এবারের বন্যায় সিলেটসহ ১৫ জেলায় ৬ হাজার ৬৬২টি খামার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার আর্থিক মূল্য ৩৩১ কোটি ৪৩ হাজার ৭৫০ টাকা। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সিলেট বিভাগের ৪ জেলায় ৫৫৯০টি খামার। ফলে ঈদুল আজহাকে ঘিরে এবার এখনও জমে ওঠেনি পশুর হাট। বন্যায় আক্রান্ত জেলাগুলোতে গবাদি পশু নিয়ে বিপদে পড়েছেন খামারিরা। বেড়ে গেছে পশুখাদ্যের দামও। ফলে কোরবানির ঈদে গবাদি পশুর দাম বাড়তে পারে।
আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘পদ্মা সেতুর সম্ভাবনা: দেশীয় পশুতে কোরবানি, খামারিদের সমস্যা ও করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে এ তথ্য জানানো হয়। বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস এসোসিয়েশনের (বিডিএফএ) সহায়তায় সেমিনারের আয়োজন করে ফিশারিজ এন্ড লাইভস্টক জার্নালিস্টস ফোরাম (এফএলজেএফ)। এফএলজেএফ’র সভাপতি এম. এ. জলিল মুন্না রায়হানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। বক্তব্য রাখেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদা, বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, কেন্দ্রীয় ভেটেরিনারী হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. শফিউল আহাদ সরদার, বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস এসোসিয়েশনের (বিডিএফএ) সভাপতি মোহাম্মদ ইমরান হোসেন, এফএলজেএফ’র সধারণ সম্পাদক তরিকুল ইসলাম সুমন ও বিডিএফএ’র সাধারণ সম্পাদক শাহ মোহাম্মদ এমরান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এফএলজেএফ’র অর্থ সম্পাদক কাওসার আজম।মূল প্রবন্ধে বলা হয়, দেশে কোরবানী যোগ্য গবাদিপশুর অভাব নেই। কিন্তু অঞ্চলভেদে কোরবানির পশুর প্রাপ্যতা ও চাহিদার মধ্যে ফারাক রয়েছে। অতিরিক্ত মজুদ থাকা অঞ্চল থেকে ঘাটতিতে থাকা অঞ্চলের হাটে গবাদিপশু নিয়ে যাওয়া সহজ করতে হবে। এ জন্য সড়ক যানজট ও চাঁদাবাজমুক্ত করার সুপারিশ করা হয়।
অনুষ্ঠানে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, এ বছর কোরবানির চাহিদার চেয়ে অতিরিক্ত পশু প্রস্তুত আছে। এবার কোরবানিযোগ্য পশুর সংখ্যা এক কোটি ২১ লাখ ২৪ হাজার ৩৮৯। কোরবানির জন্য কোনো সংকট বা আশঙ্কার কারণ নেই। তিনি বলেন, সিলেট-সুনামগঞ্জ অঞ্চলে সাম্প্রতিক বন্যার কারণে গবাদি পশু কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কোরবানির সময় যাতে ওই অঞ্চলে দেশের অন্য অঞ্চল থেকে পশু যেতে পারে, সে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের জন্য প্রণোদনা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। সরকার সব সময় খামারিদের পাশে থাকবে। পদ্মা সেতুর সুফল তুলে ধরে শ ম রেজাউল করিম বলেন, এখন দক্ষিণাঞ্চল থেকে খুব দ্রুত পশুবাহি গাড়ি ঢাকায় প্রবেশ করতে পারছে। কোনো যানজট নেই। চাঁদাবাজি নেই। পদ্মা সেতুর কারণে এবার ঈদে খামারিরা লাভবান হবেন। অর্থনীতির নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে দিয়েছে পদ্মা সেতু।
বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস এসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ ইমরান হোসেন ডেইরি উন্নয়ন বোর্ড গঠন, গোখাদ্যের মূল্য কমানো, উন্নত জাতের পশু আমদানির সুযোগ ও বিদ্যুৎ বিল কমানোসহ নানা দাবি তুলে ধরেন। গোখাদ্যের মূল্যবৃদ্ধি ও বন্যায় প্রাণিসম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হওয়ায় কোরবানির ঈদে গবাদি পশুর দাম বাড়তে পারে বলে মনে করেন তিনি।