কোটি ডলারে এসেছে। ২০২১-২২ অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল এক হাজার ৫৪৯ কোটি ডলার। এ হিসাবে কমেছে এক হাজার ১৭২ কোটি ডলার।
এদিকে চলতি অর্থবছরের গত ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৫৭৩ কোটি ডলার। এক বছর আগে গত মার্চে যেখানে ঘাটতি ছিল দুই হাজার ৭৬৯ কোটি ডলার। এ হিসাবে ঘাটতি কমেছে এক হাজার ১৯৬ কোটি ডলার (১০ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন) ডলার, শতকারা হিসেবে কমেছে ৪৩ দশমিক ১৯ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের গত ১০ মাসে আমদানি বাবদ ব্যয় হয়েছে পাঁচ হাজার ৮৭৮ কোটি ডলার, যা গত ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসের তুলনায় ১৪ দশমিক ৪০ শতাংশ কম। গত অর্থবছরের আলোচিত সময়ে আমদানি খাতে ব্যয় ছিল ছয় হাজার ৮৬৭ কোটি ডলার।
এছাড়া মার্চ পর্যন্ত আমদানি ব্যয় ছিল পাঁচ হাজার ৩৯৪ কোটি ডলার। এ হিসাবে এক মাসের ব্যবধানে আমদানি ব্যয় বেড়েছে ৪৭৩ কোটি ডলার।
চলতি অর্থবছরের গত ১০ মাসে রপ্তানি খাতে আয় হয়েছে চার হাজার ৯৭ কোটি ডলারের, যা গত অর্থবছরের আলোচিত সময়ের চেয়ে ৫ দশমিক ০৬ শতাংশ বেশি। গত ২০২১-২২ অর্থবছরের ১০ মাসে রপ্তানি থেকে আয় এসেছিল তিন হাজার ৯৩১ কোটি ডলার।
রেকর্ড ৩৩ দশমিক ২৪ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি এবং ১৮ দশমিক ৬৯ বিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাব ভারসাম্যে ঘাটতি নিয়ে শুরু হয়েছিল চলতি অর্থবছর। এরপর নানা মুখী উদ্যোগে বাণিজ্য ঘাটতি কমে আসার প্রভাবে এসময়ে বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যের ঘাটতিও উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কমেছে। চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকা মানে নিয়মিত লেনদেনে কোনো ঋণ করতে হয় না দেশকে। আর ঘাটতি থাকলে ঋণ নিয়ে তা পূরণ করতে হয়।